স্কুলে ভর্তিতে ৬৩ শতাংশই কোটা

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি  © টিডিসি সম্পাদিত

সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির নতুন নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) জারি করা এ নীতিমালায় আগামী শিক্ষাবর্ষেও ভর্তিতে লটারি পদ্ধতি বহাল রাখা হয়েছে। তবে লটারি-নির্ভর এই প্রক্রিয়া নিয়ে অভিভাবকদের শঙ্কা কমছে না। বিশেষ করে বিভিন্ন কোটার আওতায় ৬৩ শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকায় প্রশ্ন উঠছে ভর্তির সমতা ও ন্যায্যতা নিয়ে।

নীতিমালা অনুযায়ী, সারাদেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন গ্রহণ, ফি পরিশোধ, ডিজিটাল লটারি প্রক্রিয়া ও ফলাফল প্রকাশ—সবকিছুই কেন্দ্রীয়ভাবে অনলাইনের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। প্রতি শ্রেণিতে সর্বোচ্চ ৫৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

মোট শূন্য আসনের মধ্যে ৪০ শতাংশই ক্যাচমেন্ট এরিয়া কোটা। রাজধানীর অনেক অভিভাবক, বিশেষ করে যারা কর্মসূত্রে ঢাকায় অস্থায়ীভাবে থাকেন, এই কোটা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন। তাদের অভিযোগ, এই ব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের জন্য সমান প্রতিযোগিতার সুযোগ কমিয়ে দেয়।

অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) বলছে— ক্যাচমেন্ট কোটা রাখা বাধ্যতামূলক। এতে বিদ্যালয়ে অতিরিক্ত চাপ এড়ানো এবং শিক্ষার্থীদের নিজ এলাকার কাছাকাছি স্কুলে পড়ার সুযোগ নিশ্চিত হয়।

তবে বাস্তবে এই কোটা আবেদনকারীদের জন্য ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্যাচমেন্ট সুবিধা পেতে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের প্রত্যয়নপত্র নিতে হয়, যা ভাড়াটিয়া বাসিন্দাদের জন্য প্রায়ই কঠিন হয়ে পড়ে।

গতবার সন্তানের ভর্তির সময় এ ধরনের সমস্যায় পড়েছেন রাজধানীর বাসাবোতে বসবাসকারী অভিভাবক হাসান আহমেদ। তিনি অভিযোগ করে বলেন, অনলাইনে ঠিকানা ভিন্ন দেখিয়ে ক্যাচমেন্ট সুবিধা নেন। লটারি পাওয়ার পর জালিয়াতি করে টাকা দিয়ে প্রত্যয়নপত্র সংগ্রহ করেন। এভাবে তো আমাদের সন্তানদের পছন্দের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করাতে সমস্যা হয়।’

নীতিমালা অনুযায়ী ক্যাচমেন্ট ছাড়াও বাকি ২৩ শতাংশ কোটা এভাবে ভাগ করা হয়েছে—

  •  মুক্তিযোদ্ধা কোটা: ৫%
  •  শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীন দপ্তর-সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীর সন্তান: ১%
  •  সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী: ১০%
  •  বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থী: ২%
  •  অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর যমজ ও সহোদর ভাইবোন: ৫%

অলিখিতভাবে আরও একটি কোটা প্রচলিত রয়েছে— বদলি হয়ে রাজধানীতে আসা সরকারি কর্মচারীদের সন্তানের জন্য প্রায় ৫ শতাংশ আসন সংরক্ষণ করা হয়। একইসঙ্গে সরকারি হাইস্কুলের শিক্ষক-কর্মচারীদের সন্তানরাও অভ্যন্তরীণ কোটার সুবিধা পান।

ভর্তির তারিখ ও ফি

কেন্দ্রীয়ভাবে ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠানের তারিখ ও সময় এবং আবেদন ফি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ নির্ধারণ করবে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) কেন্দ্রীয়ভাবে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করবে।

ভর্তি কমিটি

সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তি কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য ঢাকা মহানগর ভর্তি কমিটিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালকের নেতৃত্বে, জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসকের (ডিসি) নেতৃত্বে, উপজেলা পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নেতৃত্বে ভর্তি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আবেদন-লটারির সম্ভাব্য তারিখ

নীতিমালা অনুযায়ী—স্কুলে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি, আবেদন, লটারি ও ভর্তির সময়সূচি ঠিক করবে মাউশি। গত ১০ নভেম্বর মাউশির এক সভায় স্কুলে ভর্তির কার্যক্রম সম্পন্নে সম্ভাব্য সময়সূচি ঠিক করা হয়েছে।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১৯ নভেম্বরের মধ্যে এ ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। ২১ নভেম্বর থেকে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হবে, যা চলবে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আবেদন প্রক্রিয়া শেষে আগামী ১৪ ডিসেম্বর ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠিত হতে পারে। লটারি হওয়ার পর তাতে নির্বাচিত শিক্ষার্থীরা ১৭-২১ ডিসেম্বর ভর্তি হতে পারবে।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence