প্রতিদিন ১৫ মিনিট হাঁটুন, পাবেন অসাধারণ সব উপকার
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১১ জুন ২০২৫, ০৩:০৪ PM , আপডেট: ১৩ জুন ২০২৫, ০৮:৩২ AM
যান্ত্রিক জীবনে শরীরচর্চার সময় বের করা যেন এক বিলাসিতা। কিন্তু সুস্থ থাকতে শরীর ও মন দুটোই রাখতে হবে চাঙ্গা। তাই বলে কি ঘন্টাখানেক জিমে যাওয়ার সময় না পেলেই কিছু করার নেই? একদম নয়। দিনে মাত্র ১৫ মিনিট হাঁটাহাঁটিই যথেষ্ট অনেক সমস্যার সমাধানে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দিনে মাত্র ১৫ মিনিট নিয়মিত হাঁটলেই শরীর ও মনের উপর পড়ে ইতিবাচক প্রভাব। তাই যত ব্যস্ত জীবনই হোক, এই অল্প সময়টুকু যদি নিজেকে দেওয়া যায়, উপকারিতা মিলবে অনেক।
কেন হাঁটা এত গুরুত্বপূর্ণ?
হৃদ্যন্ত্রের সুরক্ষা
হাঁটাহাঁটি শরীরের রক্তসঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে। এতে হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগের ঝুঁকি কমে যায়। প্রতিদিনের মাত্র ১৫ মিনিট হাঁটা হৃদ্যন্ত্র সুস্থ রাখতে দারুণ কার্যকর।
মন ও মস্তিষ্কের যত্ন
মন খারাপ? কাজের ক্লান্তি জমেছে মাথায়? বাইরে একটু হাঁটতেই মনের অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে। হাঁটার সময় শরীরে এন্ডরফিন হরমোন নিঃসৃত হয়, যা মনকে চনমনে করে তোলে। হাঁটাহাঁটি মানসিক চাপ, উদ্বেগ এমনকি হালকা অবসাদ দূরে রাখতে সাহায্য করে।
স্মৃতিশক্তি ও সৃজনশীলতা বৃদ্ধি
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত হাঁটলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে এবং অ্যালঝাইমার্স রোগের ঝুঁকি কমে। শুধু তাই নয়, দিনে ১৫ মিনিট হাঁটার ফলে সৃজনশীলতাও বাড়ে—যা কাজের দক্ষতা বৃদ্ধিতেও সহায়ক।
ওজন নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
১৫ মিনিট হাঁটা অনেক ক্যালোরি ঝরাতে সাহায্য করে। বিশেষত যারা সারা দিন ডেস্কে বসে কাজ করেন, তাঁদের জন্য এটি কার্যকরী। তবে ওজন কমাতে চাইলে এর সঙ্গে লো-ক্যালোরি ডায়েটও জরুরি।
আরও পড়ুন: নকল ওষুধে জীবনহানি! জেনে নিন চেনার উপায়
ঘুম ভালো হয়
যাঁরা রাতে ঘুমের সমস্যায় ভোগেন, তাঁদের জন্য হাঁটা এক প্রাকৃতিক সমাধান হতে পারে। দিনে সামান্য হাঁটলেই শরীর ক্লান্ত হয়, যার ফলে ঘুমের গুণমান বাড়ে।
পেশি ও হাড় মজবুত হয়
নিয়মিত হাঁটলে শরীরের পেশি ও হাড় শক্তিশালী হয়। এটি বয়সজনিত দুর্বলতা রোধেও ভূমিকা রাখে।
রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
দুপুর বা রাতের খাবারের পর ১৫ মিনিট হাঁটলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমতে পারে। এমনকি যারা একটানা সকালে হাঁটেন, তাঁদের চেয়েও মিলের পর ছোট ছোট করে হাঁটা বেশি উপকারী হতে পারে।
আয়ু বাড়ায়
বিশ্বখ্যাত মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেট-এর এক গবেষণা বলছে, প্রতিদিন ১৫ মিনিট হাঁটাহাঁটি আয়ু তিন বছর পর্যন্ত বাড়াতে পারে।
কোথায় হাঁটবেন, কীভাবে হাঁটবেন
পার্ক, ফাঁকা রাস্তাঘাট কিংবা ছাদের খোলা জায়গা—হাঁটার জন্য শহরেও রয়েছে একাধিক বিকল্প।
হাঁটার সময় খুব ধীরে বা খুব জোরে হাঁটার দরকার নেই। মধ্যম গতিতে, সোজা ভঙ্গিতে হাঁটলেই শরীর সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়।
প্রতিদিন মাত্র ১৫ মিনিট হাঁটার মাধ্যমে শরীর ও মনের উপর যে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। তাই আজই সিদ্ধান্ত নিন—চলুন হাঁটি, সুস্থ থাকি।