এনএসইউতে ‘গ্র্যাজুয়েট কলোকিয়াম সিরিজ: ফল ২০২৫’ অনুষ্ঠিত
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৬:৩১ PM
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির (এনএসইউ) মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান স্কুল আজকে সফলভাবে ‘গ্র্যাজুয়েট কলোকিয়াম সিরিজ: ফল ২০২৫’ আয়োজন করে। এ আলোচনা সভায় বিশিষ্ট অনুষদ সদস্য, শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ ও গবেষকরা উপস্থিত ছিলেন। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের অধ্যাপক ও মানবিক এবং সামাজিক বিজ্ঞানের ডিন ড. মো. রিজওয়ানুল ইসলাম উপস্থাপকদের স্বাগত জানান।
অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. বুলবুল সিদ্দিকী।
অনুষ্ঠানের অধিবেশন চেয়ার ছিলেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির দর্শন বিভাগের অধ্যাপক এবং গবেষণা অফিসের পরিচালক ড. নরম্যান কেনেথ সোয়াজো। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের প্রভাষক জনাব আহমেদ রাগীব চৌধুরী।
ড. মো. রিজওয়ানুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের গবেষণা পরিচালনার জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে উৎসাহিত করেন এবং উপস্থাপনার প্রস্তুতিতে তাদের নিষ্ঠার প্রশংসা করেন।
ড. বুলবুল সিদ্দিকী প্রতিটি উপস্থাপিত প্রবন্ধের পদ্ধতি, তাত্ত্বিক কাঠামো এবং নীতিগত প্রভাব সম্পর্কে তাঁর মন্তব্য প্রদান করেন এবং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আলোচনায় অবদান রাখতে উপস্থাপকদের তাদের ফলাফল গবেষণা সাময়ীকিতে প্রকাশ করার জন্য উৎসাহিত করেন।
ড. নরম্যান কেনেথ সোয়াজো সমাপনী বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের পেশাগত উন্নয়নের সুযোগগুলো সম্পর্কে অবহিত করেন এবং তাদের উপস্থাপনার প্রশংসা করেন।
কলোকিয়ামে উপস্থাপক হিসেবে ছিলেন নর্থ ইউনিভার্সিটির সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ পলিসি অ্যান্ড গভর্নেন্স (এসআইপিজি) এর শিক্ষার্থী মনীশ কুমার আগরওয়াল, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী আখলাক উল ইসলাম, ইতিহাস ও দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী মনিরুল ইসলাম বাপ্পী এবং ইংরেজি ও আধুনিক ভাষা বিভাগের শিক্ষার্থী সুরিয়া আখতার সৃষ্টি।
উপস্থাপক মনীশ কুমার আগরওয়াল ‘বাংলাদেশে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিশ্চয়তা’ শীর্ষক প্রবন্ধে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের প্রধান সমস্যা এবং পদ্ধতিগত প্রতিবন্ধকতা বিশ্লেষণ করেন এবং ২০৩০ সালের মধ্যে সর্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা অর্জনের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক সামর্থ্য নিশ্চিতকরণ, স্বাস্থ্য বীমা সংস্কারের মাধ্যমে আর্থিক ঝুঁকি হতে সুরক্ষা এবং উন্নত ডিজিটাল স্বাস্থ্য অবকাঠামো বাস্তবায়নের সুপারিশ প্রদান করেন।
আখলাক উল ইসলাম ‘উন্নয়নশীল জাতির ডিজিটাল বাণিজ্য এবং ডিজিটাল সার্বভৌমত্বের ভারসাম্য: চীন, ভারত এবং বাংলাদেশের ডিজিটাল ডাটা স্থানীয়করণ প্রচেষ্টার তুলনামূলক বিশ্লেষণ’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তুলনামূলক বিশ্লেষণ দ্বারা তিনি এই তিনটি রাষ্ট্র তাদের স্বতন্ত্র আইনসভা এবং নীতিগত পদ্ধতির মাধ্যমে কীভাবে ডিজিটাল বাণিজ্য উদারীকরণকে সহজতর করা এবং জাতীয় ডিজিটাল সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠার মধ্যকার অন্তর্নিহিত দ্বন্দ্ব মোকাবেলা করে তা তুলে ধরেন।
মনিরুল ইসলাম বাপ্পি ‘আখ, রাষ্ট্র এবং ভূ-রাজনীতি: উত্তরবঙ্গের শিল্পায়ন, ১৯৩০-১৯৬০’ শীর্ষক বিশ্লেষণমূলক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, যেখানে তিনি ঔপনিবেশিক যুগের শেষ থেকে পাকিস্তানি শাসনের প্রাথমিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলজুড়ে আখ শিল্পের কাঠামোগত পরিবর্তন এবং এর অর্থনৈতিক প্রভাব বিশ্লেষণ করেন; পাশাপাশি স্থানীয় রাজনীতি এবং কৃষি অর্থনীতিতে এর ভূমিকা তুলে ধরেন।
উপস্থাপক সুরিয়া আখতার সৃষ্টি ইংরেজি সাহিত্যের বিখ্যাত নাটক এস্কিলাসের আগামেমনন এ পুরুষতান্ত্রিকতার বিরুদ্ধে নারীবাদের প্রতিরোধ বিষয়ক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। তিনি জুডিথ বাটলার এবং বেল হুকের তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ ব্যবহার করে ধ্রুপদী ট্র্যাজেডির মধ্যে পুরুষতান্ত্রিক ক্ষমতা কাঠামোকে চ্যালেঞ্জ করেন এবং এই শোষণকে ধ্বংস করার জন্য নারী চরিত্রগুলো, বিশেষ করে ক্লিমেনস্ট্রা, ক্যাসান্ড্রা এবং ইফিজেনিয়াকে চিত্রায়ণ করেন। এই প্রেক্ষাপটে তিনি ক্ষমতা এবং নৈতিক প্রতিরোধের ধারণাগুলিকে পুনরায় সংজ্ঞায়িত করেন।
প্রশ্নোত্তর পর্বে শিক্ষকবৃন্দ ও অংশগ্রহণকারীরা গবেষণাপত্রগুলোর ওপর তাদের মতামত ও প্রশ্ন তুলে ধরেন, যা অনুষ্ঠানে প্রাণবন্ত ও শিক্ষণীয় আলোচনার পরিবেশ সৃষ্টি করে। পরিশেষে উপস্থাপকদের মূল্যবান অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাদের হাতে কৃতিত্বের সনদ তুলে দেওয়া হয়।