খাবার দিতে দেরি করায় হোটেলে ভাঙচুর, মালিককে মারধর ইবি ছাত্রলীগের

ভাঙচুর ও মালিককে মারধরের পর আজও বন্ধ ছিল হোটেলটি
ভাঙচুর ও মালিককে মারধরের পর আজও বন্ধ ছিল হোটেলটি  © টিডিসি ফটো

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) প্রধান ফটকের সামনে অবস্থিত পিন্টু হোটেল নামে একটি খাবার দোকানে খাবার দিতে দেরি করায় মালিক পিন্টুকে মারধর ও হোটেলের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সিনিয়র নেতাকর্মীরা। এছাড়াও, মারধরের পর তারা হোটেলটি তালা দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার (১৪ মার্চ) বিকেলের দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরের দিন আজ বুধবার (১৫ মার্চ) ফের দোকান বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় সেখানে শিক্ষার্থী ও দোকানদারদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা ও উত্তপ্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর পাঁচ দফা দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি জমা দিয়েছে দোকান মালিকদের সংগঠন ‘দোকানদার মালিক সমিতি’।

স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, রাজনীতির দোহাই দিয়ে ইদানীং ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের দোকানগুলোসহ শেখপাড়া বাজার, মধুপুর, লক্ষীপুর ও হরিনারায়ণপুর বাজারের দোকানদারদের সাথে খারাপ আচরণ করে চলেছে। এতে এলাকার জনমনে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়টি কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক সংলগ্ন হওয়ায় সামান্য বিষয় নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষিত সন্তানদের সাথে অশিক্ষিত শ্রমিকদেরও প্রতিনিয়ত ঝগড়া-ঝাঁটি বাঁধছে। আমরা শত লাঞ্ছনা-গঞ্জনা সহ্য করে ছাত্র-ছাত্রী তথা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারবর্গের সেবায় ব্রত। তবুও রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙিয়ে কিছু ছাত্র (বিশাল, তুষার, পিয়াস ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গ) এলাকার দোকানদারদের সাথে অশালীন আচরণ করেই চলেছে।

স্মারকলিপিতে জানানো হয়, এরই ধারাবাহিকতায় গত সোমবার বেলা তিনটার দিকে পিন্টুর হোটেলে ভাত ফুরিয়ে যাওয়ার অপরাধে ইবি থানার এসআইসহ শত লোকের সামনে তুষার (ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, শিক্ষাবর্ষ: ২০১৩-১৪) ও তার দলবল পিন্টু হোটেলের মালিক পিন্টুকে বেধড়ক মারপিট ও হোটেলের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে হোটেল তালাবদ্ধ করে। আমরা দোকানদার মালিক সমিতি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে সুষ্ঠু তদন্ত-পূর্বক ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট বিচার দাবি করছি। 

এছাড়া ঘটনার তদন্ত-পূর্বক সুষ্ঠু বিচার করতে হবে জানিয়ে স্মারকলিপিতে পাঁচ দফা দাবিও জানিয়েছে দোকানদার মালিক সমিতি। তারা বলছে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইটের সামনের ও ভিতরের দোকান, শেখপাড়া বাজার, মধুপুর ও হরিনারায়ণপুর বাজারের দোকানদারদের নিকট থেকে দ্রব্যাদি ক্রয় করে তাদের ন্যায্যমূল্য সাথে সাথে পরিশোধ করতে হবে। এলাকার দোকানদারদের সাথে বিনা কারণে কোনো ছাত্র-ছাত্রী খারাপ আচরণ করলে তার দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিতে হবে। 

দোকানদার মালিক সমিতি আরও দাবি জানিয়েছে, পরিবহনের সাথে ছাত্রদের ঝামেলা হলে তার আন্দোলন করার নামে মিল ও খড়ির আড়ত থেকে কোনো প্রকার খড়ি ও ডালপালা আনতে পারবে না। প্রতিবাদের সময় রাস্তায় আগুন দেওয়ার নামে দোকানের সাইনবোর্ড তুলে এনে আগুন দিতে পারবে না। এছাড়াও রাজনৈতিক দলের দোহাই দিয়ে কেউ কোনো প্রকার অশান্তি সৃষ্টি করলে তার দায়-দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বহন করতে হবে।

এ নিয়ে হোটেল মালিক পিন্টু বলেন, খাবার দিতে দেরি করায় তারা দোকানের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেছে। এছাড়া চামচ দিয়ে আমাকে মারধর করেছে। দোকান খুললে আবার মারার হুমকিও দিয়েছে তারা।

হোটেল ভাঙচুর ও মালিককে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে অভিযুক্ত তুষার বলেন, আগে খাবার চাওয়ার পরও আমাদের পরে যারা আসছে তাদের খাবার দেয়। এ নিয়ে তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। তবে আমি হোটেল ভাঙচুর ও মারধর করিনি।

এ বিষয়ে ইবি শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমনটি হয়েছে। আমরা এ বিষয়ে হোটেল মালিকের সাথে কথা বলেছি।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence