৬৭ শতাংশ স্কুলপড়ুয়া মোবাইল ও ইলেক্ট্রনিক গেমে আসক্ত

এক বছরে ৬৭ শতাংশ শিক্ষার্থী মোবাইল, ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ও বিভিন্ন গেমে আসক্ত হয়ে পড়েছে
এক বছরে ৬৭ শতাংশ শিক্ষার্থী মোবাইল, ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ও বিভিন্ন গেমে আসক্ত হয়ে পড়েছে  © সংগৃহীত

করোনাকালে দেশের স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে গত এক বছরে ৬৭ শতাংশ শিক্ষার্থী মোবাইল, ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ও বিভিন্ন গেমে আসক্ত হয়ে পড়েছে। এর ফলে ঘরবন্দি হয়ে থাকা ও বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তির থাকার কারণে স্কুলপড়ুয়াদের মধ্যে অবসাদগ্রস্ততাসহ বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। দেশের ২১টি জেলায় বিভিন্ন মাধ্যমের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পড়ুয়া ১ হাজার ৮০৩ শিক্ষার্থীর ওপর পরিচালিত এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।

ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্স বিশ্ববিদ্যালয়, ইউএসটিসি ও সাদার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের পরিচালিত এই গবেষণায় দেখা যায়, ৬৭ ভাগ শিক্ষার্থী মোবাইলে সময় ব্যয় করছে। তাছাড়া ৯ ভাগ শিক্ষার্থী কম্পিউটার স্ক্রিনে ও ৮ ভাগ ট্যাবে দিনের অধিকাংশ সময় ব্যয় করে।

আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রকাশনা সংস্থা উইলি- এর ‘হেলথ সায়েন্স রিপোর্ট’ জার্নালে প্রকাশ করা হয়েছে এই গবেষণা প্রতিবেদন।

গেমে আসক্ত স্কুল শিক্ষার্থীরা|| টিডিসি ফটো।

 

গবেষণার তথ্যে দেখা যায়, ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারকারী ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী কার্টুন, নাটক ও চলচ্চিত্র দেখার কাজে, ২৭ শতাংশ শিক্ষার্থী সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে এবং ১৭ শতাংশ শিক্ষার্থী গেম খেলার জন্য ব্যবহার করছে। এসব ডিভাইস ব্যবহারের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে ইংরেজি মাধ্যমের ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে। সবচেয়ে কম দেখা গেছে মাদ্রাসা ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে।

গবেষণায় দেখা যায়, ২০১৮-১৯ সালে যেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের শারীরিক সমস্যা (ডায়রিয়া, চুলকানির সমস্যা, পেট ব্যথা, জ্বর ও সর্দি) সবচেয়ে বেশি ছিল, সেখানে গত ২০২০-২১ সালে মাথাব্যথা, দৃষ্টিশক্তি জটিলতা, ঘুমের সমস্যা, বিষণ্নতা ও মেজাজ খিটখিটে হওয়ার মতো জটিলতায় বেশি ভুগছে শিক্ষার্থীরা।

গবেষকদলের অন্যতম সদস্য ড. অলক পাল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘অল্প বয়সে মোবাইল বা ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের ওপর আসক্তি শিশুদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। এসব সমস্যা যদি দীর্ঘ মেয়াদি হয় তবে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের একটি বড় অংশের জন্য তা আশঙ্কার বিষয়।

তিনি আরও বলেন, এই সমস্যাগুলো দীর্ঘায়িত হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে। শিশুদের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের প্রতি আসক্তি কমানোর জন্য পারিবারিকভাবে বিভিন্ন উদ্যোগের প্রয়োজন।

গবেষণায় মুখ্য তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের শিক্ষক ড. এস এম মাহবুবুর রশিদ ও ইন্সটিটিউট অব স্ট্যাটিস্টিক্যাল রিসার্চের শিক্ষক নাসরিন লিপি, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ডায়বেটিস ও হরমোন রোগ বিভাগের প্রধান ডা. ফারহানা আকতার, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. অলক পাল এবং জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের ড. আদনান মান্নান। সহযোগী গবেষক ছিলেন জান্নাতুল মাওয়া, এমা বনিক, ইয়াসমিন আকতার, আমিনা জাহান, নাভিদ মাহবুব, মফিজুর রহমান শাহেদ এবং জোবায়ের ইবনে দ্বীন।

গবেষণা পরিচালনা সহায়তায় ছিল চিটাগং ইউনিভার্সিটি রিসার্চ অ্যান্ড হায়ার স্টাডিজ সোসাইটি, দৃষ্টি চট্টগ্রাম এবং ডিজিজ বায়োলজি অ্যান্ড মলিকুলার এপিডেমিওলজি রিসার্চ গ্রুপ চট্টগ্রাম।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence