বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দেয়া হয় নিম্নমানের কাগজের সার্টিফিকেট
- আরিফ হোসাইন
- প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৫, ১১:৪৩ AM , আপডেট: ২৯ জুন ২০২৫, ০৮:৫১ PM
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে নিম্নমানের কাগজের সার্টিফিকেট ও মার্কশিট দেওয়ার অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। বিদেশে উচ্চশিক্ষাসহ চাকরির বাজারে গিয়ে এমন কাগজের সার্টিফিকেট নিয়ে নানা প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টির সার্টিফিকেটে কোর্সের সময়কালও উল্লেখ করা হয় না বলে জানান তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মো. খায়রুল ইসলাম সোহাগ বলেন, ‘তুলনামূলকভাবে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের সার্টিফিকেট একজন শিক্ষার্থীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দলিল। যেকোনো চাকরির ভাইভা কিংবা ক্ষেত্রবিশেষ আবেদনের ক্ষেত্রে সার্টিফিকেটের স্ক্যান বা ফটোকপি জমা দিতে হয়। কিন্তু বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিগত দিনে মানহীন কাগজের যে, সার্টিফিকেট ইস্যু করা হচ্ছে তার চেয়ে যে খামে ঐ সার্টিফিকেট দেয়া হয়, সেটি অধিকতর উন্নতমানের।
এ ছাড়া যে কাগজে ট্রান্সক্রিপ্ট বা গ্রেডশিট ইস্যু করা হচ্ছে, তা ২-১ বার উল্টালে বা একটু ভাঁজ হলেই ভেঙে যাচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ এসব দলিল নিয়ে হেয়ালিপনা কর্তৃপক্ষের অদক্ষতা প্রমাণ করে। সার্টিফিকেটে কোর্সের সময়কাল উল্লেখ না থাকায় পরবর্তী জীবনে শিক্ষার্থীদের নানা বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে। তাই সার্বিকভাবে, সার্টিফিকেট ইস্যু ও ব্যবস্থাপনার বিষয়ে মানোন্নয়ন জরুরি।’
আরও পড়ুন: স্বপ্নপূরণে মেস-হোস্টেলেই কাটবে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের ঈদ
বাংলা বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের মো : জাহিদুল ইসলাম (সাকিন) বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি আমরা একটি সার্টিফিকেট অর্জন করি।এই সার্টিফিকেট অর্জনের পিছনে থাকে হাজারো ত্যাগ-তিতীক্ষার গল্প, অনেক সংগ্রামের গল্প। চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতায় আমাদের বিভিন্ন দপ্তরে সার্টিফিকেট জমা দিতে হয়। কিন্তু আমরা বিভিন্ন দপ্তরে জমা দিতে গিয়ে দেখি, আমাদের পেপার নিয়ে সংশ্লিষ্টরা অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন, কাগজের মান ভালো না। অনেক সময় দেখা যায় কাগজ ছিঁড়া, বিভিন্ন অংশ কালিমাখা। প্রতিযোগিতার বাজারে যা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি আমাদের শিক্ষার্থীদের যোগ্যতাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করে।’
মার্কেটিং বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের মো. সিহাব বলেন, ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেটের মান নিয়ে খুবই হতাশ। আমরা অনেক কঠোর পরিশ্রম করি, সময় ও টাকা ব্যয় করে পড়াশোনা করি। কিন্তু যখন আমাদের সার্টিফিকেটের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, তখন আমাদের স্বপ্ন এবং ভবিষ্যৎ দুটোই আক্রান্ত হয়। মানহীন সার্টিফিকেটের কারণে চাকরির সুযোগ কমে যায়, উচ্চশিক্ষার দরজাও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এতে শিক্ষার্থীর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয় এবং দীর্ঘমেয়াদে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনামও হ্রাস পায়।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক সুব্রত কুমার বাহাদুর বলেন, ‘আমাদের বর্তমান ভিসি স্যারও বিষয়টি নিয়ে কথা বলছেন। আগের যে কাগজগুলো স্টকে রয়েছে সেগুলো ব্যবহার করা হয়ে গেলে পরবর্তীতে আমরা ভালো মানের কাগজ ব্যবহার করবো।’