টঙ্গীর তা’মীরুল মিল্লাতে হোস্টেল ফি এক ধাক্কায় ৭০০ টাকা বৃদ্ধি, শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা
তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসা  © টিডিসি ফটো

গাজীপুরের টঙ্গীতে অবস্থিত তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসায় হোস্টেল ফি এক ধাক্কায় ৭০০ টাকা বৃদ্ধি করায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এতদিন হোস্টেলের মাসিক বেতন ছিল ৩ হাজার ৮০০ টাকা, নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৫০০ টাকায়।

রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ফজরের নামাজের পর হোস্টেল সুপার মাওলানা নুরুল হক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে এ ঘোষণা দেন। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ তা’মীরুল মিল্লাত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (টাকসু) প্রতিবাদ জানিয়েছে।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নতুন হোস্টেল সুপার খাবারের মানোন্নয়ন বা সংস্কারের ব্যাপারে উদাসীন থাকলেও আর্থিক বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিচ্ছেন। কয়েকদিন আগে সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন হলেও উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন আসেনি।

প্রায় ১৪ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত এই ক্যাম্পাসে হোস্টেল সংকট দীর্ঘদিনের সমস্যা। আলিম শ্রেণির প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থীর বিপরীতে মাত্র ১৫০ জনকে লিখিত পরীক্ষা ও সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে হোস্টেলে সিট দেওয়া হয়। অথচ আরও এক হাজারের বেশি শিক্ষার্থী আবাসনের জন্য আবেদন করলেও সুযোগ মেলে না।

একাধিক শিক্ষার্থী জানান, মাদ্রাসার বাইরে সাধারণ হোস্টেলেও ৪ হাজার ৫০০ টাকায় থাকা যায়। অথচ প্রতিষ্ঠানটি একই হার নির্ধারণ করে আর্থিকভাবে দুর্বল পরিবার থেকে আসা মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করছে। এতে অনেককে খরচ চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে, শীঘ্রই কমিশন গঠন

কক্সবাজার থেকে আসা এক অভিভাবক বলেন, ‘দেশের সেরা দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এমন আচরণ আশা করিনি। বাইরে থেকে আসা শিক্ষার্থীরা কম টাকায় থাকার আশায় হোস্টেলে ওঠে। কিন্তু এক ধাক্কায় এত টাকা বাড়ানো অত্যন্ত দুঃখজনক।’

এদিকে মাদ্রাসার কয়েকটি ভবনের নির্মাণকাজ এখনো অসম্পূর্ণ। শিক্ষার্থীরা মনে করেন, সরকারি উদ্যোগে বহুতল হোস্টেল নির্মাণ হলে আবাসন সংকট অনেকটাই কমে যাবে।

অভিযোগের বিষয়ে হোস্টেল সুপার মাওলানা নুরুল হক বলেন, ‘আমি নিজে এই সিদ্ধান্ত নিইনি। এটি গভর্নিং বডির এজেন্ডা বাস্তবায়ন মাত্র।’

তবে বর্ধিত ফি’র তীব্র বিরোধিতা করেছে টাকসু। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘বেতন বৃদ্ধি রোধে আমরা প্রিন্সিপালের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছিলাম। তারপরও ফি বাড়ানো হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অমানবিক। সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে আমরা আন্দোলনের পথে নামব।’

সহ-সাধারণ সম্পাদক মঈনুল ইসলাম বলেন, ‘অযৌক্তিক ফি বৃদ্ধি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে রূপ নেবে। শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া কোনো অমানবিক সিদ্ধান্ত কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।’


সর্বশেষ সংবাদ