ডিএনএ গঠন আবিষ্কারক নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী মারা গেছেন
- টিডিসি ওর্য়াল্ড
- প্রকাশ: ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৪৭ AM
ডিএনএ’র গঠন আবিষ্কারকারীদের অন্যতম ও নোবেলজয়ী মার্কিন বিজ্ঞানী জেমস ওয়াটসন মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৭ বছর। তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরি, যেখানে তিনি দীর্ঘ সময় ধরে গবেষণা করেছেন।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৫৩ সালে ওয়াটসন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ফ্রান্সিস ক্রিকের সঙ্গে মিলে ডিএনএ’র দ্বি-সর্পিল (ডাবল হেলিক্স) গঠন শনাক্ত করেন, যা আণবিক জীববিজ্ঞানে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আনে। এই আবিষ্কারকে ২০শ শতকের অন্যতম সেরা বৈজ্ঞানিক অর্জন হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
ওয়াটসন, ক্রিক ও মরিস উইলকিনস ১৯৬২ সালে যৌথভাবে চিকিৎসাবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পান। নোবেলজয়ের পর তারা বলেছিলেন, 'আমরা জীবনের রহস্য আবিষ্কার করেছি।'
তবে জীবনের শেষদিকে জাতি ও লিঙ্গ বিষয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার সুনাম। এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে ওয়াটসন দাবি করেছিলেন, কৃষ্ণাঙ্গ ও শ্বেতাঙ্গদের বুদ্ধিমত্তার পার্থক্যের জন্য জেনেটিক উপাদান দায়ী। এই মন্তব্যের পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে তিনি নিউ ইয়র্কের কোল্ড স্প্রিং হারবার ল্যাবরেটরির চ্যান্সেলর পদ হারান।
২০০৭ সালে দ্য টাইমস-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওয়াটসন বলেন, তিনি আফ্রিকার ভবিষ্যৎ সম্পর্কে 'স্বভাবতই নিরাশ', কারণ তার মতে, 'আমাদের সামাজিক নীতিগুলো এই ধারণার ওপর দাঁড়িয়ে আছে যে তাদের বুদ্ধিমত্তা আমাদের সমান অথচ পরীক্ষাগুলো তা সমর্থন করে না।'
পরে ২০১৯ সালে আবারও জাতি ও বুদ্ধিমত্তা নিয়ে মন্তব্য করলে ল্যাবরেটরি তার সব সম্মানসূচক পদবি ,চ্যান্সেলর এমেরিটাস, অলিভার আর গ্রেস প্রফেসর এমেরিটাস ও ট্রাস্টি বাতিল করে দেয়। ল্যাব কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানায়, 'ড. ওয়াটসনের মন্তব্য নিন্দনীয় এবং বিজ্ঞানে এর কোনো ভিত্তি নেই।'
বিবিসি আরও জানায়, ডিএনএ প্রথম আবিষ্কৃত হয় ১৮৬৯ সালে। তবে ১৯৪৩ সাল পর্যন্ত বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারেননি যে ডিএনএ-ই কোষের জেনেটিক উপাদান। লন্ডনের কিংস কলেজের গবেষক রোজালিন্ড ফ্র্যাঙ্কলিনের এক্স-রে চিত্র ব্যবহার করে ওয়াটসন ও ক্রিক ডিএনএ অণুর ভৌত মডেল তৈরি করেন, যদিও তা তার অজান্তে ব্যবহৃত হয়েছিল বলে জানা যায়।
ওয়াটসন ২০১৪ সালে তার নোবেল পদক নিলামে ৪.৮ মিলিয়ন ডলারে বিক্রি করেন, কারণ জাতি সম্পর্কিত বিতর্কের পর তিনি নিজেকে বৈজ্ঞানিক সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন মনে করতেন। পরে এক রুশ ধনকুবের পদকটি কিনে আবার তার কাছেই ফেরত দেন।