বছর পেরোলেও খোঁজ নেই মাউশির উপবৃত্তির

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর  © ফাইল ছবি

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়, প্রতিবন্ধী ও উপজাতীয় উপববৃত্তির জন্য আবেদনকৃত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার জমা নেয়ার পর প্রায় এক বছর কেটে গেলেও এখনও কোন কোন সাড়া পায়নি শিক্ষার্থীরা। 

এইদিকে, গত ৩১ জানুয়ারি মাউশি থেকে এবছরের সংখ্যালঘু, প্রতিবন্ধী ও উপজাতীয়দের উপবৃত্তি প্রদানের জন্য জারিকৃত বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে আবেদন জমা দেয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর। এতে করে গতবারের বৃত্তির জন্য আবেদন করা শিক্ষার্থীদের মনে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। কারণ তারা জানেই না যে, কে বৃত্তির জন্য মনোনীত হয়েছে বা কোন প্রক্রিয়ায় কবে নাগাদ উপবৃত্তির জন্য নির্ধারিত টাকা পাবে কিংবা আদৌ টাকা পাবে কিনা। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি শাখার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, তারা মাউশির নির্দেশনা মোতাবেক আবেদনকৃত সকল শিক্ষার্থীদের তথ্য ও ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার প্রেরণ করেছেন। বাকি সবকিছু মাউশির এখতিয়ার। কোন শিক্ষার্থী টাকা পেয়েছে কিনা এটিও বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টরা অবগত নন।  

আরও পড়ুন: হাইকোর্টে রিট করবে এসএসসি-১৮ ব্যাচের শিক্ষার্থীরা

জানা যায়, গত বছরের ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১-২২ অর্থ বছরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় তফসিলী (হিন্দু/বৌদ্ধ/খ্রিস্টান /সশস্ত্র বাহিনী /দৃষ্টি প্রতিবন্ধী /উপজাতীয় (ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী) উপবৃত্তি প্রদানের লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের নিকট থেকে আবেদন আহবান করে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। ওই বিজ্ঞপ্তির প্রেক্ষিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তর থেকে গত বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি নির্ধারিত ফরমে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীদের নিকট বৃত্তির আবেদন আহবান করে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চের মধ্যে শিক্ষার্থীদেরকে নির্ধারিত ফরমে সঠিক তথ্য প্রদানপূর্বক রেজিস্ট্রার দপ্তরে আবেদনপত্র জমা দেয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ওই বিজ্ঞপ্তির পর ৩০-৩৫টি আবেদন জমা পড়ে। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি শাখা থেকে সার্বিক যাচাই বাছাই শেষে আবেদনগুলো মাউশিতে পাঠানো হয়। এরপর মাউশি থেকে আবেদনকৃত সকল শিক্ষার্থীদের ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার চাওয়া হয়। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি শাখা থেকে শিক্ষার্থীদের ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার সংগ্রহ করা হয়। এসময় যাদের ব্যাংক একাউন্ট ছিলনা তাদেরকে দ্রুত একাউন্ট খোলারও নির্দেশনা দেয়া হয়। পরবর্তীতে সবার একাউন্ট নাম্বার তালিকা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি শাখা থেকে মাউশিতে পাঠানো হয়। 

তবে শিক্ষার্থীদের দাবি, ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার পাঠানোর পর শিক্ষার্থীদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা মাউশি থেকে আর কোন যোগাযোগ করা হয়নি এ বিষয়ে। বছর পার হয়ে গেলেও একাউন্টে টাকা আসেনি। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপবৃত্তির জন্য আবেদন করা এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি আবেদন জমা দেয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফোন দিয়ে বলেছিল আমি মনোনীত হয়েছি বৃত্তির জন্য। তাই ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার ও কিছু কাগজপত্র জমা দিতে হবে বৃত্তি শাখায়। তাহলে সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। আমি ব্যাংক একাউন্ট জমা দেয়ার পর আর কোন আপডেট পাইনি। এর ৬মাস পর বৃত্তি শাখায় খোঁজ নিতে গেলে জানানো হয় আর কোন নির্দেশনা কিংবা নোটিশ আসেনি। আসলে জানানো হবে। সর্বশেষ গত নভেম্বর মাসে এ বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়েছি। তখনও কোন আপডেট জানাতে পারেনি। অথচ এই বছর আবারও বৃত্তির বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। 

অপর এক শিক্ষার্থী বলেন,গতবছর উপবৃত্তির জন্য আবেদন করার এক মাসের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফোন করে জানানো হয় আমি সিলেক্টেড। দ্রুত যেন ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার জমা দিয়ে আসি। একাউন্ট জমা দিয়ে আসার পর এক বছর চলে গেল। এবছর বৃত্তির নতুন আরেকটা বিজ্ঞপ্তি দিল মাউশি থেকে। তবে আমার টাকা আসেনি একাউন্টে। আমি যদি সিলেক্টেড হই তাহলে কেন টাকা আসবেনা? 

আরও পড়ুন: চাঁদা না পেয়ে টিকিট কাউন্টারে তালা দিলেন ছাত্রলীগ নেতা

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বৃত্তি শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোসা: আশরা-উন-আকতার-তুহিন বলেন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে আমাদের যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল আমরা সেই মোতাবেক সবকিছু প্রেরণ করেছি। প্রথমে আবেদনকারী শিক্ষার্থীদের লিস্ট পাঠিয়েছি৷ এরপর যারা আবেদন করেছে সবার ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার পাঠাতে বলা হয় আমরা সবার একাউন্ট নাম্বার সংগ্রহ করে পাঠিয়েছি।  

তিনি বলেন,মাউশি থেকে কাউকেই নির্দিষ্ট করে মনোনীত করেনি বৃত্তির জন্য। বিশ্ববিদ্যালয় এক্ষেত্রে মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছে। টাকা সরাসরি শিক্ষার্থীদের একাউন্টে চলে যাওয়ার কথা। কেউ টাকা পেয়েছে কিনা সেটিও নিশ্চিত বলা যাচ্ছেনা। 

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একিউএইউ,পরিকল্পনা ও উন্নয়ন উইং এর উপ-পরিচালক মো: নুরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, কাগজপত্র দেখে ও খোঁজ নিয়ে বিষয়টি জানাতে পারব। 

প্রসঙ্গত, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে প্রদত্ত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় তফসিলী (হিন্দু/বৌদ্ধ/খ্রিস্টান /সশস্ত্র বাহিনী /দৃষ্টি প্রতিবন্ধী /উপজাতীয় (ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী) উপবৃত্তির মেয়াদ ১ বছর। বৃত্তির ব্যয় চলতি অর্থবছরের রাজস্ব খাতের বৃত্তি খাতে বরদ্দকৃত অর্থ থেকে নির্বাহ করা হয়।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence