পরীক্ষায় বসার সুযোগ পাচ্ছেন না ২ শিক্ষার্থী, আন্দোলনে সহপাঠীরা

আন্দোলনে নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা
আন্দোলনে নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা  © টিডিসি ফটো

ক্লাসে উপস্থিতির শর্ত পূরণ না করার অভিযোগে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন না জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ২ শিক্ষার্থী। তাদের পরীক্ষায় বসার সুযোগের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন সহপাঠীরা।

বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ ভবনের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। পরে কলা অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. আহমেদুল বারী, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক ড. তপন কুমার সরকার ও বিভাগীয় প্রধান আল জাবিরের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা আগামী রবিবার দুপুর পর্যন্ত আন্দোলন শিথিল করার ঘোষণা দিয়ে তালা খুলে দেয়।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানায়, গত ২১ আগস্ট থেকে শুরু হওয়া ২য় বর্ষ ১ম সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা চলাকালীন সময় আমরা জানতে পারি- একটি কোর্সে উপস্থিতির শর্ত পূরণ না করায় আমাদের দুইজন সহপাঠী পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না। এরপর গত ২৩ আগস্ট বিভাগীয় প্রধান এ ব্যাপারে আবেদন জমা দিতে বললে ওই দুজন আবেদনও জমা দেন। এরপরও তাদের পরীক্ষায় বসতে দেয়া হচ্ছে না।

অভিনেতার প্রস্তুতি ২১৪ নং কোর্সে ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থী সুমাইয়া খান কানিজ ও ইসরাত জান্নাত সাদিয়ার ক্লাসে উপস্থিতির হার যথাক্রমে ৫৪% এবং ৫০%। কোর্স শিক্ষক হিসেবে ছিলেন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ফারজানা নাজ স্বর্ণপ্রভা।

ইসরাত জান্নাত সাদিয়া বলেন, অনলাইনে ৮টি ক্লাস হয়েছে। যেগুলোতে ইন্টারনেট ও ডিভাইস সমস্যার কারণে অংশগ্রহণ করতে পারিনি। এমনকি গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা, দোল উৎসব এবং বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের দিনও ক্লাস নিয়েছেন তিনি।

‘‘আমাদের উপস্থিতি কম ছিল এটা জানতাম। ভেবেছিলাম জরিমানা দিয়ে পরীক্ষা দিতে পারবো, কিন্তু এখন বলা হচ্ছে আর পরীক্ষায় বসারই সুযোগ নেই। ম্যাম আমাদের এবিষয়ে পরিষ্কার করে বলেননি। পরে সমস্যাটি নিয়ে বিভাগীয় প্রধান আল জাবির স্যারের কাছে গেলে তিনি আবেদন করতে বলেন। আমরা আবেদন করলে বলা হয়, এখন আর সুযোগ নেই।’’

তিনি আরো বলেন, আমরা মনে করি আমাদের প্রতি ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই এমনটি করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতির সমাধান না হলে আত্মহননের পথ বেছে নেব এবং এর জন্য দায়ী থাকবেন স্বর্ণপ্রভা ম্যাম।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কোর্স শিক্ষক ফারজানা নাজ স্বর্ণপ্রভা বলেন, এর আগেও বিভিন্নভাবে শিক্ষার্থীদের উষ্কে দিয়ে বিভাগে এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। অভিনেতার প্রস্তুতি কোর্সে আমি সর্বমোট ৩৪টি ক্লাস নিয়েছি। এর মধ্যে অনলাইনে মাত্র দুইটি ক্লাস নিয়েছি, সেটাও শিক্ষার্থীদের অনুরোধেই। ভর্তি পরীক্ষার দিন যে ক্লাস নিয়েছি সেটাতে উপস্থিতিও বিবেচনা করিনি।

তিনি আরো বলেন, গত ১১ আগস্ট ইন্টারনাল নম্বর প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর ওই দুই শিক্ষার্থী যখন আবেদন দিয়েছে তখন আমার কিছু করার ছিল না। আমি নিয়মের বাইরে যেতে পারি না। তারা আগে আবেদন দিলে আমি সমাধান করার আশ্বাস দিয়েছিলাম।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ৩ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থীর পরীক্ষা অংশগ্রহণের ব্যবস্থা করা, সমস্যা সমাধান না হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষা স্থগিত করা এবং শিক্ষক স্বর্ণপ্রভার আওতায় ৮ম সেমিস্টার পর্যন্ত কোনো কোর্স না দেয়া।

এছাড়াও আগামী রবিবারের মধ্যে সমাধান না হলে বিভাগের সামনে সকলেই আত্মহনন করবেন বলে বিভাগীয় প্রধান বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, এর আগে ২০১৭-১৮ এবং ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরাও একই পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলো। অথচ সেই সময় অভিযোগ জানালেও বিভাগ সেটি গ্রহণ করেনি।

নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আল জাবির বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী, ৬০% উপস্থিতি না থাকলে একজন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেন না। এ বিষয়টি কোর্স শিক্ষকের তত্ত্বাবধানেই থাকে। আমরা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে লিখিত আবেদন পেয়েছি এবং কোর্স শিক্ষকও একটি আবেদন জমা দিয়েছেন। 

রাতে একাডেমিক কাউন্সিল ও পরীক্ষা কমিটির মিটিং শেষে বিভাগীয় প্রধান আল জাবির জানান, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আপাতত অভিনেতার প্রস্তুতি ২১৪ নং কোর্সের পরীক্ষা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শনিবার আবারও আমরা আলোচনায় বসবো। শিক্ষার্থীদের জন্য ইতিবাচক সিদ্ধান্তই আসবে আশা করি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence