গ্রেপ্তার দেখানো হলো ‘তুলে নেওয়া’ ছাত্রদল নেতা নাহিদকে

সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ
সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ  © সংগৃহীত

গতকাল বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ছাত্র ঐক্যের কনভেনশন চলাকালে নরসিংদী জেলা ছাত্রদল সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) সকাল ৯টার দিকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি সাংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি খোকন চন্দ্র সরকার। তিনি জানান, ঢাকার শাহবাগ থানাধীন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সামনে থেকে নরসিংদী ডিবি পুলিশ গ্রেপ্তার করে। 

পুলিশ জানিয়েচে নরসিংদী জোড়া হত্যা মামলায় জেলা ছাত্রদল সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে একটি বিদেশি  পিস্তল ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়। 

গোয়েন্দা পুলিশের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ছাত্রদলের বহিষ্কৃত নেতা সাদেকসহ জোড়া হত্যা মামলায় এজাহার নামিয় আসামি ছিলেন জেলা ছাত্রদল সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তিনি গা ঢাকা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার ঢাকার ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউট তথা শাহবাগ এলাকায় অবস্থান করছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে নিয়ে অভিযানে নামে পুলিশ। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নরসিংদী মডেল থানাধীন চিনিশপুর সাকিনে খায়রুল কবির খোকনের বাড়ির ২য় তলার উত্তর পাশের বাথরুমের ফলস ছাদের পশ্চিম পাশে লুকানো অবস্থায় একটি বিদেশি পিস্তল ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়।

আরও পড়ুন: ছাত্র কনভেনশন থেকে ছাত্রদল নেতাকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে ছাত্র ঐক্যের কনভেনশন চলাকালে নাহিদকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে আটক করে। পরে তাকে চোখ বেঁধে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। ওই সময় তার সঙ্গে ছাত্রদলের দুই কর্মী ছিলেন। তাদেরকেও নিয়ে আসে। পরে তাদেরকে মাধবদী এসে ছেড়ে দেয়। 

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি খোকন চন্দ্র সরকার বলেন, জোড়া হত্যা মামলায় পলাতক আসামি ছিলেন জেলা ছাত্রদল সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে খায়রুল কবির খোকনের বাড়ির ২য় তলার উত্তর পাশের বাথরুমের ফলস ছাদের পশ্চিম পাশে লুকানো অবস্থায়  একটি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার হয়। তার বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা রয়েছে।

এদিকে, ছাত্রদল সভাপতিকে আটকের পর পর তাৎক্ষনিক গ্রেপ্তারে বিষয়টি প্রকাশ করেনি পুলিশ। তাই এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক বিরোধীদলীয় কোনো নেতাকর্মীকে আটক এবং হদিস না দেয়াটা ভয়াবহ অমানবিক ও দস্যুবৃত্তিমূলক কাজ। আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতায় থেকে এ ধরনের ঘটনাকে একটি সংস্কৃতিতে পরিণত করেছে।

এর আগেও তাকে অপহরণ করে দীর্ঘ নয় মাস গুম করে রেখেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে অস্ত্র উদ্ধার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয় বলে অভিযোগ করেন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।


সর্বশেষ সংবাদ