আন্তর্জাতিক গবেষণা সম্মেলনে আলবুখারী ইউনিভার্সিটির রাশিদুলের গৌরবময় সাফল্য

মালয়েশিয়ার আলবুখারী ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো. রাশিদুল ইসলাম আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অনন্য সাফল্য অর্জন করেছেন। তিনি সৌদি আরবের কিং ফাহাদ ইউনিভার্সিটি অব পেট্রোলিয়াম অ্যান্ড মিনারেল (KFUPM) আয়োজিত গ্লোবাল স্টুডেন্টস রিসার্চ (জিএসআর) সম্মেলন ২০২৫-এ গবেষণা উপস্থাপন করেন।

আরব বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় KFUPM-এর আয়োজিত এ সম্মেলনে সারা বিশ্ব থেকে জমা পড়া ১৫০০-র বেশি গবেষণাপত্র। যার মধ্যে মাত্র ৮০টি নির্বাচিত হয়। মালয়েশিয়া থেকে কেবল মো. রাশিদুল ইসলাম ও তার সিনিয়র মো. সিরাজুন নাবি এই সম্মানজনক সুযোগ লাভ করেন। সম্পূর্ণ ভ্রমণ ব্যয়—ভিসা, ফ্লাইট, আবাসন ও খাবার—কনফারেন্স কর্তৃপক্ষ দ্বারা স্পন্সর করা হয়।

রাশিদুল ইসলামের কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম থানার ফেলনা গ্রামের মো: জহিরুল ইসলাম ও মোসা: পারভীন বেগমের দ্বিতীয় সন্তান। তিনি কুমিল্লা জেলার মোগলটুলি আফতাব উদ্দিন দাখিল মাদ্রাসার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ ৪.৮৯ এবং (বিজ্ঞান বিভাগ)-গাজীপুর জেলার তা‘মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে আলিম পরীক্ষায় জিপিএ ৫.০০ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। বর্তমানে তিনি মালয়েশিয়ার আলবুখারি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (AIU) ব্যাচেলর ইন কম্পিউটার সাইন্সে অধ্যয়নরত। 

মো. রাশিদুল ইসলাম উক্ত সম্মেলনে গবেষণা উপস্থাপন করেন: “AI-Driven Diagnosis of Neurological Disorders Using EfficientNetB Model from Brain MRI Data” গবেষণায় EfficientNetB0 ও EfficientNetB3 মডেল পরিবর্তন করে মাল্টি-স্কেল ফিচার ফিউশন যুক্ত করা হয়, যা প্রচলিত পদ্ধতির তুলনায় অধিক নির্ভুলতা ও কর্মদক্ষতা দেখিয়েছে। এই গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) সাহায্যে দ্রুত ও নির্ভুলভাবে মস্তিষ্কের টিউমারসহ নানা নিউরোলজিক্যাল ডিজঅর্ডার শনাক্তকরণ পদ্ধতি উন্নত করা। এর ফলে রোগ নির্ণয় প্রক্রিয়া সহজতর হওয়ার পাশাপাশি চিকিৎসকদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ আরও নির্ভুল হচ্ছে, যা কোটি কোটি মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।

আরও পড়ুন: স্কলারশিপে স্নাতক-স্নাতকোত্তরের সুযোগ জাপানে, নানা সুবিধার সঙ্গে এককালীন দেবে পাঁচ লাখ ইয়েন

গবেষণায় তার সঙ্গে টিমমেট হিসেবে যুক্ত ছিলেন মো. শাকিল হোসাইন ও সাহাবা আলম রিয়ন। গবেষণার তত্ত্বাবধানে ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন সিনিয়র মো. সিরাজুন নাবি।

এ সম্মেলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে মো. রাশিদুল ইসলাম বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গবেষকদের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার এবং ভবিষ্যতের জন্য আন্তর্জাতিক গবেষণা নেটওয়ার্ক তৈরি করার সুযোগ পান। এই অর্জন তাকে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার নতুন দিগন্ত উন্মোচনে অনুপ্রাণিত করেছে।

ভবিষ্যতে তিনি একজন সায়েন্টিস্ট হিসেবে দেশ ও জাতির সেবা করার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে চান

ভবিষ্যতে অন্যেরা কীভাবে এমন সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতে পারে—এ প্রসঙ্গে মো. রাশিদুল ইসলাম বলেন, "গবেষণার জন্য সময়োপযোগী ও উদীয়মান একটি বিষয় নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ, যেমন AI, স্বাস্থ্যসেবা বা নবায়নযোগ্য জ্বালানি। এরপর নিয়মিত লিংকডইন, গবেষণা ফোরাম ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট পর্যবেক্ষণ করে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের স্কলারশিপ ও ফান্ডিংয়ের সুযোগ খুঁজে বের করতে হবে। সঠিক সময়ে আবেদন করা ও মানসম্পন্ন গবেষণাপত্র ও আকর্ষণীয় প্রেজেন্টেশন তৈরি করাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।"

তিনি এই সাফল্যের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সিনিয়র ভাই এবং সর্বোপরি তার পরিবার ও বাবা-মায়ের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।


সর্বশেষ সংবাদ