ইবির সেই শিক্ষকের স্থায়ী বহিষ্কার দাবিতে আবারও বিক্ষোভ

শিক্ষক হাফিজুল ইসলামের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
শিক্ষক হাফিজুল ইসলামের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ  © টিডিসি

শিক্ষার্থীদের কথার অবাধ্য হলে ইন্টারনাল নম্বর কম দেওয়া, ক্লাসে মেয়েদের জামা কাপড় নিয়ে কটূক্তি, তাদের গালাগাল করা ও সমকামিতার অভিযোগ ওঠা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সেই শিক্ষক হাফিজুল ইসলামের স্থায়ী বহিষ্কারের দাবিতে আবারও বিক্ষোভ করেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

আজ শুক্রবার (১৬ মে) দুপুর ১২টায় রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের গগন হরকরা মিলনায়তনে সিন্ডিকেট সদস্য ও ময়মনসিংহ রেঞ্জের উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) ড. আশরাফুর রহমানের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে ২০১৭-১৮ থেকে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ মিছিল বের করেন।

মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘উই ওয়ান্ট উই ওয়ান্ট, জাস্টিস জাস্টিস’; ‘হাফিজের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’; ‘সমকামী শিক্ষক, চাই না চাই না’; ‘অ্যাকশন অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন’; ‘হাফিজের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’; ‘দফা এক দাবি এক, হাফিজের বহিষ্কার’; ‘হাফিজ হটাও, ডিএস বাঁচাও’ ইত্যাদি স্লোগান দেন৷

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সিন্ডিকেট সদস্য ও ময়মনসিংহ রেঞ্জের উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) ড. আশরাফুর রহমান বলেন, ‘বিচারে কি হবে, তা আমরা কেউই জানি না। কিন্তু যেহেতু তিনি একজন শিক্ষক, তাকে যেন আমরা যথাযথ মর্যাদাটা দেই। যে অপরাধগুলোর অভিযোগ উঠেছে শিক্ষক হাফিজের বিরুদ্ধে, সেগুলো নিয়ে আমি শিক্ষার্থী ও অভিযুক্ত শিক্ষক দুজনের সঙ্গেথেই বসব, পক্ষ-বিপক্ষ উভয়েরই কথা শুনব। যদি আনীত অভিযোগগুলোর প্রমাণ মেলে তাহলে নিয়ম অনুযায়ী তাকে শাস্তি দেওয়া হবে।’

আরও পড়ুন: তিতুমীরের এক বিভাগে ৮০০ শিক্ষার্থীর বিপরীতে ৪ শিক্ষক, কাটে না সংকট

জানা যায়, একাধিক গুরুতর অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হাফিজুল ইসলামের বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট বাতিল এবং এক বছরের বাধ্যতামূলক ছুটির সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তদন্ত কমিটি অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর গত ২২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত ২৬৬তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। তবে বিভাগের শিক্ষার্থীরা এই শাস্তিকে পর্যাপ্ত মনে না করে হাফিজুল ইসলামকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করার দাবি জানান। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে প্রশাসনের আশ্বাসে তারা আন্দোলন স্থগিত করেন।

ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলোর মধ্যে রয়েছে নারী শিক্ষার্থীদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল, কথার অবাধ্য হলে পরীক্ষায় নম্বর কম দেওয়া, ক্লাসে মেয়েদের জামা কাপড় নিয়ে কথা বলা, বাজারের মেয়ে বলে গালিগালাজ, শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে হেনস্তা, ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে মারার ও ছাদ থেকে ফেলে দেওয়ার হুমকি, ব্যক্তিগত রুমে নিয়ে গিয়ে শিক্ষার্থীদের শারীরিকভাবে নির্যাতন, দাড়ি থাকলে শিবির ট্যাগ দিয়ে হেনস্তা, ইচ্ছাকৃতভাবে ফলাফল খারাপ করে দেওয়া, অন্যান্য শিক্ষকদের নাম নিয়ে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে অপমান, অপদস্থ ও চাপ প্রয়োগ।


সর্বশেষ সংবাদ