জন্ম থেকেই হাত-পা নেই, মুখে ভর করে লিখে পিইসি পরীক্ষা

  © সংগৃহীত

দুই হাত-পা জন্ম থেকেই নেই, তাই মুখের ওপর ভর করে লিখেই এবার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা দিচ্ছেন শিক্ষার্থী।

রোববার (১৯ নভেম্বর) প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা কেন্দ্রে গিয়ে ভিন্ন সক্ষমতার এমন অনন্য দৃশ্য দেখা গেছে।

নিজের সক্ষমতার প্রতি অগাধ শ্রদ্ধাশীল এই অদম্য শিক্ষার্থীর নাম লিতুন জিরা। তিনি যশোরের মনিরামপুর উপজেলার শেখপাড়া খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে। এবার উপজেলার খানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিইসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন তিনি।

পড়ুন: পেঁয়াজ ২৮০ টাকা, এই হচ্ছে দিন বদলের সনদ: নুরুল হক

জানা গেছে, আত্মনির্ভরশীলতায় শ্রদ্ধাশীল এ শিক্ষার্থীকে নিজেকে সমাজের বোঝা হতে দিতে চান না। তাই দুই হাত-পা ছাড়া জন্ম নেয়া লিতুন জিরা মুখ দিয়ে লিখেই মেধার স্বাক্ষর রাখছেন। লেখাপড়া শিখে মানুষের মতো মানুষ হয়ে আরও ১০ জনের মতো আত্মনির্ভশীল হতে চায় সে।

লিতুন জিরার সাথে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক দিন আগে প্রিয় দাদু ভাই মারা যাওয়ায় মনে কষ্ট নিয়েই পরীক্ষা দিচ্ছেন।

পড়ুন: ৪৫ বছরে নবম শ্রেণিতে পরীক্ষা দিচ্ছেন কাউন্সিলর

লেখাপড়ার প্রতি প্রবল আগ্রহী লিতুন জিরা প্রখর মেধাবী। হুইলচেয়ারেই বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতেন। বর্তমানে হুইলচেয়ারটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তার চলাফেরায় বেজায় কষ্ট হচ্ছে। তার বাবা উপজেলার এআর মহিলা কলেজের প্রভাষক।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, লিতুন জিরার বাবা গত ১৭ বছর ধরে ওই কলেজে চাকরি করলেও আজও কলেজটি এমপিওভুক্ত হয়নি। তার বাবাই সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। বাবার বেতন না হওয়ায় হুইলচেয়ার কেনার জন্য বলতেও পারছে না লিতুন জিরা। বছর সাতেক আগে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হুইলচেয়ারটি দেয়া হয়। বর্তমানে একটি হুইলচেয়ারের খুব প্রয়োজন তার।

পড়ুন: উচ্চশিক্ষার যুক্তরাষ্ট্রে সুগম স্নাতকোত্তর

লিতুন জিরার বাবা হাবিবুর রহমান ও মা জাহানারা বেগম বলেন, জন্মের পর থেকেই মেয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন তারা। কিন্তু এখন মেয়ের মেধা তাদের আশার সঞ্চার করছে। লিতুন জিরা আর ১০ জন শিশুর মতো স্বাভাবিকভাবেই খাওয়া-দাওয়া, গোছল সব কিছুই করতে পারে। মুখ দিয়েই লিখে সে। তার চমৎকার হাতের লেখা যে কারও দৃষ্টি কাঁড়বে।

এ সময় জানতে চাইলে লিতুন তার একমাত্র ইচ্ছার কথা জানান। তিনি বলেন, আমার একটিই ইচ্ছা- পরনির্ভর না হয়ে লেখাপড়া শিখে নিজেই কিছু করতে চাই।

পড়ুন: ‘প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বন্ধ নিয়ে ফাইল চালাচালি হচ্ছে’

লিতুন জিরার বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজেদা খাতুন বলেন, ২৯ বছর শিক্ষকতা জীবনে ওর (লিতুন জিরার) মতো মেধাবী শিক্ষার্থীর দেখা পাননি তিনি। এক কথায় সে অসম্ভব মেধাবী। কেবল লেখাপড়ায় না, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও অন্যদের থেকে অনেক ভালো। মডেল টেস্টেও সে কেন্দ্রে প্রথম হয়েছে। এই অদম্য মেধাবীর উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করেন বলে যোগ করেন তিনি।

আরো পড়ুন:

আমি নিজেই মায়ের বিয়ে দিয়েছি: নুহাশ

আল্লাহ আমাকে মাফ করে দিও- বলে কালেমা পড়ে ভাইয়া: ফাইয়াজ

 


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence