বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে ছাত্রলীগ সভাপতির রাজকীয় বসবাস

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৩০৫ নম্বর কক্ষ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৩০৫ নম্বর কক্ষ  © টিডিসি ফটো

পুরো রুমে পাতানো লাল কার্পেট, বসানো হয়েছে দামি সোফা। ঝুলছে দামি পর্দাও। শুধু তাই নয়, রুমের সামনে ঝুলানো রয়েছে নেম প্লেটও। রাজকীয় কক্ষটি কোনো কর্পোরেট অফিস কিংবা ব্যক্তিগত বাসা নয়।এটি রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) আবাসিক হলের একটি কক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের ৩০৫ নম্বর কক্ষ। ৮ জনের থাকার ওই কক্ষে রাজকীয়ভাবে একাই বসবাস করেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া। 

জানা যায়, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গী তীব্র আবাসন সংকট। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য আবাসিক হল রয়েছে মাত্র তিনটি। ছেলেদের দুটি ও মেয়েদের একটি হল মিলিয়ে সিট সংখ্যা মাত্র ৮৮৮টি। এমন আবাসন সংকটের মধ্যেই একাই থাকছেন ছাত্রলীগের এই নেতা।

হলের রুমের সামনে ঝুলানো নেম প্লেট

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল সূত্রে জানা যায়, কোন শিক্ষার্থী নিজ উদ্যোগে কক্ষে ডেকোরেশন ও পড়াশোনা শেষ হলে কক্ষে আর অবস্থান করতে পারেন না। যতদিন পড়াশোনা আছে ততদিন থাকতে পারে। কিন্তু জানা যায়, বর্তমান সভাপতি কমিটি গঠনের পর থেকেই বিলাশ বহুলভাবে থাকছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, যেদিন হল খুলে সেদিন আমি উঠতে পারি নাই বাড়িতে সমস্যা থাকার কারণে। পরে আমার রুমমেট বলে তোমার বেডে আরেকজনকে তুলে দিয়েছে। তখন আমি হলে এসে ওই ছেলেকে জিজ্ঞাসা করলাম আমার লিগ্যাল সিটে তুমি কে? পরে সে বলে পমেল বড়ুয়া ভাইয়ের ছেলেরা তুলে দিয়েছে। আমি সিট চাইলে আমার কাছে টাকা দাবি করে পমেল বড়ুয়া গ্রুপের সদস্যরা। টাকা না দিতে চাইলে তারা আমাকে হল থেকে বের করে দেয়ার হুমকিও দেয়।

বেরোবি ছাত্রলীগের সভাপতি পমেল বড়ুয়া বলেন, নৈতিকভাবে বলতে গেলে পড়াশোনা শেষ হওয়ার পরেও হলে থাকা ঠিক না। রুম ডেকোরেশনের বিষয়ে বলেন, আমরা সাজন মিলে রুমটা ডেকোরেশন করেছি। রাজনীতি করি বিভিন্ন সময় নেতাকর্মীরা রুমে আসেন তাই একটু রুমটা পরিপাটি করে রেখেছি।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আবাসিক হল প্রভোস্ট ড. বিজন মোহন চাকী বলেন, আমাদের আবাসন সংকট রয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী হলে থাকতে পারেনা তারা বাইরে মেসে থাকেন। পড়াশোনা শেষ হলেই হল ছাড়তে হবে। এমন নিজের ইচ্ছেমতো রুম ডেকোরেশনের বিষয় করা ঠিক না। এই সংকট কাটিয়ে তোলার জন্য কাজ চলছে আশা করি দ্রুতই সমাধান হয়ে যাবে।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ৩১ জুলাই লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী পোমেল বড়ুয়াকে সভাপতি ও রসায়ন বিভাগের মাহফুজুর রহমান শামীমকে সাধারণ সম্পাদক করে এক বছরের জন্য বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।


সর্বশেষ সংবাদ