চা বাগানে নারী শ্রমিকদের এক-তৃতীয়াংশই যৌন নির্যাতনের শিকার: গবেষণা

চা বাগানে নারী শ্রমিক
চা বাগানে নারী শ্রমিক  © সংগৃহীত

দেশের চা বাগানে কর্মরত নারী শ্রমিকদের মধ্যে প্রায় ৩৫ শতাংশ কর্মক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বলে সম্প্রতি এক গবেষণায় উঠে এসেছে। গবেষণাটি পরিচালনা করেছে বেসরকারি সংস্থা ইনোভেটিভ রিসার্চ অ্যান্ড কনসালট্যান্সি (আইআরসি), যা ‘নারী চা–শ্রমিকদের অধিকার, সেবাপ্রাপ্তিতে প্রবেশগম্যতা: বাস্তবতা ও আইনগত প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় উপস্থাপন করা হয়।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত এই সভায় গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন সংস্থাটির লিড কনসালট্যান্ট পলিন কুমার সাহা। গবেষণায় দেখা যায়, নারী শ্রমিকদের মধ্যে ৩৪.৮ শতাংশ কর্মস্থলে যৌন নির্যাতনের শিকার হন। পাশাপাশি ৩০ শতাংশ মৌখিক নির্যাতন এবং ১৪ শতাংশ শারীরিক নির্যাতনের সম্মুখীন হন, যার মধ্যে গৃহস্থালির নির্যাতনও রয়েছে।

‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স’ সংগঠনের অধীনে এবং অক্সফাম ইন বাংলাদেশের সহযোগিতায় সিলেট বিভাগের তিনটি জেলার ১১টি উপজেলায় ‘স্ট্রেনদেনিং উইমেন ভয়েসেস ইন টি গার্ডেন’ প্রকল্পের আওতায় এই গবেষণা পরিচালিত হয়। প্রকল্পটি ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে বাস্তবায়িত হচ্ছে।

গবেষণায় উঠে আসে, ২৪.৩ শতাংশ নারী চা বাগানকে নিরাপদ কর্মস্থল মনে করেন না। সহিংসতা, মালিকের হুমকি, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, চুরি ও অন্যান্য কারণে অনেকেই নিজেদের কর্মপরিবেশকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করেন। তবে ৩৭.৭ শতাংশ নারী এসব ঘটনার প্রতিবাদ করেন বলে জানান।

গভীরতর বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৩০০ জন নারী শ্রমিকের মধ্যে ২৩ জন নির্দিষ্টভাবে তাদের ওপর সংঘটিত অপরাধের ধরন ব্যাখ্যা করেন। তাদের মধ্যে ৯৫.৭ শতাংশ অশ্লীল ভাষা ও অঙ্গভঙ্গির শিকার হয়েছেন, ৩০.৪ শতাংশ অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ, ২৬.১ শতাংশ যৌন হয়রানি এবং ১৭.৪ শতাংশ বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন বলে জানান।

গবেষণায় নারীদের কর্মস্থলে অধিকার, বেতন বৈষম্য, চাকরির নিরাপত্তা, বাসস্থান, স্যানিটেশন, পানির সমস্যা, শিক্ষার অভাবসহ একাধিক কাঠামোগত সংকট তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি তুলনামূলক বিশ্লেষণে ভারত, চীন, কেনিয়া, শ্রীলঙ্কা ও ইন্দোনেশিয়ার চা বাগান সংশ্লিষ্ট আইনি কাঠামোর দৃষ্টান্তও উপস্থাপন করা হয়।

সমস্যা সমাধানে গবেষণায় নারীদের ইউনিয়নে অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব বৃদ্ধি, আইনি সহায়তা ও পরামর্শ সম্প্রসারণ, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন, সামাজিক সুরক্ষা, সচেতনতা বৃদ্ধি, গৃহের অধিকারে স্বীকৃতি এবং জোরপূর্বক উচ্ছেদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ, ও অক্সফাম ইন বাংলাদেশের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাহমুদা সুলতানা।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence