ইউজিসির অভিন্ন আর্থিক নীতিমালা বিশ্ববিদ্যালয় আইনের লঙ্ঘন
- বেরোবি প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ২০ জুন ২০২৩, ০৫:০২ PM , আপডেট: ২০ জুন ২০২৩, ০৫:১৭ PM
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) প্রণীত অভিন্ন আর্থিক নীতিমালা প্রত্যাখ্যান করেছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি'র) শিক্ষকরা। পাশাপাশি, 'বিশ্ববিদ্যালয় আইনের লঙ্ঘন' উল্লেখ করে আইন অনুসরণ করে পারিতোষিক নীতিমালা অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছে শিক্ষক সমিতি। সোমবার (২০ জুন) সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল মিডিয়া চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. শরিফুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদের নেতৃত্বে এতে প্রায় ৭০জন শিক্ষক অংশগ্রহণ করেন। পরিসংখ্যান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমানের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. শরিফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল আজিম, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি কমলেশ চন্দ্র রায়, সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক আজিজুল হক, রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হারুনুর রশীদ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুল হক ও একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাবিউর রহমান প্রধান প্রমুখ।
এসময় বেরোবি শিক্ষকরা বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর ২০০৯ একটি স্বতন্ত্র আইন। ইউজিসির অভিন্ন আর্থিক নীতিমালা বিশ্ববিদ্যালয় আইনের লঙ্ঘন। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক প্রণীত আর্থিক নীতিমালা প্রত্যাখ্যান করছে এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর আইন ২০০৯ অনুসরণে পাসকৃত পারিতোষিক নীতিমালা অব্যাহত রাখার দাবি জানাচ্ছে।
তারা বলছেন, বর্তমান উপাচার্য যখন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, যখনই বিশ্ববিদ্যালয়টি উন্নয়নের পথে হাঁটছে, তখন একটি চক্র এটি সহ্য করতে পারছে না। বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা হবে এতে শিক্ষকদের বিল বেড়ে যাবে এ বিষয়টিকে ভুল ব্যাখ্যা করে ইউজিসি যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে এর মধ্য দিয়ে আবারো বিশ্ববিদ্যালয়টিকে কলিযুগে ফিরিয়ে নেয়ার চক্রান্ত চলছে।
বক্তারা আরো বলেন, বর্তমান উপাচার্য স্যারের নেতৃত্ব ও শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ থেকে ৩ বছরের সেশনজট নিরসন সম্ভবপর হয়েছে। তারই ফলশ্রুতিতে এক বছরে যে পরিমাণ পরীক্ষা হওয়ার কথা, বিগত বছরে সেশনজট নিরসনের জন্য তার চাইতে বেশি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাই যৌক্তিক কারণেই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ অন্যান্য বছরের থেকে বেশি পরিমাণ পারিতোষিক প্রাপ্য হয়েছেন।
স্বায়ত্তশাসনের পরিপন্থী দাবি করে শিক্ষক নেতারা বলেন, ইউজিসি যে অভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে তা বৈচিত্র্যপূর্ণ উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এক ধরনের ভুল সাধারণীকরণ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনের পরিপন্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ে পার্লামেন্টসম একটা সিন্ডিকেট রয়েছে, সেখানে সরকারের অংশীজনও সংযুক্ত থাকেন, তারাই বিশ্ববিদ্যালয়ের যাবতীয় নীতিমালা ঠিক করবে। পৃথিবীতে এমন কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই যেখানে অভিন্ন আর্থিক নীতিমালা প্রচলিত। এমন অদূরদর্শী হস্তক্ষেপ উচ্চ শিক্ষাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবে।