সরকারি শিক্ষকদের ন্যায় এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বেতন কেন নয়?

নাজমুল  হাসান গোলজার
নাজমুল  হাসান গোলজার  © ফাইল ফটো

দেশের নাগরিকের শিক্ষার অধিকার বা শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা ও অর্থনৈকিত অধিকারের বিষয়ে মূল্যায়নের বৃহত্তর উপলদ্বি এখনো জাগ্রত হয়নি। তাই মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষকরা এখনো বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত, বিশেষ করে বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা। বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের ন্যায্য দাবির জন্য আন্দোলন করে আসছেন দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে। এই আন্দোলনের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে তাদের যৌক্তিক দাবি ও অধিকার আদায় করতে সক্ষম হয়েছেন।

হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে স্কেলের শতভাগ বেতন, পাঁচ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি, ২০ শতাংশ বৈশাখী ভাতা ঘোষণা দিয়েছেন এবং তা প্রদানের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করেছেন। যার  জন্য দেশের ৬ লক্ষাধিক এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা বাঁধনে আবদ্ধ হয়েছেন।

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতা ছাড় নিয়ে চলে রীতিমত তামাসা। তীর্থের কাকের মত সংবাদপত্রের মলিন কাগজ কিংবা ফেসবুক আপডেটের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় কখন ছাড় হবে বেতন-ভাতা? স্বাধীনতার পর কত সরকার ক্ষমতায় আসীন হলো- চলে গেল; কিন্তু এমপিওভুক্ত শিক্ষক - কর্মচারীদের ভাগ্য নিয়ে তামাসার সমাপ্তি হয়নি অদ্যবধি। এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন - ভাতা রাজস্ব খাতে স্থানান্তরিত হয় নি এটি আমাদের ব্যর্থতা, বেসরকারি শিক্ষকদের অধিকার আদায়ের জন্য গঠিত বিভিন্ন সংগঠনের সংগঠকদের ব্যর্থতা, ব্যর্থতা সাধারণ শিক্ষকদের যারা অনেকেই ধরে বসে সব পেতে চাই, আন্দোলনের ডাক দিলে মাঠে ময়দানে আসতে চাই না বা আসেন না। এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সংগঠনগুলো এক ও অভিন্ন দাবি নিয়ে একই মঞ্চে আসতে পারে নি। এই সুযোগে সরকার আমাদের সাথে বিমাতা সুলভ আচরণ করে যাচ্ছে।

একই সিলেবাসে পাঠদানরত সরকারি শিক্ষকরা যদি মাসের ০১ তারিখে বেতন পায় এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা পাবেন না কেন? এই প্রশ্নের সুরাহা আন্দোলনরত কোন শিক্ষক নেতা সরকারের নিকট তুলে ধরতে পারেননি। মাঝে মাঝে মনে হয় এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা ভিন্ন গ্রহের মানুষ।

এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, বোনাস সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে পৌঁছাতে বর্তমান অনলাইন ব্যাংকিং যুগে ১০ হতে ১২ দিন ক্ষেত্র বিশেষ আরো বেশি সময় লাগে। ডিজিটাল যুগে এমন ব্যাংকিং পদ্ধতিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা অবাক। শিক্ষা মন্ত্রণালয় তথা শিক্ষা অধিদপ্তরের এমন খাম খেয়ালিপনা আচরণে ৬ লক্ষাধিক এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা আশাহত ও হতাশ।

এমতাবস্থায়  এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা, বোনাস সমূহ দ্রুত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে স্থানান্তর ও সরকারি শিক্ষকদের মত একই দিনে প্রদানের নিমিত্তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক হিসাববিজ্ঞান বিভাগ, তেঁতুলঝোড়া কলেজ, সাভার, ঢাকা।


সর্বশেষ সংবাদ