বিএনপি সিঙ্গাপুর-আমেরিকা বানাতে চায় না, স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে চায়: তারেক রহমান

সাত দিনব্যাপী ‘বিএনপির দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তারেক রহমান
সাত দিনব্যাপী ‘বিএনপির দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তারেক রহমান  © সংগৃহীত

বাংলাদেশের পরিবর্তন হবে মন্তব্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপি বাংলাদেশকে সিঙ্গাপুর, মালয়শিয়া, কানাডা বা আমেরিকা বানাতে চায় না। বিএনপি স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে চায়। বিভিন্ন সময় দেশ যখন সংকটের ভেতর দিয়ে গিয়েছে এবং তারপর দেশের জনগণ যখন বিএনপিকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে, তখন ধীরে ধীরে বিএনপি অবস্থার পরিবর্তন ঘটিয়েছে, উন্নতি ঘটিয়েছে।

রবিবার (৭ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে সাত দিনব্যাপী ‘বিএনপির দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান এ কথা বলেন। 

সকালে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সভাপতিত্ব করেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল।

তারেক রহমান বলেন, ‘আমাদের সামনে অনেক কঠিন সময়ে অপেক্ষা করছে। বিভিন্নভাবে নানা রকম ষড়যন্ত্র হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। এ ষড়যন্ত্র রুখে দিতে পারে দেশের জনগণ। এ ষড়যন্ত্র জনগণকে নিয়ে সঙ্গে রুখে দিতে পারে বিএনপি। আর ষড়যন্ত্র রুখে দেওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে গণতন্ত্র। আমরা যদি গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি, জনগণের মতামতকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারি, তাহলে অবশ্যই অনেক ষড়যন্ত্রকে আমরা রুখে দিতে পারব। ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে পারলেও কিন্তু সামনে অনেক কঠিন সময়। কারণ প্রতিটি ক্ষেত্রে অরাজকতা বিরাজ করছে।’

জামায়াতে ইসলামীকে ইঙ্গিত করে তারেক রহমান বলেন, ‘ইদানীং কিছু মানুষ, কিছু গোষ্ঠী ও সোশ্যাল মিডিয়ায় বলে যে অমুককে দেখলাম; তমুককে দেখলাম; এবার আমাদের দেখুন। যাদের উদ্দেশে এসব বলে, তাদের দেশের মানুষ ’৭১ সালেই দেখেছে, যারা নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ রক্ষার্থে লাখ লাখ মানুষকে শুধু হত্যাই করেনি; বরং তাদের সহকর্মীরা কীভাবে মা-বোনদের ইজ্জত পর্যন্ত লুট করেছিল। এই কথা আমাদের মনে রাখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এ মুহূর্তে আমরা যদি দেখি আমরা আগামী দুই মাস পরে একটি নির্বাচন প্রত্যাশা করছি। গত ১৬ বছর যেই স্বৈরাচারকে দেশের জনগণ বিতাড়িত করেছে আন্দোলনের মাধ্যমে, সেই স্বৈরাচার এই দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রকে কীভাবে ধ্বংস করে দিয়ে গিয়েছে, এটি আমরা জীবনের পরতে পরতে অনুভব করতে পারি। তারা দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, দেশের আইনশৃঙ্খলা, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা, দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। কীভাবে দেশের প্রাকৃতিক অবস্থাগুলোকে নদী, নালা, খাল, বিল, বন, জঙ্গলকে ধ্বংস করে দিয়ে গিয়েছে। কীভাবে দেশের কৃষিসহ সবকিছুকে ধ্বংস করে দিয়ে গিয়েছে। এর ভুক্তভুগী কিন্তু এই দেশের মানুষ। এখন একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে এবং এ মুহূর্ত পর্যন্ত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আমরা বলতে পারি বাংলাদেশের জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির দায়িত্ব হচ্ছে দেশকে সঠিকভাবে পরিচালনা করা দেশের মানুষ যখন বিএনপিকে দেশের দায়িত্ব পরিচালনার দায়িত্ব দেবে।’

তারেক রহমান বলেন, ‘যেদিন স্বৈরাচার পালিয়ে যায় আমাকে মহাসচিব সাহেব ফোন করলেন। তিনি বললেন, জাতীয় সরকার গঠিত করলে ভালো হয় কি না বা আমরা জাতীয় সরকারে যাব কি না। তখন আমি বলেছিলাম যে আমরা জনগণের কাছে যাব। আমরা জনগণ যে সিদ্ধান্ত দেবে, তাই আমরা মাথা পেতে নেব। কাজেই আমি সেই মুহূর্তে মনে করেছি যে জাতীয় সরকারে আমরা যাব না। জনগণকে আমাদের লক্ষ্য বলব দেশকে নিয়ে, জনগণকে নিয়ে এবং জনগণ যে সিদ্ধান্ত দিবে আমরা মাথা পেতে সে সিদ্ধান্ত নেব।’


সর্বশেষ সংবাদ