নীলফামারীতে বিজয় মিছিলে নিজ দলের কর্মীদের পেটালেন জেলা ছাত্রদেলর সভাপতি!

  © সংগৃহীত

নীলফামারীতে বিজয় ও শান্তি মিছিলে গিয়ে জেলা ছাত্রদেলের সভাপতি সভাপতি মারুফ পারভেজ প্রিন্সের হামলার শিকার হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন বিএনপির শহীদ পরিবারের সদস্য এ্যাডভোকেট মো. আশিকুর রহমান (৩১)। আশিকুর রহমান ঢাকা হাইকোর্টের আইনজীবী।

আওয়ামী লীগ আমলে গুম হয়ে হত্যার শিকার ছাত্রদলের সাবেক নেতা আতিকুর রহমানের ছোটভাই তিনি। শহীদ পরিবারের সন্তানকে কোনো কারণ ছাড়াই বেদম প্রহারের ঘটনায় জেলায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছেন প্রহারের শিকার আশিক।

গত বৃহস্পতিবার (৮ আগষ্ট) দুপরে জেলা শহরে বিজয় ও শান্তি মিছিলে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক এবং রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মীরা এতে অংশ নেন। মিছিল শেষে এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।

২০১৩ সালের ১৪ ডিসেম্বর নীলফামারীর রামগঞ্জে সাবেক এমপি আসাদুজ্জামান নূরের ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ছাত্রদলের টুপামারী ইউনিয়ন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান ২০১৪ সালের ১৪ জানুয়ারিতে গুমের শিকার হন। এর পরবর্তীতে ২০ জানুয়ারি সৈয়দপুরের নাড়িয়া ডাঙ্গা থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।

মো. আশিকুর রহমান বলেন, গত বৃহস্পতিবার সকাল ৭ টায় ঢাকা থেকে আমার নিজ বাড়ী রামগঞ্জে আসি। তারপর ১০ টার দিকে নীলফামারী জেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ভাইয়ের সাথে কথা হয়, তিনি আমাকে নীলফামারিতে শান্তি সমাবেশে যেতে বললে আমি সমাবেশে অংশ নেই। 

কর্মসূচি শেষে বাসায় ফেরার পথে আমার ছোট ভাই আব্দুল ওয়াদুদের সাথে ছাত্রদল সভাপতি সাথে পুর্ব শত্রুতার জের ধরে আমাকে তুলে নিয়ে জেলার পৌরমার্কেটের পিছনে মাঠে নিয়ে ছাত্রদলের সভাপতি মারুফ পারভেজ প্রিন্স আমার গলা টিপে ধরেন। এসময় তার নির্দেশে আরো ২০/২৫ জন আমাকে এলোপাথাড়ি ভাবে পেটাতে থাকে।

আশিক বলেন, আমি বিএনপির শহীদ পরিবারের সন্তান জানালে ছাত্রদলের সভাপতি মারুফ পারভেজ প্রিন্স আমাকে বলেন, তোকেও আজ শহীদ করে ফেলব। এই বলে আমাকে কিল, ঘুষি ছাড়াও পিটিয়ে পিঠে জখম করা হয়। জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি বাবলা এসে উদ্ধার করেন। পরে আমি জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নেই।

আশিকুর রহমান বলেন, যে দলের জন্যে আমার ভাই জীবন দিলো, যে দলে কর্মীদের আমি বিনা খরচায় দলের ক্রান্তিকালে জামিন করালাম, যে দলের কারনে আমার ছোট ভাই ৫ বার জেল খাটলো, যে দলের কারনে আমি নিজে মামলা আসামী হয়েছি- সেই দলের জেলা সভাপতি আমাকে বেধড়ক পিটিয়েছে। আমার মোবাইল, ওয়ালেটসহ সবকিছু ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে। আমি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও দেশনায়ক তারেক রহমানের কাছে বিচার চাই।

আহতের ছোট ভাই আব্দুল ওয়াদুদ বলেন, ‘আমার ভাই শহীদ হল, ৫ বার জেল খাটলাম, ৩ বছর বাড়িছাড়া থাকলাম, জেলখানায় বসে এইচ এস সি পরীক্ষা দিলাম আর এখন এমন ভালো সময়ও আমার ভাই রক্তাক্ত হল। দেশনায়ক তারেক রহমানের কাছে বিচার দিলাম।’

বিএনপির শহীদ পরিবারের সদস্যকে পেটানোর অভিযোগ প্রসঙ্গে নীলফামারী জেলা ছাত্রদেলের সভাপতি মারুফ পারভেজ প্রিন্স বলেন, জুলাই ১৩ তারিখে আশিকসহ ওদের কয়েকজন আমার উপর হামলা করে। বৃহস্পতিবার কয়েকজন মিলে আশিককে ধরলে আমি তাকে উদ্ধার করি। আমার উপর এগুলো ষড়যন্ত্র চলছে। 


সর্বশেষ সংবাদ