‘ভুল হতে পারে, দুঃখ প্রকাশ করলেই হয়’

প্রধানমন্ত্রীর শপথ মঞ্চে ‘মুজিববর্ষ’ বানান ভুল ছিল
প্রধানমন্ত্রীর শপথ মঞ্চে ‘মুজিববর্ষ’ বানান ভুল ছিল  © ফাইল ছবি

বিজয়ের ৫০ বছর পূর্তিতে সারা দেশের মানুষকে শপথ পাঠ করিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৬ ডিসেম্বর) বিকালে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে শপথ করান। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী যে ডায়াসে দাঁড়িয়ে দেশবাসীকে শপথ পড়িয়েছেন, সেই ডায়াসে মুজিববর্ষ বানান-ই ছিল ভুল।

তবে ভুল যে করো হতেই পারে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক উপ-প্রেস সচিব আশরাফুল আলম খোকন। তার মতে, ভুল করার পর তার স্বীকার নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করলেই হয়ে যায়।

গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ উপলক্ষে ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ শিরোনামে দুইদিনের বিশেষ অনুষ্ঠানমালা শুরু হয়।

পড়ুন: শপথ মঞ্চের ভুল ‘যান্ত্রিক ত্রুটি’: কর্তৃপক্ষ

প্রথম দিন বিকেলে এ অনুষ্ঠানে দেশবাসীকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ মঞ্চের ডায়াসে ‘সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষের শপথ’ লেখার বদলে লেখা হয় ‘সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিবর্ষের শপথ’।

জাতির পিতার নামের এমন বিকৃতির ঘটনা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে।প্রশ্ন তুলছেন এমন জাতীয় অনুষ্ঠানের দায়িত্বরতদের দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজের।

এ বিষয়ে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে আশরাফুল আলম খোকন লিখেছেন, যে কারো ভুলও হতেই পারে। ওইটা দোষের কিছু না। ভুল স্বীকার করে নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করলেই হয়। তবে যে ভুলটি হয়েছে সেটা অনিচ্ছাকৃত ভুল- সেটাই ভাবতে চাই।

পড়ুন: জাতিকে শপথ পাঠ করালেন প্রধানমন্ত্রী (ভিডিও)

‘‘কিন্তু যে ডায়াসে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা এবং যে অনুষ্ঠান, সেই ‘মুজিব বর্ষ’ বানানটিই ভুল করা- তাও আবার মেইন জায়গায়, যে ছবিটি বিশ্ববাসী দেখেছে সেখানে ভুল করা ক্ষমার অযোগ্য।’’

তিনি লিখেন, নতুন বানানরীতি হলে সেটারও ব্যাখ্যার প্রয়োজন ছিল। মুজিববর্ষের শেষে এসে হুট করে পরিবর্তন যুক্তিসঙ্গত কিনা তাও বুঝতেছিনা। আর এই মৌলিক বিষয়গুলো শুধু ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের উপর ছেড়ে দেয়া সেটাও বড় গাফলতি। কমিটির সরাসরি তদারকি দরকার ছিল।

পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর শপথ মঞ্চে ‘মুজিববর্ষ’ বানান ভুল

এদিকে, ভুলটিকে ‘যান্ত্রিক ত্রুটি’ উল্লেখ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি একটি ব্যাখ্য দিয়েছে। কমিটির মিডিয়া কনসালট্যান্ট আসিফ কবির সাংবাদিকদের বলেন, বোর্ডটা এলইডিতে করা। যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য একটি ‘ব’ ফুটে ওঠেনি। আয়োজকদের দৃষ্টিতে আসার পরপরই অনুষ্ঠানের বিরতির সময়ে এই ত্রুটি দূর করা হয়েছে।

ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, ‘‘আমরা একটি চিপ-এ পিসি থেকে ট্রান্সফার করে লেখাটি উৎকীর্ণ করেছি। ডিভাইস ট্রান্সফারের একপর্যায়ে একটি ‘ব’ অক্ষর অমিট হয়ে গেছে। আমরা পিসিতে চেক করে দেখেছি এটা ঠিকই আছে। অ্যাডভান্স টেকনোলজির বিষয়টি হয়ত স্যুট করেনি।

এলইডিতে পরিস্ফুটন করে লেখাটি তোলা হয়েছে। পোডিয়ামের মনিটরেই আমরা ত্রুটিপূর্ণ বানান দেখতে পাই। এমন প্রাযুক্তিক গোলমালের বিষয়টি দৃষ্টিতে আসার পরপরই নামাজের বিরতিতে মাধ্যমটি পরিবর্তন করে ত্রুটি ঠিক করা হয়। অর্থাৎ প্রথমে এলইডিতে পরে ম্যানুয়ালি উৎকীর্ণ করা প্লেট প্রতিস্থাপন করা হয়।’’

তবে এ ধরনের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নয় প্রধানমন্ত্রী সাবেক উপ-প্রেস সচিব খোকন। তিনি তার স্ট্যাটাসে কর্তৃপক্ষের ব্যাখ্যার প্রতিক্রিয়ায় লিখেছেন, এই ব্যর্থতা ঢাকতে উদযাপন কমিটি যে ব্যাখ্যা দিয়েছে এর ভাষা দেখে আমার মাথা এখনো ঘুরতেছে। জাতির ভাগ্য ভালো আরো বড় কোনো সর্বনাশ হয়নি।


সর্বশেষ সংবাদ