করোনার বন্ধে বেকার শিক্ষার্থীদের হতাশা বাড়ছে, বলছেন বিশেষজ্ঞরা

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি  © ফাইল ফটো

করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে দেশের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান। প্রায় বন্ধ রয়েছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ প্রক্রিয়াও। এমতাবস্থায় চরম হতাশায় দিন কাটাচ্ছে শিক্ষার্থী ও বেকার তরুণরা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা মহামারীজনিত কারণে জনগণ দরিদ্র হয়ে পড়ছে এবং তাদের মূলধন ও চাকরি হারাচ্ছে। এটি সরাসরি ছাত্রদের জীবনকে প্রভাবিত করে। ফলে শিক্ষার্থীরা হতাশায় পড়েছে।

জানা গেছে, মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে গতবছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। অনেক শিক্ষার্থী ও চাকরীপ্রত্যাশী তরুণ ঢাকা বা বিভিন্ন শহরে থেকে প্রাইভেট-টিউশনি বা পার্ট টাইম কাজের টাকায় নিজেদের লেখাপড়াসহ পরিবারকেও সাহায্য করতো। কিন্তু করোনার কারণে অনেকের টিউশনিসহ পার্ট টাইম কাজের সুযোগ প্রায় বন্ধ রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তাদের অনেকেই এখন বাড়িতে অবস্থান করছে। যা পরিবারের উপর একটি বাড়তি চাপ নিয়ে এসেছে।

মহামারীতেই বয়স শেষ, হতাশা আর দুশ্চিন্তায় জর্জরিত বেকাররা

অন্যদিকে অনলাইনে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের ক্লাস চললেও ডিজিটাল ডিভাইস না থাকায় এবং ইন্টারনেট ব্যয় মেটাতে না পেরে অনেকেই অনলাইন ক্লাসে যুক্ত থাকতে পারেননি। আবার অনলাইনে ক্লাস হলেও পরীক্ষা নেওয়ার জটিলতায় কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা এক বছরের বেশি সময়ের জটে পড়েছেন। চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু না হওয়ায় স্নাতক শেষ বর্ষে আটকে থাকা শিক্ষার্থীরা চাকরির জন্য আবেদনই করতে পারছেন না।

এছাড়া এক বছরের বেশি সময় ধরে বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষা বন্ধ থাকায় হতাশায় দিন কাটাচ্ছে চাকরিপ্রত্যাশী তরুণরা। আর যাদের বয়স শেষের দিকে তাদের অবস্থা আরো করুন! একদিকে চাকরি পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা, অন্যদিকে পরিবারের চাপে তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন।

এমতাবস্থায় নিজেদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চরম উৎকণ্ঠা ও মানসিক হতাশার মধ্য দিয়ে দিন পার করছেন শিক্ষার্থীসহ বেকার তরুণরা। দিন দিন বেড়েই চলছে তাদের হতাশা।

মনোবিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদরা বলছেন, একাকী জীবন, কষ্ট, সঠিক তদারকির অভাব, একাডেমিক জীবন শেষ হওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ এবং চাকরি না পাওয়া শিক্ষার্থীদের হতাশা ও মানসিক চাপের কারণ।

এ বিষয়ে বিশিষ্ট মনোবিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. মেহতাব খানম বলেন, করোনা মহামারীজনিত কারণে জনগণ দরিদ্র হয়ে পড়ছে এবং তাদের মূলধন ও চাকরি হারাচ্ছে। এটি সরাসরি ছাত্রদের জীবনকে প্রভাবিত করে। ফলে শিক্ষার্থীরা হতাশায় পড়েছে।

দেশে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং মনোবিজ্ঞানীদের অভাব রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, দেশে প্রায় ৩০০ মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং ৫০০ জনেরও কম মনোবিজ্ঞানী রয়েছেন। অল্প লোকবলের মাধ্যমে বিশালসংখ্যক শিক্ষার্থীর মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহ করা অসম্ভব। এমনকি নতুন প্রশিক্ষণও সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানের কোনো পথ দেখছি না।

এ বিষয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান করার চেষ্টা করছি। সব শিক্ষার্থীকে সুষ্ঠুভাবে সেবা দেওয়ার জন্য আরও জনশক্তি প্রয়োজন বলেও জানান তিনি।

ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পরামর্শ সেবা দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান জানান, তারা শিক্ষার্থীদের সমস্যাগুলো শুনতে এবং তা সমাধানে তাদের কাছে পৌঁছনোর চেষ্টা করছেন।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence