ভেঙ্গে ফেলা হলো দেশের একমাত্র নৌকা জাদুঘর
- বরগুনা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৬:২৮ PM , আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২৫, ১১:০৭ AM
৫ আগস্ট অগণিত প্রাণ বিসর্জনের মাধ্যমে বিগত ১৬ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের অবসান ঘটিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তারই ধারাবাহিকতায় বরগুনায় ভেঙে ফেলা হয়েছে ‘বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘর’। আজ শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) ১১টার দিকে জাদুঘরটি ভেঙে ফেলা হয়।
২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর বরগুনা পৌর পুরানো গ্রন্থাগার ভেঙে তৈরি করা হয়েছিল নৌকা জাদুঘর। এবার সময়ের পরিবর্তনে ভেঙে ফেলা হলো জাদুঘরটি।
নৌকাকে নতুন প্রজন্মের কাছে পরিচিত করানোর পাশাপাশি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বরগুনায় নির্মাণ করা হয়েছিল দেশের প্রথম নৌকা জাদুঘর। ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর ১৬৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৩০ ফুট প্রস্থের নৌকার আদলে জাদুঘরটি উদ্বোধন করা হয়।
জাদুঘরটি ৭৫ ফুট ও গলুই ২৫ ফুট। তৎকালীন বরগুনা জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহর পরিকল্পনা ও তত্ত্বাবধানে জাদুঘরটি নির্মাণ করা হয়েছিল। ওই সময় জাদুঘরটির পাশাপাশি নৌকা গবেষণাকেন্দ্র, আধুনিক লাইব্রেরি, বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ কর্নার, শিশুদের বিনোদনের জন্য রাইড, থিয়েটার, ক্ষুদ্র ক্যাফেসহ নানা প্রতিষ্ঠান নির্মাণের আশ্বাস ছিল। তবে উদ্বোধনের চার বছরেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
পর্যটন উদ্যোক্তা আরিফুর রহমান বলেন,‘বরগুনা উপকূলীয় জেলা, চারপাশে নদীবেষ্টিত। নৌকা আমাদের ঐতিহ্য। তবে দলীয় প্রতীক হিসেবে না দেখে ঐতিহ্য হিসেবে ভাবলে নৌকা জাদুঘরটা রাখা যেত। হয়ত নামের পরিবর্তন করে নৌকা জাদুঘরটা টিকিয়ে রাখা হলে আমাদের উপকূলের ঐতিহ্য টিকে থাকতো। তবে এটা সরকারি সম্পত্তি, এটা ভাঙতে পারতো ডিসি। তিনি নতুন কোনও পরিকল্পনা বা ডিজাইন করে নতুন আঙ্গিকে করতে পারতো। বিএনপির উদ্যোগে ভেঙে ফেলা হয়েছে নৌকা জাদুঘর।’
বরগুনা জেলার ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুরাদুজ্জামান টিপন বলেন, ‘নৌকা জাদুঘরের নামে ১০ টা জাদুঘরের চাঁদা উঠানো হয়েছে। সরকারি সম্পত্তি দখল করে নৌকা জাদুঘর করা হয়েছে। তাই জনগণ এটা ভেঙে ফেলেছে।’
জাতীয়বাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক অ্যাডভোকেট মুরাদ খান বলেন, ‘নৌকা জাদুঘর এটাকে বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘর নাম দেওয়ার কারণে জনরোষ সৃষ্টি হয়েছে। জনগণ আগুন দিয়ে পোড়ানোর পর খালি হাতে ভাঙতে ব্যর্থ হলে সরঞ্জাম নিয়ে ভেঙে ফেলা হয়েছে। শহীদ জিয়া স্মৃতি পাঠাগার তৈরি করার দাবি জানাই জেলা প্রশাসকের কাছে।’
বরগুনা জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রেজবিউল কবির বলেন, ‘এখানে গণ পাঠাগার ছিল সেটা ভেঙে বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘর বানানো হয়েছে। এখান থেকে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। তৎকালীন সরকারের তেলবাজি করার জন্য বঙ্গবন্ধু নৌকা জাদুঘর বানানো হয়েছে। এখন জনগণ এটা ভেঙে ফেলছে। যারা ভাঙছে তারা দেশ প্রেমিক। জেলা প্রশাসকের নামে চাঁদাবাজি মামলা হবে আমি তার বাদী হবো। এখানে শহীদ জিয়া পাঠাগার বানানো হোক।’
এ বিষয়ে জানার জন্য জেলা প্রশাসককে ফোন দিলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।