সময় পেলেই বিদ্যালয়ে ক্লাস নিতে যান যে চেয়ারম্যান

মোজাফফরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির আলম ভূঞা ক্লাস নিচ্ছেন।
মোজাফফরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির আলম ভূঞা ক্লাস নিচ্ছেন।   © টিডিসি ফটো

হাতে সময় পেলেই ছুটে যান কাছের কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। প্রতিষ্ঠান প্রধানের অনুমতি নিয়ে ঢুকে পড়েন কোনো ক্লাসে। শুরু করেন পাঠদান। একজন পেশাদার শিক্ষকের মতোই কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশে গিয়ে মজার সব গল্পের মাধ্যমে শিক্ষাদানে বেশ পটু তিনি। তিনি হচ্ছেন নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার মোজাফফরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাকির আলম ভূঞা। 

শুধু পড়ানোর ক্ষেত্রে নয়, শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতিতেও নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। শিক্ষিত এই চেয়ারম্যান  জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূগোল বিষয়ে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। লেখাপড়া শেষ করে উপজেলার গোপালশ্রম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসাবে শিক্ষকতা করেছেন। শিক্ষকতা করার সুপ্ত বাসনা এখনো হৃদয়ে ধারণ করেন তিনি। আর এজন্য চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি সুযোগ পেলেই চলে যান কোনো স্কুলে।

বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১০টার দিকে দেখা যায় উপজেলার বড়তলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাক প্রাথমিক, প্রাথমিক  ও ২য় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের  ক্লাস নিচ্ছেন তিনি। এসময় স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছাত্তার ও শ্রেণি শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী রাহুল মিয়া ও হেপী আক্তার বলেন, চেয়ারম্যান স্যার আমাদের গণিত ক্লাস নিয়েছেন। ক্লাসে এসে স্যার আমাদের বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন এবং মজার গল্প বলেছেন। সেই সঙ্গে কীভাবে পড়া মনে রাখা যায়, সেই নিয়মও শিখিয়ে দিয়েছেন।’

এই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস ছাত্তার বলেন, ‘চেয়ারম্যান সাহেব সময় পেলেই মাঝেমধ্যে হঠাৎ করে স্কুলে আসেন। বিভিন্ন ক্লাসে গিয়ে পাঠদান করান। স্কুল আঙিনা ঘুরে দেখেন। একই সঙ্গে শিক্ষা বিষয়ক পরামর্শ দেন। মনে হয়, যেন শিক্ষা ব্যবস্থায় আমরাও নতুন কিছু শিখছি।শেষে তিনি ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের মাঝে চকলেট বিতরণ করেন।

পাঠদানের বিষয়ে চেয়ারম্যান জাকির আলম ভূঞা  বলেন, আমি নিজেও আগে শিক্ষক ছিলাম তাই বাচ্চাদের পড়াতে খুব ভালো লাগে। শিক্ষাজ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়ার মতো আনন্দ আর কিছুতে নেই। ছোট ছোট বাচ্চাদের পড়ানো অসাধারণ ব্যাপার। এতে দুটি লাভ হয়।  বাচ্চাদের পড়াতে পারছি আবার ওই স্কুলে কোনো সমস্যা আছে কি না, সেটাও সরেজমিনে দেখতে পারছি। তিনি আরো বলেন, উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতি গঠনে শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী এবং দেশের একজন নাগরিক হিসেবে শিক্ষা খাতের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারা আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। আমি সুযোগ পেলেই বিভিন্ন বিদ্যালয়ে ক্লাস নিয়ে থাকি বলেও জানান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ