জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে প্রেরণা জুগিয়েছেন বেগম রোকেয়া, শ্রদ্ধা জানিয়ে নাহিদ ইসলাম
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৪৫ PM
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন ছিলেন প্রেরণা হয়ে। তিনি আমাদের জন্য এক অনুপ্রেরণার নাম। আজ মঙ্গলবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা বলেন তিনি।
নাহিদ বলেন, বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন শতবর্ষ আগে বাঙালি মুসলমান সমাজে এসেছিলেন আলোকবর্তিকা হয়ে। তাঁর দূরদর্শী চিন্তা ও অনমনীয় সংগ্রাম সমাজের অচলায়তন ভেঙে নারীদের জন্য রচনা করেছিল মুক্তির পথ।
সে সময়কার সামাজিক অবস্থা তুলে ধরে নাহিদ বলেন, সে এক কঠিন সময় ছিল। অন্তপুরে রুদ্ধ এবং শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত থাকার গ্লানি নারীদের জীবনকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছিল। মনে করা হতো, নারীর স্থান কেবলই অন্দরমহলে, বিদ্যাচর্চা তাঁদের জন্য নয়। এমন এক যুগে রোকেয়া তাঁর ক্ষুরধার লেখা ও অদম্য কর্মশক্তির মাধ্যমে এই জীর্ণ ধ্যানধারণাকে আঘাত হানেন।
এনসিপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, রোকেয়ার কাজের প্রধান দিক ছিল শিক্ষার ওপর জোর দেওয়া। তিনি বুঝেছিলেন, শিক্ষা ছাড়া নারীর মুক্তি অসম্ভব। তাই শুধু কলম ধরেই তিনি ক্ষান্ত হননি, নিজের হাতে স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন—যেখানে তথাকথিত ‘ভদ্র’ সমাজের কঠিন বাধা সত্ত্বেও তিনি মেয়েদের এনেছিলেন বিদ্যার আঙিনায়। এই স্কুল প্রতিষ্ঠা করা সেই সময়ে ছিল এক বৈপ্লবিক পদক্ষেপ। তিনি বিশ্বাস করতেন, পুরুষের পাশাপাশি নারীও যদি জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হয়, তবে সমাজ পূর্ণতা পাবে। তিনি বলেছিলেন, নারী ও পুরুষ উভয়েই সমাজের দুটি চাকা, একটি দুর্বল হলে অগ্রগতি সম্ভব নয়।
রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের বিষয়ে নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘বেগম রোকেয়া আমাদেরকে শিখিয়ে গেছেন—চুপ করে থাকা কোনো সমাধান নয়, বরং প্রয়োজন সাহস করে উঠে দাঁড়ানো আর অধিকারের দাবি জানানো। তাঁর দেখানো পথ ধরেই আজকের নারীরা জীবনের সর্বক্ষেত্রে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করতে পারছেন। জুলাইয়ের অভ্যুত্থানেও বেগম রোকেয়া ছিলেন প্রেরণা হয়ে। তাই নতুন বাংলাদেশ গড়ার যাত্রায়, অধিকার ও মর্যাদাভিত্তিক নতুন দিনের রাজনৈতিক যাত্রায়, বেগম রোকেয়া আমাদের জন্য এক অনুপ্রেরণার নাম।’
রোকেয়া দিবসে এই সমাজসংস্কারকের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নাহিদ বলেন, ‘আজ রোকেয়া দিবস। একই দিনে তিনি জন্ম ও মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। এই শ্রদ্ধাঞ্জলি বেগম রোকেয়ার স্বপ্নের সমাজ বিনির্মাণে আমাদের অঙ্গীকারও।’