বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত হন সোহরাওয়ার্দী কলেজে ১৫ শিক্ষার্থী

সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ
সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ  © সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের ন্যায় পুলিশ ছাত্রলীগ-আওয়ামীলীগের হামলায় সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। বিভিন্ন বিভাগ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের সমন্বয়কদের দেওয়া তালিকা থেকে এ তথ্য জানা যায়। শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন বলে জানান তারা। 

জানা যায়, গত ৩ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করে। এর ধারাবাহিকতায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেয়।

পরে ১৫ জুলাই ছাত্রলীগ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা করে। কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে ভিসি চত্ত্বর অভিমুখে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে গেলে ছাত্রলীগের হামলায় আহত হন ৫০ জন শিক্ষার্থী। আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লে সবার সাথে অংশগ্রহণ নিয়ে সোহরাওয়ার্দী কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পড়ুয়া ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হন।

আহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে সোহরাওয়ার্দী কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থীদের। এ বিভাগের আহত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা ৬ জন। আহত সবাই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহতদের মধ্যে মো নাহিদ হাসান, মো. তুহিন আহমেদ, মো. জুয়েল আজম, মো. নাহিদ, আজমীর ও কাওছার রয়েছেন।

সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের আহত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ জন। এ বিভাগের অধ্যয়নরত ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আব্দুল্লাহ মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে বর্তমানে সিএমএইচ (সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে) নিউরো সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়াও বাকী দুজন দেলোয়ার হোসেন ও  মো. শাহরিয়ার সজল গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। তবে চিকিৎসা শেষে তারা বর্তমানে বাসায় অবস্থান করছেন। 

এছাড়াও উদ্ভিদবিদ্যা, হিসাববিজ্ঞান, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন ও ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের একজন করে শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীও আহত হয়েছেন। উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অনার্স ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী লাভলু হোসেনকে পুলিশ লাঠিচার্জ করলে তার বাম হাতের কনুইয়ের হাড় স্থানচ্যুত হয়ে যায়। 

গত ১৮ জুলাই মিরপুরে পুলিশ ও দুর্বৃত্তদের হামলায় হিসাববিজ্ঞান বিভাগের অনার্স ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী সোহেলের পা ভেঙ্গে যায় এবং একাদশ শ্রেণির আরিয়ান রেজাও পুলিশের হামলায় আহত হন। পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী রকুন শাহ আন্দোলন চলাকালে যাত্রাবাড়ীতে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। রসায়ন বিভাগের অনার্স ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম রায়হান, ইসলামিক স্টাডিস বিভাগের অনার্স ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী লিখন হোসেনও গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের তালিকা প্রকাশের সময় দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, সকল বিভাগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা এ তালিকাটি করেছি। ইতিমধ্যে আহতদের বিভাগ থেকে বিভিন্ন সহায়তা দেওয়া হয়েছে পাশাপাশি প্রশাসনিকভাবেও কোন ধরনের সহযোগিতা দেওয়া যায় কিনা সে বিষয়েও আমাদের চেষ্টা চলমান রয়েছে।


সর্বশেষ সংবাদ