ইবি শিক্ষার্থী সাজিদ হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্ব এখনো পায়নি সিআইডি
- ইবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০২:০২ PM
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল কুরআন এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহ হত্যার ঘটনায় প্রায় ২ মাস হতে চললেও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্তের দায়িত্ব পায়নি ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি)। এদিকে তদন্তের ধীরগতিতে হতাশা প্রকাশ করে হত্যাকারীদের বিচার চাইছে সাজিদের পরিবার।
ফরেনসিক রিপোর্টে সাজিদকে শ্বাসরোধ করে হত্যার বিষয়টি স্পষ্ট হওয়ায় তার বাবা আহসান হাবিবুল্লাহ দেলোয়ার গত ৪ আগস্ট ইবি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এসময় তিনি মামলার তদন্ত কার্যক্রম সিআইডির মাধ্যমে করার দাবি জানান। সাজিদের বাবার আবেদনের প্রেক্ষিতে সিআইডির হাতে তদন্তভার দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হলেও দীর্ঘ ১ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো অফিসিয়ালি তা সম্পন্ন হয়নি। তবে, লিখিত আদেশ পাওয়ার আগেই ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনায় মৌখিক আদেশের ভিত্তিতে সিআইডি তদন্ত কাজ শুরু করে। হত্যা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করলেও উল্লেখযোগ্য কোন অগ্রগতি এখনো হয়নি৷
তদন্তের ধীরগতিতে হতাশা প্রকাশ করে সাজিদের বাবা আহসান হাবিবুল্লাহ বলেন, ও তো একা একা মারা যায়নি, কেও না কেও মারছে। হলের ভেতরে মারছে নাকি বাইরে মারছে এটাও কেও বলতে পারে না। পুলিশ প্রশাসন নিজ থেকে আমাদের কোন খবর দেয়না। আমিই মাঝেমাঝে রিং করে জিজ্ঞেস করি কোন খবর আছে কিনা। ভিসি স্যারকেও আমি জিজ্ঞেস করেছি যে আপনারা কি করলেন। উনারা কাজ না করলে তো আমরা বলে লাভ নাই। আমরা ছেলে হত্যার বিচার চাই।
জানতে চাইলে ইবি থানার ওসি মেহেদী হাসান বলেন, সাজিদ হত্যার বিষয়ে আমাদের তদন্তের কাজ চলছে আমরা বিভিন্ন এঙ্গেল থেকে কাজ করছি। তবে আরো কিছুদিন সময় লাগবে। একই কথা গত ১৫ আগেও বলেছিলেন উল্লেখ করে গত ১৫ দিনে কি অগ্রগতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ফরেনসিকের জন্য যে সমস্ত জিনিস ঢাকায় পাঠানো হয়েছিল সেগুলোর প্রতিবেদন আমরা এখনো পাইনি। সেগুলো হাতে আসার আগ পর্যন্ত নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না।
কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, সাজিদের বাবার আবেদনের প্রেক্ষিতে তদন্তের দায়িত্ব সিআইডিকে দেওয়ার জন্য একটি চিঠি আমরা পুলিশ হেডকোয়ার্টারে পাঠিয়েছিলাম কিন্তু এখনো সেটা পুলিশ হেডকোয়ার্টার থেকে অনুমোদিত হয়নি। কবে নাগাদ পাওয়া যেতে পারে সেটা ঠিক বলতে পারছি না, প্রথম দিকে কিছু কোয়ারি থাকে, সেগুলো ফিলাপ হলেই পাওয়া যাবে। হয়তো আরও কয়েকটা দিন লাগতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুলাই বিকেলে শাহ আজিজুর রহমান হলের পুকুর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদ আবদুল্লাহর ভাসমান লাশ উদ্ধার করে শিক্ষার্থীরা। প্রথমে পানিতে ডুবে মৃত্যুর ধারণা করা হলেও ফরেনসিক রিপোর্টে জানা যায় সাজিদকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। তারপর থেকেই সাজিদ হত্যার বিচার ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের দাবিতে আন্দোলন করছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে প্রশাসনের কাছে সরকারের উচ্চপর্যায়ের তদন্ত সংস্থার মাধ্যমে তদন্তের সুপারিশ করে প্রশাসনের গঠিত ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি।