আন্দোলনে ডুজা সদস্যসহ ক্যাম্পাস সাংবাদিকদের অবদান অসামান্য: সাদিক কায়েম

তুরস্কের দৈনিক ইয়েনি সাফাককে

তুরস্কের দৈনিক ইয়েনি সাফাক কার্যালয়ে সাদিক
তুরস্কের দৈনিক ইয়েনি সাফাক কার্যালয়ে সাদিক  © ইয়েনি সাফাক

চব্বিশের জুলাইয়ে সংঘটিত ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে মাঠপর্যায়ের তথ্য সংগ্রহ ও প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক সাংবাদিকরা। বিশেষ করে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা) ও মোবাইল সাংবাদিকদের অসামান্য অবদান ছিল—এমনটাই জানিয়েছেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়কারী ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির ঢাবি শাখার তৎকালীন সভাপতি সাদিক কায়েম।

গত ২৫ জুলাই তুরস্কের প্রভাবশালী দৈনিক ইয়েনি সাফাককে দেওয়া ‘ইয়েনি সাফাক এক্সক্লুসিভ: বাংলাদেশি স্টুডেন্ট লিডার শাদিক কায়েম স্পিকস অন রেভলিউশন দ্যাট এন্ডেড শেখ হাসিনাস ১৬-ইয়ার ডিকটেটরশিপ’ শীর্ষক এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।

সাক্ষাৎকারটির এক পর্যায়ে সাদিক কায়েমকে প্রশ্ন করা হয়, ‘আন্দোলনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাঁক বা টার্নিং পয়েন্টগুলো কী ছিল? চাপের মধ্যে নেতৃত্ব কীভাবে মানিয়ে নিয়েছিল?’ এর জবাবে সাদিক কায়েম বলেন, হামলার পর—বিশেষ করে ১৮ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ইন্টারনেট বিচ্ছিন্নতা ও কারফিউয়ের মধ্যে—যেভাবে ভয় ও হতাশা ছড়িয়ে পড়েছিল, তা সত্ত্বেও আমরা হাল ছাড়িনি। এই সংকটময় সময়ে পুরো সমন্বয়ের দায়িত্ব আমার কাঁধেই এসে পড়ে। আমাকে প্রতিদিনের কর্মসূচি, সংবাদ বিজ্ঞপ্তি এবং অফলাইন নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে বিচ্ছিন্ন সমন্বয়কদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়েছে। প্রথম স্তরের নেতৃত্ব, দ্বিতীয় স্তরের নেতৃত্ব এবং বিভিন্ন অংশীজন—যেমন সিভিল সোসাইটির সদস্য, অধিকারকর্মী এবং তৃণমূল পর্যায়ের কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় করতেও আমাকে এগিয়ে আসতে হয়েছে।

তিনি বলেন, এই আন্দোলন নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম এবং মাহফুজ আলমের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। এসএম ফরহাদ, মহিউদ্দিন খান, মনজুরুল ইসলাম, জাহিদুল ইসলাম, সিবগাতুল্লাহ, শরফুদ্দিন, আলী আহসান জুনায়েদ, রাফে সালমান রিফাত এবং মেহেদীর মতো ব্যক্তিত্বেরা প্রতিরোধ আন্দোলনের গতি ধরে রাখতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ড. মির্যা গালিব পুরো আন্দোলনে অনিবার্য নেতৃত্ব ও কৌশলগত দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

সাদিক কায়েম প্রবাসী সাংবাদিকদের অবদান তুলে ধরে বলেন, আল জাজিরার সাংবাদিক জুলকারনাইন সায়ের, ইলিয়াস হোসাইন এবং পিনাকী ভট্টাচার্য এই তিনজনের ভূমিকা আন্তর্জাতিক মহল ও দেশি-বিদেশি বাংলাদেশি জনগণের কাছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পৌঁছে দিতে অপরিহার্য ছিল। প্রত্যেকেই তাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে আপসহীন ভূমিকা রেখেছেন, দেশকে সহায়তা করেছেন এবং কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়েছেন। তাদের এই নিষ্ঠা ও অবদান প্রশংসনীয়।

ক্যাম্পাস সাংবাদিক এবং মোবাইল জার্নালিস্টদের অবদান স্বীকার করে সাদিক কায়েম ইয়েনি সাফাককে বলেন, সমানভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল বিশ্ববিদ্যালয়-ভিত্তিক সাংবাদিকরা, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (ডুজা) সদস্য এবং মোবাইল সাংবাদিকরা। যাদের মাঠপর্যায়ের রিপোর্টিং আন্দোলনের ঘটনাপ্রবাহ নথিবদ্ধ ও দেশজুড়ে প্রচার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তাদের প্রচেষ্টা তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করতে, জনসমর্থন জাগাতে এবং রাষ্ট্রীয় প্রচারণার মোকাবেলা করতে অত্যন্ত কার্যকর ছিল।

 


সর্বশেষ সংবাদ