ইসরায়েলের সাথে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করল তুরস্ক

তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান  © সংগৃহীত

গাজা যুদ্ধের প্রতিবাদে ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে তুরস্ক। পাশাপাশি ইসরায়েলি বিমান ও জাহাজের জন্য তুরস্কের আকাশসীমা ও বন্দর সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার তুরস্কের পার্লামেন্টের এক অসাধারণ অধিবেশনে বক্তব্যে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান।

অধিবেশনে তিনি বলেন, “গত দুই বছর ধরে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরায়েল। বিশ্ববাসীর চোখের সামনে মৌলিক মানবিক মূল্যবোধকে উপেক্ষা করছে তারা।”

গত বছরের মে মাসে তুরস্ক ইসরায়েলের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্য বন্ধ করে দিয়েছিল। সেই সময় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও অবিলম্বে মানবিক সহায়তা প্রবেশের দাবি জানায় আঙ্কারা। ২০২৩ সালে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল প্রায় ৭০০ কোটি ডলার।

ফিদান বলেন, “আমরা ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করেছি। তুর্কি জাহাজ আর তাদের বন্দরে যাবে না, ইসরায়েলি জাহাজ আমাদের বন্দরে ঢুকতে পারবে না। তাদের বিমানও আমাদের আকাশসীমায় ঢুকতে পারবে না।”

 তুরস্ক এখন শুধু মানবিক সংকট নয়, ইসরায়েলকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও হুমকি হিসেবে দেখছে। বিশেষ করে সিরিয়ায় ইসরায়েলের হামলাকে আঙ্কারা দেশটির পুনর্গঠন প্রচেষ্টার পথে ইচ্ছাকৃত বাধা হিসেবে বিবেচনা করছে। বিশ্লেষকদের মতে, তুরস্ক যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইসরায়েলপ্রীতিপূর্ণ অবস্থানের বিপরীতে এখন গ্লোবাল সাউথের দেশগুলো ও বিকল্প শক্তিগুলোর দিকে তাকিয়ে আছে।

ইসরায়েলি রাজনৈতিক বিশ্লেষক আকিভা এলদার বলেন, “তুরস্ক কেবল আরেকটি দেশ নয়; দীর্ঘদিন ধরে এটি ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র ছিল। বাণিজ্য ও পর্যটনের বড় অংশীদার ছিল তুরস্ক। ফলে এই সিদ্ধান্ত ইসরায়েলিদের আরও বিচ্ছিন্ন করে তুলছে।”

২০১০ সালে গাজাগামী ত্রাণবাহী বহরে ইসরায়েলের হামলায় ১০ জন তুর্কি নাগরিক নিহত হওয়ার পর থেকেই দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। গত নভেম্বরে তুরস্ক ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগের বিমানকে আকাশসীমা ব্যবহার করতে দেয়নি।

সংবাদসূত্র: আলজাজিরা


সর্বশেষ সংবাদ