আন্দোলন দমাতে কলেজ হয়েছিল, এবার আন্দোলন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিন্তা তিতুমীর শিক্ষার্থীদের

তিতুমীর কলেজের গেট
তিতুমীর কলেজের গেট  © সংগৃহীত

সরকারি তিতুমীর কলেজ। রাজধানী ঢাকার বনানী থানার মহাখালী এলাকায় অবস্থিত, দেশের এক ঐতিহাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই নানা সময়ে এই কলেজের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন আন্দোলনের সাথে যুক্ত থেকেছেন। স্বাধীনতার পরেও আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে এই কলেজের ছাত্ররা। সম্প্রতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সাত কলেজের অংশ হিসেবে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা কলেজটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছেন।

তিতুমীর কলেজের ইতিহাস এক দিকে যেমন আন্দোলনের সাথে যুক্ত, তেমনি প্রতিষ্ঠার পিছনেও ছিল একটি রাজনৈতিক ঘটনা। ১৯৬২ সালে পাকিস্তান সরকারের প্রবর্তিত হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের প্রতিবাদে গড়ে ওঠা আন্দোলনকে মোকাবেলা করতে পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খান জগন্নাথ কলেজের ডিগ্রি শাখাকে স্থানান্তর করে, যা পরবর্তীতে ১৯৬৮ সালে মহাখালীতে জিন্নাহ কলেজ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম চলাকালে, জিন্নাহ কলেজের ছাত্ররা প্রতিবাদস্বরূপ কলেজের সাইনবোর্ড নামিয়ে ফেলেন। স্বাধীনতার পর কলেজটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‌‌‘তিতুমীর কলেজ’।

বর্তমানে, কলেজটি শুধু উচ্চমাধ্যমিক নয়, বরং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর শিক্ষার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। যার আয়তন ১১ একর। এর আগে কলেজটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছিল।

যার নামে নামকরণ তিতুমীর কলেজ তার প্রকৃত নাম ছিল সৈয়দ মীর নিসার আলী (২৭ জানুয়ারি ১৭৮২ - ১৯ নভেম্বর ১৮৩১)। তিনি ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সক্রিয় আন্দোলনকারী ছিলেন এবং এই সংগ্রামে তিনি সম্মুখ সারির যোদ্ধা হিসেবে পরিচিত। তিতুমীর বাঙ্গালা আমিরাত নামক একটি স্বল্পস্থায়ী রাষ্ট্রের শাসক ছিল। তিনি ব্রিটিশ সাম্রাজ্য ও তাদের সহায়ক অত্যাচারী হিন্দু জমিদারদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন। তিতুমীরের বিখ্যাত বাঁশের কেল্লা, যা তাঁর প্রতিরোধের কেন্দ্রবিন্দু ছিল, আজও স্মরণীয়। অবশেষে, ব্রিটিশ সেনাদের সাথে সংঘর্ষের সময় বাঁশের কেল্লাতেই তাঁর মৃত্যু ঘটে।


সর্বশেষ সংবাদ