সমাবর্তনের মঞ্চে সাফল্যের হাসি, পদক পেলেন চার শিক্ষার্থী
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:২৭ PM , আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:২৭ PM
স্বপ্ন আর সাধনার পথ পেরিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়-জীবনের শুরুতেই বড় কিছু করার প্রত্যয় বুকে ধারণ করেন শিক্ষার্থীরা। জ্ঞান, দক্ষতা আর মানবিক মূল্যবোধে সমৃদ্ধ বিশ্ব নাগরিক হয়ে ওঠার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেন তারা। প্রতিদিনের পরিশ্রম, ধাপে ধাপে এগিয়ে চলা—সব মিলেই নির্মিত হয় তাদের সাফল্যের সিঁড়ি। অবশেষে সেই স্বপ্ন যখন বাস্তবের আলোয় ধরা দেয়, উচ্ছ্বাস ছড়িয়ে পড়ে প্রিয় ক্যাম্পাসজুড়ে। বলছি প্রাইম ইউনিভার্সিটির সেই মেধাবী শিক্ষার্থীদের কথা, যাদের অংশগ্রহণে আজ অনুষ্ঠিত হলো এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তৃতীয় সমাবর্তন।
.jpg)
একাডেমিক জার্নিটা আমার জন্য আমার জন্য খুবই কঠিন ছিল। আমি টিউশনে করে চলতাম। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি, খরচের একটা ব্যাপার ছিল। তারপরেও ভালো ফল করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাড় পেয়েছি, বিভিন্ন স্কলারশিপ পেয়েছি। সফলতা পাবার জন্য কঠোর পরিশ্রমের বিকল্প নেই।
রাজিব মজুমদার, ইংরেজি বিভাগ থেকে গোল্ড মেডেলিস্ট
আজকের সমাবর্তন ছিল আমার জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। দীর্ঘ চার বছর কঠোর পরিশ্রম করার পর আমি আমার কাঙ্ক্ষিত ফলাফলটা অর্জন করি। ইংরেজি বিভাগ থেকে সফলতার মুকুট স্বরূপ আজ আমি গোল্ড মেডেলিস্ট হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি। আমি, আমার পরিবারের জন্য এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয়। প্রথম যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি, এতটা আশা ছিল না, শিক্ষকদের সহযোগিতায় এটা অর্জন করেছি।
একাডেমিক জার্নিটা আমার জন্য আমার জন্য খুবই কঠিন ছিল। আমি টিউশনে করে চলতাম। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি, খরচের একটা ব্যাপার ছিল। তারপরেও ভালো ফল করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাড় পেয়েছি, বিভিন্ন স্কলারশিপ পেয়েছি। প্রাইম ইউনিভার্সিটির মেধাবী এই শিক্ষার্থী বর্তমানে ডাক অধিদপ্তরের জুনিয়র হিসাবরক্ষক পদে জব করছেন। তিনি বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার সময় একাডেমিক পড়ালেখা নিয়েই ব্যস্ত থেকেছি। সরকারি জবের প্রিপারেশন শুরু করি মাস্টারসের পর থেকে। তিনি আরও বলেন, সফলতা পাবার জন্য কঠোর পরিশ্রমের বিকল্প নেই।
.jpg)
ম্যাম আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল ‘হোয়াট ইজ ক্যাপিটাল? আমি খুবই উৎসাহ নিয়ে ম্যামকে রাজধানী বলেছিলাম। আমি তখন জানতাম না ক্যাপিটাল মানে মূলধন। সেই জায়গা থেকে গোল্ড মেডেলিস্ট হওয়া আমার জন্য সত্যিই অনেক আনন্দের।
চাঁদনী হালদার, ডিপার্টমেন্ট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, মেজর একাউন্টিং
সায়েন্স থেকে বিজনেসে শিফট করা চাঁদনী হালদার বলেন, আমি কতটা আনন্দিত তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না। আমার জন্য একাডেমিক জার্নিটা অনেক কঠিন ছিল। প্রতি মুহূর্তে আমার জন্য অনেক বাধা ছিল। যেহেতু বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিলাম, বিজনেসে স্টাডি করা আমার জন্য অনেক কঠিন ছিল। প্রথম ক্লাসে পরিচয় পর্বের পর ম্যাম আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল ‘হোয়াট ইজ ক্যাপিটাল? আমি খুবই উৎসাহ নিয়ে ম্যামকে রাজধানী বলেছিলাম। আমি তখন জানতাম না ক্যাপিটাল মানে মূলধন। সেই জায়গা থেকে গোল্ড মেডেলিস্ট হওয়া আমার জন্য সত্যিই অনেক আনন্দের।
আজকের দিনে এইটা পাওয়া অনেক অনেক কঠোর পরিশ্রমের ব্যাপার। আমার যখন অ্যাডমিশন টেস্ট হয়েছিল আমি খুবই ডিপ্রেশনে ছিলাম। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়েই আমি তেমন ভালো করতে পারিনি। তখন ওই মুহূর্তে আমার মনে হয়েছিল আমার দ্বারা কিছু হবে না। আমি হয়ত আর কিছু পারবো না। ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে এ ঘুরে দাঁড়ানো। তিনি আরও বলেন— জীবনে অনেক মানুষ আসবে, স্বপ্ন দেখাবে। এসবে কান দেওয়া যাবে না। শুধু মন দিয়ে পড়ালেখা করে যেতে হবে।

ফারহানা আক্তার মিতু, আইন বিভাগ
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে আজকে সবচেয়ে আনন্দের দিন। আজকের এই গোল্ড মেডেলকে আমি তাদের জন্য ডেডিকেট করতে চায়, যারা ভেবেছিল আমি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি বলে আমি কিছুই করতে পারবো না। আমি আমার অসুস্থ বাবাকে বিশেষভাবে আজকের ডেডিকেট করতে চায়। আমার স্বপ্ন একজন জাজ হাওয়া। আমার একাডেমিক জার্নি সহজ ছিল না, প্রথম থেকেই আমার লক্ষ্য ছিল একজন গোল্ড মেডেলিস্ট হওয়া। অনেক কষ্টকরে আজ এই অর্জন। যে যাই করি না কেন, আমাদের পড়ালেখাটা নিয়মিত পড়ালেখা করা উচিত। আমি অনেক কিছু করছি কিন্তু আমার ফাস্ট প্রাইওরিটি ছিল পড়ালেখা, ফাস্ট দেন অন্য কিছু।

একসময় চিন্তা করেছিলাম আমার দিয়ে কোনো পড়ালেখা হবে না। পুরো হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। পরে আবার শুরু করি।
সোমা আক্তার, ডিপার্টমেন্ট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, মেজর ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং
এই দিনটা আমার জন্য একটু আলাদা। একসময় চিন্তা করেছিলাম আমার দিয়ে কোনো পড়ালেখা হবে না। পুরো হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। পরে আবার শুরু করি। সায়েন্স থেকে বিবিএতে বাজিমাত করা এই শিক্ষার্থী জানান, আমার সব ভাই বিবিএ করা। তখন আমার মা বলেছিলেন তুই বিবিএতে পড়। মায়ের অনুপ্রেরণায় পড়ে বিবিএতে ভর্তি হয়ে গেলাম। পরে আর ফিরে তাকাতে হয়নি। প্রত্যেক সেমিস্টারে আউট অব ফোরে ফোর ছিল। স্কলারশিপ ছিল। খুব ভালোছিল। এখানের টিচার, ক্লাসরুম, পরিবেশ অন্যরকম। আপনি যা, আপনার মধ্যে যে ট্যালেন্ট আছে তা ওরা বেড় করে নিয়ে আসে। তিনি আরও বলেন শুধুপড়ালেখা, একাডেমিক জীবন নিয়েই পড়ে থাকা সব নয়। আশেপাশের সব কিছুই নিয়েই আমাদের জীবন। আমাদের উচিত সব কিছুতে মনোনিবেশ করা। তিনি আরও বলেন আমাদের স্কিলসের ওপর জোর দেওয়া উচিত। সেটা বিভিন্ন ধরনের স্কিলস হতে পারে। সেটা কম্পিউটার স্কিলস হতে পারে, ভাষা দক্ষতা হতে পারে। মূলত বসে না থেকে শিখতে হবে। নতুন জিনিসের প্রতি আগ্রহ থাকতে হবে।