শরীরে আগুন দেওয়া সেই মার্কিন সেনার নামে ফিলিস্তিনে সড়ক

অ্যারন বুশনেল
অ্যারন বুশনেল  © সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের প্রতিবাদে ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হন এক মার্কিন সেনা। তার প্রতি সম্মান জানিয়ে অ্যারন বুশনেল নামে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর এলাকার জেরিকো শহরে  একটি সড়ক উদ্বোধন করা হয়েছে।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান বলছে, রোববার (১০ মার্চ) সড়কটি উদ্বোধন করেন জেরিকোর মেয়র আবদুল করিম সিদর। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমরা তাকে চিনতাম না, তিনিও আমাদের চিনতেন না। আমাদের মধ্যে কোনো সামাজিক, অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক বন্ধন গড়ে ওঠেনি; তবে একটি জায়গায় আমরা এক— সেটি হলো স্বাধীনতার প্রতি ভালবাসা এবং (গাজায়) হামলার বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া।’

যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন ২৫ বছর বয়সী অ্যারন। গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানের প্রতিবাদে গত মাসে ওয়াশিংটনে ইসরায়েলি দূতাবাসের সামনে নিজের শরীরে আগুন দেন এই সেনা সদস্য। এই ঘটনার আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভে এসে তিনি বলেন, 'আমি কোনোভাবেই গাজায় গণহত্যাকারীদের অংশ হবো না এবং ফিলিস্তিনের জনগণের স্বাধীনতা আন্দোলনকে সমর্থন করি। সংক্ষিপ্ত ওই বক্তব্যের পর তিন বার চিৎকার করে ‘ফিলিস্তিন স্বাধীন হোক’ স্লোগান দিয়ে নিজ গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন অ্যারন।

পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় অ্যারনের। জেরিকো শহরের বাসিন্দারা অ্যারন বুশনেলের আত্মত্যাগকে ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সংহতির সবচেয়ে শক্তিশালী প্রকাশ হিসেবে দেখছেন। শহরের এক কাউন্সিলর আমানি রায়ানের জন্ম ও বেড়ে ওঠা গাজায়। ১৯ বছর বয়সে পড়াশোনার জন্য পশ্চিম তীরে এসে সেখানেই স্থায়ী হন তিনি।

ব্রিটিশ গণমাধ্যমকে আমানি রায়ান বলেন, ‘তিনি (অ্যারন) তার সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ উৎসর্গ করেছেন। গাজার শিশুদের জন্য এই মানুষটি নিজের সব কিছু দিয়ে গেছেন।’ অ্যারনের আত্মহত্যাকে অবশ্য মার্কিন সমালোচকদের একাংশ দেখছেন মানসিক অসুস্থতা হিসেবে। তারা বলছেন, অ্যারনের এই পদক্ষেপ নেওয়া যতখানি রাজনৈতিক প্রতিবাদ, তার চেয়েও বেশি মানসিক সমস্যা-অস্থিরতার লক্ষণ।


সর্বশেষ সংবাদ