দিনে-দুপুরে ইবিতে ব্যাংক কর্মকর্তাকে ছুরিকাঘাত
- ইবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১৪ আগস্ট ২০২৩, ০৫:৪৪ PM , আপডেট: ১৪ আগস্ট ২০২৩, ০৮:৪৬ PM
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) অগ্রণী ব্যাংক শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার মঈনুল হোসেন মহিনের গলায় ছুরিকাঘাত করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে শামীমা নামের এক নারীর বিরুদ্ধে। আহত মঈনুলকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ছাড়া অভিযুক্ত শামীমাকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৪ আগস্ট) বেলা সাড়ে ৪টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে বিপরীত পাশের গেটে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা সেলিম হোসেন।
অভিযুক্ত শামীমা (৩৬) কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার মধ্য বাজার এলাকার আবু বক্করের মেয়ে। ভুক্তাভোগী মঈনুলের বাড়ি কুষ্টিয়া বড় আইলছাড়ার দক্ষিণ পাড়ায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকেল পৌনে চারটা থেকে ক্যাম্পাসের প্রশাসন ভবন সংলগ্ন আমবাগান এলাকায় ওই ব্যাংক কর্মকর্তা অভিযুক্ত নারীর সাথে দীর্ঘক্ষণ কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে তাদের উভয়ের মাঝে বাকবিতণ্ডা হয়।
পরে ওই নারী ব্যাংক কর্মকর্তার গলায় ছুরিকাঘাত করে পালানোর চেষ্টা করেন। পরে প্রধান ফটকের সামনে থাকা লোকজন কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দেন। নিরাপত্তা কর্মকর্তারা তাকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন।
তবে এ সময় ঘটনাস্থলে প্রক্টরিয়াল বডির কেউ উপস্থিত ছিলেন না। এদিকে ওই কর্মকর্তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
ওই কর্মকর্তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া নার্স মমতাজ বলেন, তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় মেডিকেলে আসেন। আমরা অবস্থা বেগতিক দেখে তাৎক্ষণিক গলায় ব্যান্ডেজ করে কুষ্টিয়া পাঠিয়ে দিয়েছি। তবে তার শ্বাসনালি কাটেনি। ব্লেড দিয়ে গলা কাটা হয়েছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি।
তবে ছুরিকাঘাতের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন ওই নারী। শামীমা দাবি ওই ব্যাংক কর্মকর্তা তাকে হত্যাচেষ্টা করলে তিনি ঠেকাতে যান। তার হাতেও কাটা দাগ ও জামা কাপড়ে রক্তের দাগ রয়েছে। তবে তিনি কাপড়ে নিজেই রক্তের দাগ লাগিয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
ওই মহিলার দাবি, ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল ভুক্তভোগী ব্যাংক কর্মকর্তাকে ভালোবেসে তিনি বিয়ে করেন। কিন্তু ওই কর্মকর্তা তাকে স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান। দীর্ঘদিন যাবত তাকে অবহেলা করে আসছিলেন। এ দ্বন্দ্বের জের ধরে আজ দীর্ঘসময় তর্কবিতর্ক হয়। একপর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আমাকে হত্যাচেষ্টা করতে গেলে উল্টো তার গলায় লেগে কেটে যায়।
নিরাপত্তা কর্মকর্তা সেলিম হোসেন বলেন, মইনুল গেট দিয়ে বের হতেই তারা গলায় জবাই করার মতো ছুরি টেনেছে। মারাত্মক আহত হয়েছেন তিনি। আল্লাহ রহম করলে হয়ত বাঁচতে পারেন। ওই মহিলা ক্যাম্পাসের পাশ্ববর্তী বিত্তিপাড়ায় বাড়ি বলে জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে হয়ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মামলা করতে পারেন।
ইবি থানার ওসি আননূর যায়েদ বিপ্লব বলেন, এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ওই মহিলাকে আটকও করা হয়েছে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত জানা যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ আগস্টের প্রোগ্রাম নিয়ে একটু বেশি ব্যস্ত ছিলাম। এছাড়াও বিভিন্ন মিটিং ছিল। এজন্য এখানে আসতে পারিনি। এক অধ্যাপক তাকে ডাকার কারণে তিনি ঘটনাস্থলে থাকতে পারছেন না বলে জানান।