তিতুমীর কলেজে ২৬ লাখ টাকার তহবিল কেলেঙ্কারি, অভিযুক্ত হিসাবরক্ষক ও ক্যাশিয়ার
- তিতুমীর কলেজ প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২৩ মে ২০২৫, ০৫:০৫ PM , আপডেট: ২৩ মে ২০২৫, ০৭:১৮ PM
সরকারি তিতুমীর কলেজের তহবিল থেকে প্রায় ২৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে কলেজটির সাবেক হিসাবরক্ষক মো. আব্দুল মোন্নাফ আকন্দ (মধু) এবং বর্তমান ক্যাশিয়ার এফ. এম. তুষারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ ওঠার পর অভিযুক্তদের রক্ষায় একটি গোপন বৈঠকের আয়োজনের অভিযোগও উঠেছে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুরে কলেজের প্রশাসনিক ভবনে অনুষ্ঠিত হয় একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক। এতে অংশ নেন অভিযুক্ত ক্যাশিয়ার তুষারসহ হিসাব শাখার কয়েকজন কর্মচারী। অভিযোগ রয়েছে, ওই বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল কলেজের নতুন অধ্যক্ষের কাছে তহবিল কেলেঙ্কারির বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে একটি ‘সমন্বিত বক্তব্য’ তৈরির পরিকল্পনা।
তবে তা অস্বীকার করেছেন ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক এ এস এম আসাদুজ্জামান। তিনি দাবি করেন, এটি কোনো বৈঠক ছিল না; বরং সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রাজ্জাকের অবসরোত্তর বিদায় সংবর্ধনা উপলক্ষে তিনি কলেজে গিয়েছিলেন এবং চলার পথে ক্যাশিয়ার তুষারের সঙ্গে দেখা হয়েছিল মাত্র। যদিও অভিযুক্ত ক্যাশিয়ার এফ. এম. তুষার নিজে দাবি করেছেন, তার অধ্যাপক আসাদুজ্জামানের সঙ্গে কোনো সাক্ষাৎ হয়নি।
এদিকে, ডেইলি ক্যাম্পাসের হাতে আসা একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর অভিযুক্ত সাবেক হিসাবরক্ষক মো. আব্দুল মোন্নাফ আকন্দের স্ত্রী এবং পরিবারের আরও সদস্যদেরও কলেজে দেখা গেছে। কিছুক্ষণ পর ক্যাম্পাসের আরেকটি গেট দিয়ে বের হয়ে যান মোন্নাফ আকন্দ। ফুটেজে দেখা যায়, তিনি তাড়াহুড়ো করে অধ্যক্ষের কক্ষ থেকে বের হয়ে মোটরসাইকেলে চড়ে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন।
জানা গেছে, কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ছদরুদ্দীন আহমেদ দায়িত্ব গ্রহণের পর হিসাব পরীক্ষা করতে গিয়ে তহবিলের ২৬ লাখ টাকার গরমিল দেখতে পান। এরপর তিনি সাবেক হিসাবরক্ষক মো. আব্দুল মোন্নাফ আকন্দ, বর্তমান ক্যাশিয়ার এফ. এম. তুষার এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ক্যাশিয়ার তুষার দাবি করেন, ২৬ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ভিত্তিহীন এবং তিনি অধ্যক্ষের কক্ষে ডাকার অভিযোগও অস্বীকার করেন। অপরদিকে, সাবেক হিসাবরক্ষক মো. আব্দুল মোন্নাফ আকন্দ বলেন, “আমি ওই রকম মানুষ নই। অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন।” তবে কেন তাকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল জানতে চাইলে তিনি সঠিক ব্যাখ্যা না দিয়ে ফোন কেটে দেন।
কলেজের একটি অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, তহবিল আত্মসাতের সঙ্গে কেবল হিসাবরক্ষক বা ক্যাশিয়ার নন, কলেজের কয়েকজন সাবেক ও বর্তমান প্রভাবশালী শিক্ষকের সম্পৃক্ততার অভিযোগও রয়েছে। বিষয়টি আরও তদন্তসাপেক্ষ বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. ছদরুদ্দীন আহমেদ বলেন, “আমাদের অফিসিয়াল বিষয় আপনাদের সঙ্গে কেন শেয়ার করব? আপনারা কেন খুঁচিয়ে জানতে চাচ্ছেন? এমন কিছু ঘটলে অফিসিয়ালি সবাইকে জানান হবে।”