‘ফ্যাসিবাদ পতনে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন আজ অভিভাবকহীন ও কুক্ষিগত’
- ইবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৫, ০৯:১০ PM , আপডেট: ২০ জুন ২০২৫, ০৮:২১ PM
গত বছরের জুলাই অভ্যুত্থানে আওয়ামী ফ্যাসিবাদ পতনের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আজ অভিভাবকহীন এবং সুবিধাবাদী রাজনৈতিক গোষ্ঠীর কাছে কুক্ষিগত বলে জানিয়েছেন সংগঠনের খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়করা।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুরে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে অবস্থিত কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় দেশব্যাপী চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাংগঠনিক অবস্থান, কার্যক্রম, গঠনতন্ত্র প্রণয়ন এবং কেন্দ্রীয় কমিটি পুনর্গঠন প্রক্রিয়া সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে আয়োজিত এক সাংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন নেতারা।
লিখিত বক্তব্যে খুলনা বিভাগীয় নেতারা বলেন, দুঃখের বিষয় হলেও সত্য যে, ফ্যাসিবাদ পতনের নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আজ অভিভাবকহীন এবং সুবিধাবাদী রাজনৈতিক গোষ্ঠীর কাছে কুক্ষিগত। ফ্যাসিবাদি ব্যবস্থার বিলোপ করতে গিয়েই যে সংগঠন হারালো মেধাবী তরুণ- নিষ্পাপ তাজা প্রাণগুলোকে, সেই সংগঠনই আজ ফ্যাসিবাদী বন্দোবস্তের কাছে ধরাশায়ী হতে চলেছে। এই সংগঠনের বীজ যে সাহসী নির্ভীক তরুন ছাত্র নেতারা বুনেছিলো সেই ছাত্র নেতারা এর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং সাংগঠনিক রুপরেখা না দিয়েই এই সংগঠন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। পরবর্তীতে অভিভাবকহীন এই সংগঠনের সুবিধাবাদী- স্বার্থান্বেষী একশ্রেণীর নেতাকর্মীরা বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে অরাজনৈতিক এই ব্যানারকে কলঙ্কিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি অরাজনৈতিক লেজুরবৃত্তিহীন ছাত্র সংগঠন উল্লেখ করে নেতারা বলেন, সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রণয়নের লক্ষ্যে গঠিত নির্বাচন কমিশন এবং নির্বাচনী ব্যবস্থায় রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃত্ব স্থানীয় ব্যক্তিদের প্রভাব কোনো ভাবেই প্রত্যাশিত নয়। আরো লক্ষ্য করা গেছে যে, উক্ত নির্বাচনে যে সকল নেতৃবৃন্দ গণঅভ্যুত্থানে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছিলেন অর্থাৎ জেলা আহ্বায়ক কমিটি থেকে প্রার্থীতার সুযোগ রাখলেও ভোটাধিকার ব্যবস্থার কোন সুযোগ রাখেনি, যা ঐক্যমতের ভিত্তিতে সাংগঠনিক নেতৃত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে বিতর্কিত ও অগ্রহণযোগ্য। তাছাড়া জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের শুরুতে তৎকালীন ১৫৮ জন সমন্বয়ক এর মধ্যে যারা এখনো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে কাজ করে যাচ্ছে তাদেরকেও প্রার্থিতা ও ভোটাধিকার এর সুযোগ রাখেনি।
এসময় কেন্দ্রীয় কমিটি পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে ৩ দফা দাবি জানান তারা। দাবিসমূহ হলো- নির্বাচন কমিশন নতুন করে গঠন করতে হবে, কোন রাজনৈতিক দলের নেতা নির্বাচন কমিশনার হতে পারবে না; জেলার নেতৃবৃন্দকে প্রার্থীতার পাশাপাশি ভোটাধিকারের সুযোগ দিতে হবে এবং কেন্দ্রীয় যেসকল সমন্বয়ক কোন রাজনৈতিক দলে নেই তাদের কে প্রার্থীতা ও ভোটাধিকারের সুযোগ দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বয়ক এস এম সুইট, যশোর জেলার আহ্বায়ক রাশেদ খান, মাগুরা জেলার আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার সেলিম, নড়াইল জেলার আহ্বায়ক আব্দুর রহমান মেহেদী, ঝিনাইদহ জেলার আহ্বায়ক আবু হুরায়রা ও কুষ্টিয়ার সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।