বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ

ভেরিফিকেশনে বছর পার, সুপারিশপ্রাপ্তদের ক্ষোভ বাড়ছে

লোগো
লোগো  © ফাইল ছবি

দীর্ঘ আন্দোলন-সংগ্রামের পর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অর্ধ লাখের বেশি শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ছিল ২০২১ সালের অন্যতম ঘটনা। তবে প্রিলি-লিখিত ও ভাইভার ধাপ পার করলেও ভেরিফিকেশন শেষ না হওয়ায় ৩৮ হাজার ২৮৬ জন চাকরিপ্রার্থীর অপেক্ষা দীর্ঘায়িত হচ্ছে। ​চাকরিতে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েও কাজে যোগ দিতে না পারায় হতাশ নিয়োগের জন্য সুপারিশ পাওয়া চাকরিপ্রত্যাশীরা।

নিয়োগ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, নিয়োগের প্রাথমিক সুপারিশ পাওয়া প্রার্থীদের ভেরিফিকেশন কার্যক্রম চলছে। তবে সবার পুলিশ ভেরিফিকেশন শেষ হয়নি। ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া শেষ হলে নিয়োগপ্রক্রিয়া শেষ হবে। তাদের দাবি, আন্তরিকতা নিয়েই পুলিশ প্রতিবেদন শেষ করার কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। 

এদিকে চাকরির জন্য প্রাথমিকভাবে সুপারিশ পাওয়া অনেক প্রার্থী পুলিশ ভেরিফিকেশন নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তারা বলছেন, শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ ভেরিফিকেশনের বিষয়টি ছিল না। পুলিশ ভেরিফিকেশন না থাকায় প্রথম গণবিজ্ঞপ্তিতে চূড়ান্ত ফল প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল এবং দ্বিতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে ১৫ দিনের মধ্যে নিয়োগ দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: বেসরকারি শিক্ষকদের বদলির ব্যবস্থা চায় এনটিআরসিএ

প্রার্থীরা জানান, তিন বছর অতিবাহিত হলেও তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তির কার্যক্রম শেষ করতে পারেনি এনটিআরসিএ। চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগ না পাওয়ায় হতাশা ও অনিশ্চয়তায় দিন পার করছেন তারা। সব ধাপে উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগ না পাওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন প্রার্থীরা। এভাবে আর কত অপেক্ষা করতে হবে সেই প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষে কাছে।

এ প্রসঙ্গে তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে সুপারিশ পাওয়া প্রার্থী মো. আলী জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং এনটিআরসিএ চাইলে ভেরিফিকেশন চলমান রেখেও সুপারিশপত্র দিতে পারে। তবে সেটি তারা করছে না। কবে সবার ভেরিফিকেশন শেষ হবে আর কবে যোগদান করতে পারবো সেই অনিশ্চয়তা কাটছে না।

তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে সুপারিশ পেয়ে বেসরকারি এনজিওর চাকরি ছেড়ে দিয়েছি জানিয়ে আরেক প্রার্থী মো. জয়নাল জানান, বেসরকারি একটি এনজিওতে চাকরি করতাম। তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তিতে সুপারিশ পাওয়ার পর চাকরি ছেড়ে দিয়েছি। ৩ মাসের বেশি সময় হয়ে গেলেও এখনো চূড়ান্ত যোগদানপত্র পাইনি। পরিবার নিয়ে খুব কষ্টের মাঝে দিন পারতে করতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন: ১৭তম নিবন্ধনের নতুন বিজ্ঞপ্তি জানুয়ারি অথবা ফেব্রুয়ারিতে

এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যৌথভাবে ভেরিফিকেশন কার্যক্রম পরিচালনা করায় কোনো একক প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চূড়ান্ত সুপারিশপত্র দেওয়ার বিষয়ে বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ। তারা বলছেন, দুই মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক) ফৌজিয়া জাফরীন দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সুপারিশপ্রাপ্তদের ভেরিফিকেশন কার্যক্রম দ্রুত শেষ করা হবে। এর বেশি কিছু বলা সম্ভব নয়।

আরও পড়ুন: চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি দ্রুত হতে পারে যে প্রক্রিয়ায়

এনটিআরসিএ সূত্র জানায়, সারা দেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ৫৪ হাজার ৩০৪ জন শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০১৮ সালের ২৮ নভেম্বর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ১৫তম শিক্ষক নিবন্ধনের এই প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২০১৯ সালের ১৯ এপ্রিল। প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষা হয় ২০১৯ সালের জুলাইয়ে। এরপর মৌখিক পরীক্ষা হয় ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত। প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয় গত বছরের ১৫ জানুয়ারি।

এদিকে, ২০২১ সালের ৩০ মার্চ ৫৪ হাজার শূন্যপদের বিপরীতে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তবে বিভিন্ন নিবন্ধনের রিটকারীদের জন্য ২ হাজার ২০০টি পদ সংরক্ষণ করে বাকি পদগুলোতে শিক্ষক নিয়োগের উদ্যোগ নেয়া হয়। আবেদন না পাওয়ায় এবং মহিলা কোটায় যোগ্য প্রার্থী না থাকায় ১৫ হাজার ৩২৫টি পদ ফাঁকা রেখে ৩৮ হাজার ২৮৬ পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। তবে ৬ হাজার ৩ জন প্রার্থী পুলিশ ভেরিফিকেশনের ফরম পূরণ করে না পাঠানোয় ৩২ হাজার ২৮৩ জনের পুলিশ ভেরিফিকেশন করা হচ্ছে। এই কার্যক্রম শেষ না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রার্থীরা।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence