চবিতে ২৭ হাজার শিক্ষার্থী, নেই কোনো মনোরোগবিদ

কাউন্সেলিং ইউনিট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
কাউন্সেলিং ইউনিট চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়  © সংগৃহীত

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন ২৭ হাজার শিক্ষার্থী। কিন্তু তাদের জন্য নেই কোন মনোরোগবিদ। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের অভিযোগ থেকে উঠে আসে সেসব তথ্য। চবির সমাজবিজ্ঞান অনুষদভুক্ত একটি বিভাগের শিক্ষার্থী তিনি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই ছাত্রের কাছ থেকে জানা যায়, করোনা মহামারির সময় থেকেই তিনি নানা টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছেন। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে স্বজন হারানোর বেদনা ও পারিবারিক সমস্যা। সামগ্রিকভাবে এসবের প্রভাব পড়েছে তার পড়াশোনাতে। হতাশা ও মানসিক অস্থিরতায় টিকতে না পেরে গিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে। কিন্তু সেখানে কোনো মনোরোগবিদ না থাকায় সেবা না পেয়েই ফিরে আসতে হয়েছে।

তিনি আরও জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে এই সমস্যার সমাধান না পেয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর পেশাদার একজন সাইকোলজিস্টের (মনোরোগ বিশেষজ্ঞ) শরণাপন্ন হন। ওই বিশেষজ্ঞ তাকে নিয়মিত কয়েকটি কাউন্সেলিং সেশন নেয়ার পরামর্শ দেন। তবে ফি বেশি হওয়ায় নিয়মিত কাউন্সেলিং চালিয়ে যেতে পারেননি। তিনি ছাড়াও  চবির চবির বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী এমন সমস্যার কথা জানিয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ ইডেনে ছাত্রলীগ কাণ্ডে কলেজ প্রশাসনের তদন্ত কমিটি গঠন

প্রায় সাড়ে ২৭ হাজার শিক্ষার্থীর এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কাউন্সেলিংয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই। কাউন্সেলিং সেবা একবার চালু করা হলেও তা এখন বন্ধ। অনুষদগুলোতেও কোনো ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী পরামর্শ ও নির্দেশনা কেন্দ্র থাকলেও সেখানে এ বিষয়ে নেই পেশাদার কেউ। ফলে নানা মানসিক টানাপোড়েন ও উদ্বেগ সঙ্গী করেই দিন পার করতে হচ্ছে অনেক শিক্ষার্থীকে।

বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টার থেকে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগিতায় মেডিকেল সেন্টারের দ্বিতীয় তলায় কাউন্সেলিং সেবা চালু করা হয়। সেখানে মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকরা কাউন্সেলিং সেবা দিতেন। ওই সময় এখান থেকে সেবা নিয়ে হতাশাগ্রস্ত অনেকেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছিলেন। তবে করোনাকালে বন্ধ হওয়ার পর এই সেবা আর চালু হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দাবি, মানসিক সমস্যা উত্তরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার ও অনুষদগুলোতে সাইকিয়াট্রিস্ট রাখতে হবে। এ নিয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র মাহমুদুল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো জানেও না, কোথায় গেলে তারা কাউন্সেলিং সেবা পাবে। এখানে শিক্ষার্থীদের মানসিক অসুস্থতার জন্য কোনো সেবা নেই।’

ক্রিমিনোলোজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র তৌফিক আহমেদ বলেন, ‘শারীরিক সুস্থতার জন্য মানসিক সুস্থতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন । এত বৃহৎ একটি মানবসম্পদের উৎস যদি মানসিকভাবে সুস্থ না থাকে, তাহলে তারা দেশের উন্নয়নের জন্য সর্বোচ্চ অবদান রাখতে ব্যর্থ হবে।’

আরও পড়ুনঃ ইডেন কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়নি: অধ্যক্ষ

শিক্ষার্থীদের জন্য কাউন্সেলিং বিষয়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি বিপ্লব কুমার দে বলেছেন, ‘শিক্ষার্থীদের জন্য কাউন্সেলিং সেবা অত্যন্ত জরুরি। প্রত্যেক হল পর্যায়ে পেশাদার কাউন্সিলর বা ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট নিয়োগ দেয়া উচিত। হল পর্যায়ে দেয়া না গেলে কেন্দ্রীয়ভাবেও নিয়োগ দেয়া যেতে পারে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আমরা অনেকবার বলেছি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এস এস এম মনিরুল হাসান বলেন, ‘এটা (সাইকোলজিস্ট নিয়োগ) অবশ্যই প্রয়োজন। আমরা আগের ব্যবস্থা (কাউন্সেলিং) নিয়ে মনোবিজ্ঞান বিভাগের সঙ্গে কথা বলব। নতুন করে পদ সৃষ্টি করে সাইকিয়াট্রিস্ট নিয়োগ করতে হবে। আমাদের সিস্টেমে এখন এটা (পদ) নাই, এ জন্য ইউজিসিতে চাইতে হবে।’


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence