সাজন সাহা ফেঁসে গেছেন, তার বিরুদ্ধে আরও ছাত্রীরা অভিযোগ দিচ্ছেন: ছোঁয়া

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন ছোঁয়া
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন ছোঁয়া  © সংগৃহীত

‘সাজন সাহা স্যার পুরোপুরি ফেঁসে গেছেন। তিনি এখন নিজেকে বাঁচানোর জন্য বিভিন্ন চেষ্টা করছেন। পুরো বিশ্ববিদ্যালয় তার বিরুদ্ধে। আমি বিষয়টি সামনে আনার পর এখন আরও অনেক ছাত্রী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিচ্ছেন। যারা অভিযোগ দিচ্ছেন তারা তথ্য-প্রমাণ নিয়েই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিচ্ছেন। তার বেঁচে যাওয়ার কোনো পথ নেই।’

মঙ্গলবার (০৫ মার্চ) জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্রী সৈয়দা সানজানা আহসান ছোঁয়া। এদিন তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বরাবর লিখিত অভিযোগও জমা দিয়েছেন।

এর আগে তিনি গত ৪ মার্চ একই বিভাগের শিক্ষক সাজন সাহার বিরুদ্ধে ফেসবুকে প্রথম হেনস্তার বিষয়টি সামনে আনেন। ছোঁয়া ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মধ্যরাতে চা পানের নিমন্ত্রণ, অংক বুঝাতে ব্যক্তিগত চেম্বারে ডাকা ও প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় নম্বর কমিয়ে দেওয়া এবং থিসিস রিপোর্ট তৈরিতে হয়রানি করার অভিযোগ করেন।

উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগে ছোঁয়া বলেন, মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহা আমাকে প্রায়ই মেসেজ দিতেন। ২০১৯ সালে যখন আমি ভার্সিটিতে প্রথম প্রবেশ করি তখন থেকে দেখছি। একপর্যায়ে তিনি আমার সাথে বিভিন্ন ধরনের অশিক্ষকসুলভ আচরণ করা শুরু করেন। আমার সাথে বিভাগের বাইরে সম্পর্ক তৈরির চেষ্টা করেন। যেটা আমি কখনো প্রশ্রয় দিইনি।

‘‘এই কারণে উনি আমাকে বিভিন্নভাবে মানসিক এবং শারীরিক হয়রানির করেছেন। উনার এই আচরণ মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্র স্যারকে আমি যখন জানাই, উনি কোন পদক্ষেপ না নিয়ে বিষয়টা আমাকে গোপন রাখার অনুরোধ করেন। উনিও পরবর্তীতে আমাকে মানসিকভাবে আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেন’’।

আরও পড়ুন: সাজন সাহার কাণ্ডে ‘বিব্রত’ নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য সৌমিত্র শেখর

বিভাগের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে ছোঁয়ার। তিনি অভিযোগে লিখেন, শুভ্র স্যার অন্য শিক্ষকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়ার জন্য আমাকে রেজাল্টের লোভ দেখিয়েছেন। আমি যখন বিষয়টা পাবলিশড করি তখন উনি আমাকে ফোন দিয়ে হুমকি দেন এবং সব জায়গায় ভুল তথ্য দিয়ে নিজেদের দোষ ঢাকার চেষ্টা চালিয়ে যান।

তিনি লিখেন, রেজুয়ান আহমেদ শুভ্র স্যার ও সাজন সাহা দুজনই এক হয়ে আমার অসহায় অবস্থার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছেন। শিক্ষকদের দেখে আমাদের সততা শেখার কথা ছিলো। সেখানে তারাই আমাকে অসৎ কাজের জন্য রীতিমতো বাধ্য করার চেষ্টা কীভাবে করতে পারেন?

এ ঘটনার বিচার দাবি চেয়ে তিনি অভিযোগে লিখেন, রেজুয়ান আহমেদ শুভ্র ও সাজন সাহার মতো শিক্ষকদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনতিবিলম্বে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে। তাদের বহিষ্কারের মাধ্যমে বিদ্রোহী কবির নামে বিশ্ববিদ্যালয়কে কলুষমুক্ত করতে হবে।

পরে তিনি সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, সাজন সাহা স্যার পুরো ফেঁসে গেছেন। তিনি এখন নিজেকে বাঁচানোর জন্য বিভিন্ন চেষ্টা করছেন। পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এখন তার বিরুদ্ধে। আমি বিষয়টি সামনে আনার পর আরও অনেক ছাত্রী তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিচ্ছেন। সব ছাত্রীরা তথ্য-প্রমাণ নিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিচ্ছেন। তার বেঁচে যাওয়ার কোনো পথ নেই।

তিনি বলেন, আমি তাদের সর্বোচ্চ বিচার চাই। আমি আমার বিভাগে এ ধরনের শিক্ষকদের দেখতে চাই না। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে। আমি বিষয়টি নিয়ে প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জী স্যারের সাথে কথা বলেছি, তিনি আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন— যত দ্রুত সম্ভব তিনি আমার অভিযোগ নিয়ে কাজ করবেন।

এ ঘটনায় রীতিমতো বিব্রত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। তিনি বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো শিক্ষকের কাছে এমন আচরণ প্রত্যাশা করে না। কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধ এমন অভিযোগ সত্যি অনাকাঙ্ক্ষিত। আমাদের এমন বিষয়ের মুখোমুখি হতে হবে, এটা প্রত্যাশার মধ্যে ছিলো না।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence