অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষানবিশ এসআইদের আন্দোলনে ছাত্রলীগ নেতা

মামুনুর রশীদ মামুন
মামুনুর রশীদ মামুন  © সংগৃহীত

রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষানবিশ উপ-পরিদর্শকেরা (এসআই) চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে সচিবালয়ের সামনে আমরণ অনশন করেছেন। এ অনশনে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ও নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা মামুনুর রশীদ মামুন নামের এক শিক্ষানবিশ এসআই নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলে জানা যায়।

গতকাল মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) মামুনের একটি ভিডিও বক্তব্য সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়। এরপর থেকে বাদ পড়ার পর এসআইদের আন্দোলনে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার নেতৃত্ব নিয়ে ছাত্র-জনতার মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

জানা গেছে, মামুনুর রশীদ মামুন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের (৬তম ব্যাচ) শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক এবং পরবর্তী কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মামুন। তৃতীয় কমিটিতে সভাপতির পদ প্রত্যাশা করলেও তা না পেয়ে লবিং করে কেন্দ্রীয় কমিটিতে সদস্য পদ পান তিনি।

আরও জানা যায়, মামুনের বাড়ি দিনাজপুরে হওয়ায় সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ ছিলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বীরগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান আবু হুসাইন বিপুর সঙ্গেও তার সখ্যতা ছিল। ক্ষমতার প্রদর্শন করতে সামাজিক মাধ্যমে নিয়মিত খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে ছবি পোস্ট করতেন তিনি।

অভিযোগ রয়েছে, মামুন অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় পুলিশের এসআই পদে নিয়োগ পান। এ নিয়োগে খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সুপারিশ ছিল বলে জানা যায়।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মো ফেরদৌস রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, মামুনদের মতো কাউকে  যদি নেওয়া হয় পুলিশের প্রতি জনগণের বিশ্বস্ততা আরও হারিয়ে যাবে। এখন ছাত্রলীগ তো নিষিদ্ধ সংগঠন। পুলিশে গেলে তারা কিভাবে মানুষের সেবা দিবে। বিগত বছরে পুলিশের বেশিরভাগ নিয়োগেই এভাবেই হয়েছে। তাই জনগণের সঙ্গে তাদের একটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। সেজন্য অধিকাংশ পুলিশ এখনো ভয়ে আছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক এস এম আশিকুর রহমান বলেছেন, পুলিশ প্রশাসনে যে অধিকাংশ নিয়োগ ছাত্রলীগ কোটায় হয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাদের মধ্য থেকে একদল ছিল, যারা পুলিশের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করছিল এবং তাদের মধ্যে কয়েকজনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এটি অত্যন্ত যথাযথ এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বলে আমরা মনে করি।

রংপুর মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র নাহিদ হাসান খন্দকার বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা পালানোর পরও আওয়ামী লীগের দোসরদের উত্থান হয়েছে। তাদের শৃঙ্খলা আইন ভঙ্গ করার কারণসহ ও সুনির্দিষ্ট যৌক্তিক কারণে অনেককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। যৌক্তিক আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে কিছু অযৌক্তিক মানুষ ষড়যন্ত্র করছে। তাদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। সঠিক তদন্তের মাধ্যমে যদি নিষিদ্ধ সংগঠনের তথ্য পাওয়া যায় তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হক।’

মামুনুর রশীদ মামুনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বিষয়টি নিয়ে তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence