সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ‘মডেল নির্বাচন’ উপহার দিতে প্রশাসনের জিরো টলারেন্স ঘোষণা
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৩১ PM
আসন্ন ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর পরিবেশ নিশ্চিত করতে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নের ঘোষণা দিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার ও বিভিন্ন রেঞ্জের ডিআইজিরা। নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার, প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ, চিহ্নিত অপরাধীদের জামিন বন্ধ এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর জোর দেন তারা। তারা বলেন, প্রশাসনের লক্ষ্য একটি ‘মডেল নির্বাচন’ আয়োজন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের অডিটোরিয়ামে ডিসি-এসপি, সব রেঞ্জের ডিআইজি, বিভাগীয় কমিশনার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সম্মেলনে এসব বক্তব্য উঠে আসে।
সম্মেলনে ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি বলেন, আইজিপির নির্দেশনায় দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে এবং দলমত-নির্বিশেষে অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং এটি ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
আরও পড়ুন: কমিশন প্রমাণ করতে চায় অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়া সম্ভব: সিইসি
চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি জানান, প্রিজাইডিং অফিসারদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা জরুরি। একইসঙ্গে গ্রেপ্তারের পর রাজনৈতিক তদবিরের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে নির্বাচনী ব্যবস্থাপনায় দৃঢ়তা বজায় রাখার তাগিদ দেন তিনি। তার প্রত্যাশা, ২০২৬ সালের নির্বাচন ভবিষ্যত নির্বাচনগুলোর জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি, সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও বৈধ অস্ত্র জমা নিশ্চিত করাই প্রধান কাজ। নির্বাচনী বাজেট সময়মতো পাওয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব রোধের ওপরও গুরুত্ব দেন তিনি। ২০২৬ সালে একটি মডেল নির্বাচন আয়োজনের প্রত্যাশা জানান।
রাজশাহী পুলিশ কমিশনার জানান, সব স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ চলছে। এআই জেনারেটেড ছবি ও ভিডিওর অপব্যবহার বন্ধে বিটিআরসির সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। আচরণবিধি লঙ্ঘনে শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে তা অন্যদের জন্য প্রতিরোধক হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
খুলনা বিভাগীয় কমিশনার কুষ্টিয়ার দৌলতপুর এলাকায় সক্রিয় দুটি গ্রুপের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন। প্রয়োজনে ড্রোন ব্যবহারের পাশাপাশি উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে যৌথ মহড়ার প্রস্তাব দেন তিনি।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার জানান, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অপরাধীদের ঢালাও জামিন বন্ধে বিচার বিভাগের সঙ্গে সমন্বয়ের ওপর জোর দেন তিনি।
সিলেট বিভাগীয় কমিশনার বলেন, সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র ও অপরাধীদের চলাচল ঠেকাতে বিজিবি ডেপ্লয়মেন্ট জরুরি। সীমান্তসংলগ্ন কেন্দ্রগুলোর নিরাপত্তা বাড়ানো, অপরাধীদের মুভমেন্ট ট্র্যাক করা এবং জেলখানার ভেতর থেকে সংঘটিত অপরাধের বিষয়টি নজরদারিতে আনার কথা বলেন তিনি। চিহ্নিত অপরাধী ও ষড়যন্ত্রকারীরা যেন কোনোভাবেই জামিন না পায়; এ বিষয়ে কঠোর অবস্থানের কথা জানান তিনি।
সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা সম্মিলিতভাবে আশা প্রকাশ করেন, ২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচন ইতিহাসে একটি মাইলফলক হিসেবে স্থান পাবে।