পরিবার প্রতি তিনটি করে সন্তান নেবার আহবান আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবতের
- টিডিসি ওয়ার্ল্ড
- প্রকাশ: ২৯ আগস্ট ২০২৫, ০৫:০১ PM , আপডেট: ২৯ আগস্ট ২০২৫, ০৭:২৫ PM
ভারতের প্রভাবশালী হিন্দু জাতীয়তাবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবত দেশটির প্রত্যেক পরিবারেই তিনটি করে সন্তান থাকা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, “জাতীয় স্বার্থে প্রত্যেক পরিবারেরই তিন সন্তান থাকা উচিত, এবং তার মধ্যেই নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখা উচিত। ভারতে জনসংখ্যা ‘নিয়ন্ত্রিত, এবং একই সঙ্গে পর্যাপ্ত’ থাকতে হবে।"
আরএসএসের জন্মের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বৃহস্পতিবার এক বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন। জন্মহার কমার বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে তা দীর্ঘমেয়াদে ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে, এমন সতর্কবার্তাও দেন তিনি।
জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের ২০২৫ সালের প্রতিবেদনে অনুসারে ভারতে এখনই জনসংখ্যা ১৪৬ কোটি, যা দেশটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষের দেশে পরিণত করেছে।তা সত্ত্বেও দ্রুত বিকাশমান অর্থনীতির দেশটিতে নারীপ্রতি গর্ভধারণের হার কমে দুইয়ের নিচে নেমে এসেছে। ভারতজুড়ে জনসংখ্যার স্থিতি, জাতীয় সক্ষমতা ও সাংস্কৃতিক পরিচয় নিয়ে অনেক জাতীয়তাবাদী ও আঞ্চলিক নেতাদের মধ্যে যে উদ্বেগ রয়েছে ভাগবতের কথায়ও সেটিই ফুটে উঠেছে।
বছরের পর বছর ধরে কট্টরপন্থি হিন্দু নেতারা মুসলিমসহ ভারতে সংখ্যালঘুদের মধ্যে জন্মহার বেশি বলে উদ্বেগ প্রকাশ করে এলেও সাম্প্রতিক তথ্যপ্রমাণ বলছে, অতীতের তুলনায় মুসলমান পরিবারগুলোতেও এখন জন্মহার অনেক কম।ধর্মভিত্তিক সব গোষ্ঠীতেই জন্মহার কমছে বলে মানছেন ভাগবতও।
আরএসএসের বিরুদ্ধে মুসলিমসহ সংখ্যালঘুবিরোধী প্রবণতার যে অভিযোগ রয়েছে তা খারিজ করে দিয়েছেন ভাগবত। তিনি বলেছেন, আরএসএস সবাইকে ‘ভারতীয়’ হিসেবেই দেখে। “আমাদের পূর্বপুরুষ ও সংস্কৃতি একই।ভারতের জনসংখ্যার প্রায় ১৪ শতাংশই মুসলমান। প্রার্থনার রীতি ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু আমাদের পরিচয় এক। ধর্ম বদলালেই কারও সম্প্রদায়গত পরিচয় বদলায় না।“সব পক্ষেই পারস্পরিক আস্থা তৈরি করতে হবে। মুসলিমদেরও সেই ভয় কাটিয়ে উঠতে হবে যে অন্যদের সঙ্গে হাত মেলালে তাদের ইসলাম শেষ হয়ে যাবে,” বলেছেন তিনি।
নিজেদেরকে হিন্দু মূল্যবোধের প্রচারক সাংস্কৃতিক সংগঠন দাবি করা আরএসএসের ভারতজুড়ে লাখ লাখ স্বেচ্ছাসেবক ও সহযোগীর বিস্তৃত নেটওয়ার্ক রয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীসহ তার মন্ত্রিসভার অনেক সদস্যই আরএসএসের দীর্ঘদিনের সদস্য। বিজেপির নীতিতে সংস্কৃতি, শিক্ষার সংস্কার থেকে শুরু করে নাগরিকত্ব আইন নিয়ে যা যা আছে, তাতে আরএসএসের আকাঙ্ক্ষার স্পষ্ট ছাপ পাওয়া যায় বলেও ভাষ্য অনেক বিশ্লেষকের। এ কারণে আরএসএসকে বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী নাগরিক সংগঠন বিবেচনা করা হয়।
সংবাদ সূত্র: রয়টার্স