বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে টেনে-হিঁচড়ে ছাদে নিয়ে ধর্ষণচেষ্টা ‘সাবেক’ প্রেমিকের
- ববি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৫০ PM , আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:৫০ PM

ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ এনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থী আব্দুল কাদির সোহানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে এক নারী শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত সোহান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।
আজ বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১২টায় ভুক্তভোগী ওই নারী শিক্ষার্থী নিজেই বাদী হয়ে বরিশাল বন্দর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। যা পরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা এজাহারভুক্ত হয়। মামলায় অভিযুক্ত আব্দুল কাদির সোহানকে গ্রেফতার করেছে বন্দর থানা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীকে প্রায়ই প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে আসতেন মামলায় অভিযুক্ত আব্দুল কাদির সোহান। ওই নারী শিক্ষার্থী গতকাল মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন-১ এর ৬ষ্ঠ তলায় সহপাঠীর সাথে পড়াশুনা করছিলেন। ওই সময়ে অর্থাৎ বেলা সাড়ে ৪টার দিকে সোহান তাকে ফোন করে সিঁড়িতে নিয়ে যায়। তারপর দুই হাত ধরে ভুক্তভোগী নারীকে টেনে-হিঁচড়ে ছাদে নিয়ে যায়। সোহান সিঁড়িতে নিয়ে যাওয়ার পথে তাকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করে। দুই হাত দ্বারা সোহানকে প্রতিরোধ করলে সে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। ভুক্তভোগীর বাম হাতে কব্জির উপরে বেঞ্চের কোণায় আঁচড় লেগে চামড়াও ছিলে যায়।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, দুজনের মধ্যে চার মাসের অধিক সময় ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মঙ্গলবার ঘটনার সময় মেয়েটির কান্নাকাটি ও চিৎকার শোনা যায়। চিৎকার শুনে অন্যান্য সহপাঠীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। পরে ভুক্তভোগী ও সহপাঠীদের নিয়ে নিজ বিভাগের চেয়ারম্যান ও ছাত্র উপদেষ্টা কাজী মো. জাহাঙ্গির কবিরের মাধ্যমে প্রক্টরিয়াল বডি বরাবর লিখিত অভিযোগ প্রদান করা হয়। একপর্যায়ে দুই বিভাগের শিক্ষকদের উপস্থিতিতে কয়েক দফায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুটি পক্ষের সাথে কথা বলেন। এতে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সর্বশেষ, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা শেষে ভুক্তভোগী এবং প্রক্টর, দুই বিভাগের শিক্ষক থানায় ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।
তবে গতকাল অভিযুক্ত আব্দুল কাদির সোহান ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা অস্বীকার করেন। তিনি জানান, ‘তার সাথে আমার দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ছিল। আমি তাকে খুঁজতে যাই।একপর্যায়ে লিফ্টের ৬ষ্ঠ তলায় গেলে তাকে পাই এবং তার সাথে বাকবিতণ্ডা হয়। কিন্তু ধর্ষণ চেষ্টার কোন ঘটনাই ঘটেনি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. এ টি এম রফিকুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি দুঃখজনক। আমরা বিষয়টি জানার সাথে সাথেই আলোচনা করি ও উপাচার্য মহোদয়কে জানাই। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীর যাতে অ্যাকাডেমিক শাস্তি হয় সে বিষয়টি নিয়ে কাজ করবে। পাশাপাশি আইনের সহায়তায় মেয়েটির পাশে থাকবেন বলে জানান তিনি।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান, আমরা অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাটি গ্রহণ করেছি। আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরবর্তীতে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।