পরীক্ষা দিতে এসে তিতুমীর কলেজে হেনস্তার শিকার বাঙলা কলেজছাত্রী

লোগো
লোগো  © টিডিসি ফটো

পরীক্ষা দিতে এসে রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজে হেনস্তার শিকার হয়েছেন বলে অভিযেগা করেছেন বাঙলা কলেজের এক ছাত্রী। সাত কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশ নিতে তিতুমীর কলেজের এসে শাখা ছাত্রলীগের হাতে তিনি হেনস্তার শিকার হয়েছেন। হেনস্তার পাশাপাশি শাখা ছাত্রলীগের নেতারা তার কাছ থেকে টাকা ছিনতাই করেছেন বলেও ভুক্তভোগী অভিযোগ করেছেন।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর নাম লাইসা। তিনি সরকারি বাঙলা কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্রী। অন্যদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম ইমাম হাসান শুভ। তিনি সরকারি তিতুমীর কলেজ ছাত্রলীগের উপ মানব উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক এবং বনানী থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি। গত বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। ছাত্রীকে হয়রানি এবং টাকা হাতিয়ে নেয়ার একটি ভিডিও ইতোমধ্যেই সামাজিকমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

ভুক্তভোগী ছাত্রী লাইসা বলেন, গত বৃহস্পতিবার সরকারি তিতুমীর কলেজে ২য় বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষা শেষে কিছুক্ষণ কলেজ মাঠে অবস্থান করছিলাম। এ সময় তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী ইমাম হাসান শুভ নামের এক ছাত্রলীগ নেতা মাঠের মধ্যে অকারণেই আমাদের উত্যক্ত করে। সে বাজে ভাষায় টিজ করতে থাকে, একাধিকবার প্রেমের প্রস্তাবও দেয়। হাত ও মুখ দিয়ে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করতে থাকে। 

ওই ছাত্রী আরও অভিযোগ করেন, এসময় শুভসহ কয়েকজন আমাদের পিছু নিয়ে উত্যক্ত করতে থাকে। আমি একপর্যায়ে ছোট ইটের টুকরো তাদের বাইকের দিকে ছুঁড়ে মারি। এসময় সেখানে আমার বিভাগের এক বন্ধু আসলে শুভ ও তার সাথের ছেলেরা আমার বন্ধুকে মারধর করে।

আরও পড়ুন: জীবন যুদ্ধে হার না মানা সৈনিক তিতুমীর কলেজের ইসমাইল

‘‘বিনা কারণে কেন মারছেন জিজ্ঞেসে করলে তারা বলে, ‘আপনি অপরাধ করেছেন তাই আমরা আপনার বন্ধুকে মারছি।’ তাদের বাইকের কোন ক্ষতি না হলেও তারা আমার কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করে। দিতে রাজি না হওয়ায় এক পর্যায়ে তারা বেশ কয়েকজন মিলেই আমাদের হেনস্তা করে। সবশেষ তিন হাজার টাকা দিয়ে বাসায় ফিরতে হয়েছে।’’ এই ঘটনায় ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী থানায় অভিযোগ দায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানান।

ঘটনার বিষয়ে জানতে ইমাম হোসেন শুভর সাথে যোগোযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমার জন্মদিন ছিলো বন্ধুদের সাথে বাজি ধরে ওই মেয়েকে প্রপোজ করেছি। মাঠের মধ্যে জাস্ট এক মিনিট কথা বলেছি। আমি শুধু আই লাভ ইউ বলছি। আর ওই মেয়েটা আমার বাইকে ইট মেরেছে। আমি বলছি শোরুমে যেয়ে বাইকের যে ক্ষতি হয়েছে সেটা ঠিক করায়ে দাও। পরে পোলাপানে (বন্ধুরা) ধরে গাড়ি ভাঙার জরিমানা নিয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সরকারি তিুতমীর কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুয়েল মোড়ল বলেন, সে (ইমাম হাসান শুভ) আমাদের কলেজের ছাত্রলীগের রাজনীতি করে না। সে যে পদ দাবি করে সেটাও আমরা নিশ্চিত নই। আর শুনেছি বিষয়টার সমাধানও হয়ে গেছে।

অন্যদিকে সত্যতা প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন। তিনি বলেন, বিষয়টি শুনেছি। ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

বাইরে থেকে পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীর সঙ্গে এমন আচরণ করা অন্যায় হয়েছে উল্লেখ করে সরকারি তিতুমীর কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মো. মহিউদ্দিন বলেন, ঘটনাটি আমিও শুনেছি। আমি বৃহস্পতিবার ছুটিতে ছিলাম। রোববার ক্যাম্পাসে গিয়ে বিষয়টি দেখব। ছাত্রলীগের সভাপতির সাথেও এই বিষয়ে কথা হয়েছে। ছেলেটা যা করছে অবশ্যই অন্যায় করছে। বিস্তারিত পর্যালোচনা করে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে কলেজ থেকে প্রাশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।


সর্বশেষ সংবাদ