বিয়ে না করেও সন্তানের নামে ভাতা তুলছেন শিক্ষিকা!

আরাজি পিপুলবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ইনসেটে শিক্ষিকা রুনা খাতুন
আরাজি পিপুলবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ইনসেটে শিক্ষিকা রুনা খাতুন  © সংগৃহীত

কুড়িগ্রামে বয়স নিয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পেয়েছেন এক শিক্ষকা। একইসঙ্গে বিয়ে না করেও ভুয়া স্বামী ও সন্তান দেখিয়ে ২০১৭ সাল থেকে সন্তানের নামে ৫০০ টাকা হারে শিক্ষা ভাতা তুলেছেন তিনি।

শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার লুৎপর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে এমন প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়ে শিক্ষকদের ইলেকট্রনিক ফাউন্ডস ট্রান্সফারে (ইএফটি) তথ্য পূরণ করতে গিয়ে।

অভিযুক্ত ব্যক্তি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার চাকলি গ্রামের বখত জামান ও রেনু বেগম দম্পতির মেয়ে রুনা খাতুন। তিনি কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের আরাজি পিপুলবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুল-শিক্ষকা।

জানা গেছে, ২০১০ সালে বেসরকারিভাবে শুরু হয় উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের আরাজি পিপুলবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়। পরে ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হয়। সে সময় বিদ্যালয়ে থাকা চার শিক্ষকও সরকারি নিয়োগ পান। এদের একজন সহকারী শিক্ষকা রুনা খাতুন। এ ছাড়া রুনা ২০১০ সালে সিরাজগঞ্জের আরিয়া মহন স্কুল থেকে মানবিক বিভাগে জিপিএ-৩.৬৯ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। এসএসসি সনদ অনুযায়ী তার জন্মতারিখ ১৩ আগস্ট ১৯৯৫ (২৭ বছর)। অথচ বিদ্যালয় জাতীয়করণের সময় তিনি জন্মতারিখ ১৩ আগস্ট ১৯৯০ সাল ব্যবহার করে নিয়োগ নেন।

এদিকে চলতি বছরের জুলাইয়ে শিক্ষকদের ইলেকট্রনিক ফাউন্ডস ট্রান্সফারের (ইএফটি) মাধ্যমে বেতন ভাতা দেওয়ার সময় তথ্য আপলোড করতে গিয়ে ধরা পড়ে তার এমন প্রতারণা। এ নিয়ে গত ৪ জুলাই তাকে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।

আরও পড়ুন: রাজধানীতে সড়ক দুর্ঘটনায় বিজ্ঞান কলেজের শিক্ষার্থী নিহত

শিক্ষকা রুনা খাতুন ভুয়া জন্ম সাল ও অবিবাহিত থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, বয়স ঠিকঠাক করে শোকজের জবাব দিয়েছি। তিনি আরও স্বীকার করেন, বিয়ে না করে ও ভুয়া স্বামী ও সন্তান দেখিয়ে সাড়ে পাঁচ বছর ধরে তুলছেন শিক্ষা ভাতা।

প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান বলেন, স্কুলটি যখন বেসরকারি ছিল, তখনই একসঙ্গে আমরা চারজন ২০১০ সালে শিক্ষক নিয়োগ পাই। পরে ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হয়। কিন্তু সহকারী শিক্ষকা রুনার জন্মসাল ভুয়া ছিল তা আমরা কাগজপত্র দেখে টের পাইনি। ইএফটি পূরণের সময় বিষয়টি সবার নজরে আসে। বর্তমানে এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা তদন্ত করছেন।

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসার লুৎপর রহমান বলেন, তদন্ত শেষ হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনা এলেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে


সর্বশেষ সংবাদ