সহস্রাধিক গ্রেপ্তারেও যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় বিক্ষোভ কমার লক্ষণ নেই

এক বিক্ষোভকারীকে আটক করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ
এক বিক্ষোভকারীকে আটক করে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ  © সংগৃহীত

গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধশতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় এখনও বিক্ষোভে উত্তাল। বিক্ষোভকারীদের ক্যাম্পাস থেকে সরাতে হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। কয়েক সপ্তাহ ধরে চলা এই বিক্ষোভ দমনে পুলিশ চরমভাবে বলপ্রয়োগ করছে। বিক্ষোভকারীদের গণগ্রেপ্তার শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত এক হাজারেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এরপরও যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। খবর বিবিসির।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, লস অ্যাঞ্জেলেস (ইউসিএলএ) ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থী শিবিরে বুধবার ভয়াবহ সহিংস ঘটনার পর সেখানে বিক্ষোভকারীদের অস্থায়ী ব্যারিকেডগুলো ভেঙে সরিয়ে ফেলেছে পুলিশ। আগের দিন সেখানে ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের ওপর হামলা করে ইসরায়েলপন্থীরা।

পুলিশের বলপ্রয়োগ
বিবিসির প্রতিবেদনে প্রকাশিত একাধিক ছবিতে দেখা গেছে, বিভিন্ন ক্যাম্পাস থেকে বিক্ষোভকারীদের আটক করে পুলিশের বাসে তোলা হয়। তাদের হাত বেঁধে বাসের পাশে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়। শত শত বিক্ষোভকারী তাবু গেঁড়ে ইউসিএলএতে ক্যাম্পাসে অবস্থান করেছিল। পুলিশ তাদের সেখান থেকে সরাতে মারমুখী আচরণ করে। 

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সপ্তাহ দুয়েক আগে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনবিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়। ধীরে ধীরে এই বিক্ষোভ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা ক্যাম্পাসে অস্থায়ী শিবির বসিয়েছেন। কয়েক দিন ধরে চলা এ বিক্ষোভ দমনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য। তারা বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শত শত শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছেন। কিছু কিছু ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ওপর শক্তিপ্রয়োগ করেছেন পুলিশ সদস্যরা। কোথাও কোথাও সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।

এর মধ্যেও ক্যাম্পাসগুলোতে তাঁবু খাটিয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় সমর্থন দেওয়া ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবিও জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে নিউইয়র্ক সিটি পুলিশ। মঙ্গলবার রাতে অভিযানে গাজায় যুদ্ধবিরোধী ফিলিস্তিনপন্থী বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়া হয়। এ সময় বহু বিক্ষোভকারীকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

পরীক্ষা স্থগিত
রাটগার্স ইউনিভার্সিটি তাদের নিউ ব্রান্সউইক ক্যাম্পাসে পরীক্ষা ও অন্যান্য একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত করার কথা জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ বলেছে, এসব পরীক্ষা বৃহস্পতিবার দুপুরের আগে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিক্ষোভ পরিস্থিতি আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কায় স্থগিত করা হয়েছে। 

যেসব ক্যাম্পাসে চলছে বিক্ষোভ
কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পর আরও অনেকগুলো ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু হয়। অস্থায়ী তাঁবু টানিয়ে শিক্ষার্থী অবস্থান শুরু করেন। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কয়েকটি জর্জ ওয়াশিংটন, ব্রাউন, ইয়েল, হার্ভার্ড, এমারসন, এনওয়াইইউ, জর্জটাউন, আমেরিকান, ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ড, জনস হপকিনস, টাফটস, কর্নেল, ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়া, প্রিন্সটন, টেম্পল, নর্থইস্টার্ন, এমআইটি, দ্য নিউ স্কুল, ইউনিভার্সিটি অব রোচেস্টার, ইউনিভার্সিটি অব পিটসবার্গ, ক্যালিফোর্নিয়া স্টেট পলিটেকনিক, ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়া, ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া লস অ্যাঞ্জেলেস, ইউনির্ভাসিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া বার্কলে, ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটন, ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন, নর্থওয়েস্টার্ন, ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি সেন্ট লুইস, ইন্ডিয়ানা ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান, ওহাইও স্টেট, ইউনিভার্সিটি অব মিনেসোটা, মায়ামি ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অব ওহাইও, ইউনিভার্সিটি অব শিকাগো, এমোরি, ইউনিভার্সিটি অব নর্থ ক্যারোলাইনা, ইউনিভার্সিটি অব জর্জিয়া এথেন্স, ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস।

দানা বাঁধছে বিক্ষোভ
এদিকে এ বিক্ষোভ যুক্তরাষ্ট্রের সীমানা পেরিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের অন্তত আরও ছয় দেশে। যুক্তরাজ্যের লিডস বিশ্ববিদ্যালয়, ইউসিএল ও ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফিলিস্তিনপন্থীরা বিক্ষোভ করেছেন। তাঁবু গেড়ে আন্দোলন শুরু হয়েছে কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের কিউবেক ক্যাম্পাসে। দেশটির মন্ট্রিলের কনকর্ডিয়া বিশ্ববিদ্যালয়েও ফিলিস্তিনপন্থীরা বিক্ষোভ করছেন। বিক্ষোভ হয়েছে মিসরের আমেরিকান ইউনিভার্সিটি জন কায়রো ক্যাম্পাসে।

এছাড়া ফ্রান্সের সায়েন্সেস পো অ্যান্ড সারবোন ও ইনস্টিটিউট অব পলিটিক্যাল স্টাডিজ ক্যাম্পাস এবং ইতালির স্যাপিয়েঞ্জা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও ছড়িয়ে পড়েছে বিক্ষোভ। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয় ও মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও হয়েছে বিক্ষোভ।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence