চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন অনিশ্চিত শাহ মখদুম মেডিকেলের ৪২ শিক্ষার্থীর

সংবাদ সম্মেলন
সংবাদ সম্মেলন  © সংগৃহীত

পত্রিকায় চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে অনুমোদনহীন রাজশাহীর বেসরকারি শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছিল শিক্ষার্থী। শুরুর দিকে শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত এবং রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত বলা হলেও পরে জানা যায় কলেজটি বিএমডিসি কর্তৃক অনুমোদন নেই। এতে কলেজে ভর্তি হওয়া ৪২ জন ভর্তি হওয়া মেডিকেল শিক্ষার্থীর চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন কার্যালয়ে ভুক্তভোগী ৪২ জন শিক্ষার্থী এক সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় অভিভাবকরাও সঙ্গে ছিল। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, মেডিকেল কলেজের নবম ব্যাচের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মুন্না।

এ সময় শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ১৫ থেকে ১৮ লাখ টাকা নিয়েছে। মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান মো. জিল্লার রহমান (সমাজ কল্যাণ বিভাগের সাবেক সচিব) ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান স্বাধীনের প্রতারণার শিকার হয়েছেন তারা। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন রক্ষার্থে অতি দ্রুত নবায়ন যুক্ত মেডিকেলে মাইগ্রেশনের দাবি জানানো হয়।

লিখিত বক্তব্যে মেডিকেল শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান মুন্না বলেন, বাবা-মা লাখ লাখ টাকা খরচ করে পড়াশোনা করতে পাঠিয়েছেন। কিন্তু এখন চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান জিল্লার রহমান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান স্বাধীনের প্রতারণার কারণে।

শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজে ২০২০-২১ সেশন এবং ২০২১-২২ সেশনে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে কলেজে ভর্তি হয় তারা। বিজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত এবং রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত। 

কিন্তু ভর্তির দুই বছর পার হলে শিক্ষার্থীরা জানতে পারেন শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজটি বিএমডিসির কর্তৃক অনুমোদন নেন। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটি রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত নয়। মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের ভুয়া ও চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে।

এর ফলে শিক্ষার্থীদের জীবন অনিশ্চয়তার মুখে ফেলেছে কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে সুরাহার জন্য শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান জিল্লার রহমান (সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব) এবং উক্ত প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুজ্জামান স্বাধীনকে জানালে তারা বলে কলেজের অধিভুক্তি ও অনুমোদন রয়েছে।

ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহূর্তের মধ্যে বিনা নোটিশে শিক্ষার্থীদেরকে হোস্টেল থেকে বের করে দেন। এবং বলেন, হোস্টেল ত্যাগ করতে না পারলে তোমাদের জান ও মালের নিরাপত্তা কেউ দেবে না। এ বিষয়ে আমরা চন্দ্রিমা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছি যার তদন্ত চলমান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকা শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলামের বাবা আমিরুল ইসলাম জানান, তিনি একটি স্কুলে শিক্ষকতা করেন। সন্তানের মেডিকেলে পড়াশোনার জন্য তিনি ঋণ করেছেন ৫ লাখ টাকা। সঙ্গে তিনি দুই বিঘা ধানি জমি বিক্রি করেছেন ১২ লাখ টাকায়। এখন তিনি টাকা ও সন্তানের জীবন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। তিনি বলেন, সন্তানকে এখন দেখে রাখতে হয়। শিক্ষাজীবন, টাকা টেনশনে আত্মহত্যা না করে বসে। আমরা সন্তানদের শিক্ষাজীবন নিশ্চিতের দাবি জানাই।

এ বিষয়ে মেডিকেল কলেজের চেয়ারম্যান মো. জিল্লার রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, (সমাজকল্যাণ বিভাগের সাবেক সচিব) বলেন, এক বছর আগে আমি পদত্যাগ করেছি। ভর্তির বিষয়গুলো আমি জানি না। আমি কাউকে ভর্তি করায়নি। কারও কাছ থেকে টাকাও নেয়নি। আমার সঙ্গে এর কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।


সর্বশেষ সংবাদ

×
  • Application Deadline
  • December 17, 2025
  • Admission Test
  • December 19, 2025
APPLY
NOW!
GRADUATE ADMISSION
SPRING 2026!
NORTH SOUTH UNIVERSITY
Center of Excellence