গাছপালাহীন কবি নজরুল কলেজ ক্যাম্পাস, প্রচণ্ড গরমে অস্বস্তিতে শিক্ষার্থীরা

ভবন নির্মাণের জন্য ক্যাম্পাসের অনেক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ক্যাম্পাসে ফাঁকা জায়গায় নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখা হয়েছে
ভবন নির্মাণের জন্য ক্যাম্পাসের অনেক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ক্যাম্পাসে ফাঁকা জায়গায় নির্মাণসামগ্রী ফেলে রাখা হয়েছে  © টিডিসি

দেশের অন্যতম প্রাচীন, শীর্ষস্থানীয় ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রাজধানীর কবি নজরুল সরকারি কলেজ (কেএনজিসি)। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিতে শ্রেণিকক্ষ, লাইব্রেরি, ওয়াশরুমের সংকট রয়েছে। এ সংকট নিরসনে বহুতল ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ফলে কলেজ প্রাঙ্গণের ছোট-বড় অসংখ্য গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ফলে একসময়ের সবুজ-শ্যামল ছায়াময় প্রাঙ্গণ এখন প্রায় বৃক্ষহীন। গ্রীষ্মের প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানর শিক্ষার্থীরা। সকাল গড়াতেই বাড়তে থাকে রোদের তেজ, দুপুরের দিকে সূর্যের তাপ ও ভ্যাপসা গরমে তারা অস্বস্তি ও ক্লান্ত হয়ে ওঠেন।

কবি নজরুল সরকারি কলেজ মাত্র ৩ একর জমিতে প্রতিষ্ঠিত। যেখানে উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর মিলিয়ে ১৯টি বিভাগে প্রায় ২১ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করেন। তবে এই বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য সেমিনারযোগে শ্রেণিকক্ষ রয়েছে মাত্র ৩৭টি, যা প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম। তাই এই শ্রেণিকক্ষের সংকট দূর করতে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।

কলেজের পশ্চিম পাশে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে, ফলে এই পাশের সব গাছ কেটে ফেলতে হয়েছে । একইভাবে, উত্তর পাশে কলেজের কেন্দ্রীয় মসজিদ নির্মাণকাজও চলছে। ফলে ওই পাশেরও বেশ কিছু গাছ কেটে ফেলতে হয়েছে। গাছগুলো কেটে ফেলায় শিক্ষার্থীদের বেশি গরম অনুভূত হচ্ছে।

সিফাত রহমান শিমুল নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, গত বর্ষা মৌসুমে ঝড়-তুফানে বেশ কিছু গাছ উপড়ে পড়ে। এবার ভবন নির্মাণের জন্য কেটে ফেলা হয়েছে ছোট-বড় অসংখ্য গাছ। এতে একদিকে যেমন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে, তেমনি তাপমাত্রাও বেড়েছে ব্যাপকভাবে। ফলে এ সময়ে ক্যাম্পাসে ক্লাস করা কষ্টকর হয়ে উঠেছে। ক্যাম্পাসের পরিবেশ রক্ষা ও আগের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত বৃক্ষরোপণের উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।

আরও পড়ুন: কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষকদের উৎসব ভাতা বৃদ্ধি নিয়ে যা বলছে মন্ত্রণালয়

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মফিজুল ইসলাম বলেন, বৈশাখ মাসের মধ্যভাগে এসে এবার তাপমাত্রা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বছর ক্যাম্পাসে এতটা গরম ছিল না। এবার ভবন নির্মাণের জন্য ক্যাম্পাসের অনেক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। প্রচণ্ড রোদের তাপে ক্যাম্পাসে হাঁটাচলা করাও দুঃসাধ্য হয়ে উঠেছে। অনেকেই কিছুটা স্বস্তির খোঁজে আশ্রয় নিচ্ছেন পাশের বাহাদুরশাহ পার্কের ছায়াতলে।

কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক হাবিবুর রহমানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কলেজে পর্যাপ্ত ভবন না থাকায় শ্রেণিকক্ষ, লাইব্রেরি, ওয়াশরুমসহ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছে শিক্ষার্থীরা। এসব সংকট নিরসনের লক্ষ্যে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। ফলে অনেক গাছ কাটা পড়েছে।

তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে কলেজ প্রাঙ্গণে আমরা বৃক্ষরোপণের ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’


সর্বশেষ সংবাদ