জিপিএ-৫ পেলেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবেন না ১৯ হাজার শিক্ষার্থী

ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী
ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী  © ফাইল ছবি

চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় এবার জিপিএ-৫ এবং পাসের হার কমেছে। এবার ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি ও মাদ্রাসা বোর্ড মিলিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭। আর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন রয়েছে ৫০ হাজারের মতো। ফলে জিপিএ-৫ পেলেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবেন না প্রায় ১৯ হাজার শিক্ষার্থী।

অবশ্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন কলেজগুলোয় আসন রয়েছে পাঁচ লাখের বেশি। পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আসন সংখ্যার হিসাবে উচ্চশিক্ষায় ভর্তির সুযোগ পাবেন সবাই। তবে শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য হবে তীব্র লড়াই। এ ছাড়া স্নাতক পর্যায়ে দেশে প্রায় ১৩ লাখ আসন আছে। ফলে ভর্তিযোগ্য শিক্ষার্থী না পাওয়ায় আড়াই লাখের আসন ফাঁকা থেকে যাবে। তবে উচ্চশিক্ষায় যেহেতু ১০ থেকে ১৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ভর্তি হয় না, তাই আসন খালি থাকবে আরও বেশি।

জানা গেছে, এইচএসসি ও সমমানে ভালো ফলাফল করা শিক্ষার্থীদের মূল টার্গেট থাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যায়লগুলোতে আসন রয়েছে ৫০ হাজার। এ ছাড়া সরকারি মেডিকেল কলেজে চার হাজার ৩৫০টি, বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ছয় হাজার ৩৪০টি, সরকারি ডেন্টাল কলেজে ৫৪৫টি, বেসরকারি ডেন্টাল কলেজে এক হাজার ৩৫০টি, আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজে ৩৫০টি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকে (সম্মান) এক লাখ ৮৬ হাজার ৮৯৯টি ও পাস কোর্সে এক হাজার ১৬০টি আসন রয়েছে। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজে ২৩ হাজার ৬৩০টি, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজে স্নাতকে (সম্মান) চার লাখ ৩৬ হাজার ২৮৫টি ও পাস কোর্সে চার লাখ ২১ হাজার ৯৯০টি, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত মাদরাসায় ৪৬ হাজার ৫২৯টি, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৮৭ হাজার ৫৯৩টি, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে ৭২০টি, টেক্সটাইল কলেজে ৭২০টি, মেরিন ইনস্টিটিউটে ৬৬০টি, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজে তিন হাজার ৭৯০টি, বিশেষায়িত আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮০০টি এবং নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কলেজে পাঁচ হাজার ৬০০টি আসন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া অনেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাবেন না। কম জিপিএ নিয়েও অনেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবেন। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ না পাওয়া জিপিএ-৫ ধারীর সংখ্যা আরও বাড়বে। তবে তাদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজে ভর্তির সুযোগ থাকবে। অনেকে দেশের বাইরেও পড়াশোনো করতে যাবেন। ফলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বাদ দিলে জিপিএ-৫ ধারীদের মেডিকেল, বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে খুব একটা বেগ পেতে হবে না।

চলতি বছর এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেন ১২ লাখ ৩৫ হাজার ৬৬১ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে পাস করেছেন ৭ লাখ ২৬ হাজার ৯৬০ জন শিক্ষার্থী। গড় পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ। আর ফেল করেছেন ৫ লাখ ৮ হাজার ৭০১ জন। গড় ফেলের হার ৪১ দশমিক ১৭ শতাংশ।

মোট উত্তীর্ণ হয়েছে ৭ লাখ ২৬ হাজার ৯৬০ জন। মোট পরীক্ষর্থীর মধ্যে ছাত্র অংশ নেয় ৬ লাখ ১১ হাজার ৪৪৭ জন, উত্তীর্ণ ৩ লাখ ৩৩ হাজার ৮৬৪ জন, জিপিএ-৫ ৩২ হাজার ৫৩ জন, ছাত্রদের পাসের হার ৫৪ দশমিক ৬০ শতাংশ। ছাত্রী অংশ নেয় ৬ লাখ ২৪ হাজার ২১৫ জন। উত্তীর্ণ ৩  লাখ ৯৩ হাজার ৯৬ জন, জিপিএ-৫ ৬৯ হাজার ৯৭ জন, ছাত্রীদের পাসের হার ৬২ দশমিক ৯৭  শতাংশ।


সর্বশেষ সংবাদ