ডেক্সামেথাসোন করোনার প্রাথমিক স্টেজে ব্যবহারে ক্ষতি করতে পারে

  © ফাইল ফটো

ইউকের ট্রায়ালে দেখা গেছে ডেক্সামেথাসোন উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা করোনা রোগীর, মানে যাদের অক্সিজেন সাপোর্ট লাগে তাদের ক্ষেত্রে সিগনিফিক্যান্টলি মৃত্যুহার কমায়। ডেফিনিটলি এটা একটা ভাল নিউজ। কিন্তু কিছু বাংলা মিডিয়া যেভাবে মিসলিডিং হেডিং দিয়ে হাইপ তৈরি করছে, তাতে এখানে সেলফ মেডিকেশন এবং প্যানিক বায়িং এর আশংকা দেখা দিচ্ছে।

এটা মাথায় রাখতে হবে ডেক্সামেথাসোন করোনার সিভিয়ার কেইসে কাজ করবে, কিন্তু প্রাথমিক স্টেজে কাজ করবে না। সিভিয়ার কেইসে সাইটোকাইন স্টর্ম হয়, যা হাইপার-ইনফ্লামেশন তৈরি করে। এই অতিরিক্ত ইমিউন রিয়্যাকশন কমানোর জন্যই ডেক্সামেথাসোন দেয়া হয়, যা সাইটোকাইন স্টর্ম কমাতে হেল্প করে।

কিন্তু করোনার প্রাথমিক স্টেজে এই ডেক্সামেথাসোন দিলে কাজ তো করবেই না, উল্টা ক্ষতি হবে দু’ভাবে। প্রথমত, এই ড্রাগ যেহেতু বডির ইমিউনিটি এবং ইনফ্লামেশন কমায়, ফলে ভাইরাসের বিরুদ্ধে বডির প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে। দ্বিতীয়ত, এই ড্রাগ এর সাইড ইফেক্টও অনেক।

ফলে কেবলমাত্র ‍অক্সিজেন সাপোর্টে থাকা রোগীর ক্ষেত্রে ক্লিনিশিয়ানের তত্ত্বাবধানে এটা ব্যবহার করা যাবে। কোনভাবেই নিজে নিজে সেবন করা এবং বাজার থেকে কিনে ঘরে মজুত করা যাবে না। নিজে নিজে যখন তখন খাওয়া আত্মঘাতী হবে। ওষুধ খাবার না যে, আপনি খুশিমত যখন তখন খাবেন।

মূল কথা হচ্ছে, হালকা উপসর্গ থাকলে অর্থাৎ যাদের শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে অক্সিজেন সাপোর্ট অথবা ভেন্টিলেটর’র দরকার নেই, তাদের ক্ষেত্রে ডেক্সামেথাসোন কাজ করবে না। আমার শংকা হচ্ছে, মিডিয়া হাইপের কারনে পাবলিক সামান্য উপসর্গ দেখা দিলেই নিজে নিজে খেয়ে নিজের বডি ইমিউনিটি দুর্বল করে ফেলবে এবং তখন উল্টা ভাইরাস প্রতিরোধে তা নেগেটিভ হবে।

ওষুধ এর ক্ষেত্রে ডোজ এবং কোন স্টেজে খাওয়া হবে তা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিছু কিছু ওষুধ রোগের স্টেজ এর উপর নির্ভর করে। করোনার ক্ষেত্রে ডেক্সামেথাসোন এরকমই একটা ওষুধ।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, ক্লিনিক্যাল ফার্মেসী অ্যান্ড ফার্মাকোলজি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

(ফেসবুক থেকে নেওয়া)


সর্বশেষ সংবাদ