জাতীয় কবির ১২৩তম জন্মবার্ষিকী আজ, বিদ্রোহী কবিতারও শতবর্ষ
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ২৫ মে ২০২২, ০৮:৪০ AM , আপডেট: ২৫ মে ২০২২, ০৮:৪০ AM
আজ ১১ জ্যৈষ্ঠ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী। বাংলা ১৩০৬ বঙ্গাব্দের এই দিনে ভারতের বর্ধমান জেলার আসানসোলের জামুরিয়া থানার চুরুলিয়া গ্রামে তিনি জন্মেছিলেন। ডাক নাম ‘দুখু মিয়া’। এ বছর পূর্ণ হলো তাঁর কালজয়ী ‘বিদ্রোহী’ কবিতা রচনার শতবর্ষ। সারা দেশে নানা আয়োজনে উদ্যাপিত হচ্ছে ‘নজরুলজয়ন্তী’।
কাজী নজরুল ইসলাম সারা জীবন সমাজের শোষিত-বঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কলম ধরেছেন। তিনি নির্ভিক চিত্তে কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা ও কূপমণ্ডূকতার বিরুদ্ধে রচনা অব্যাহত রেখেছেন, থেকেছেন আপসহীন। লোভ–খ্যাতির কাছে মাথা নত করেননি। কারা নির্যাতনেও বিচ্যুত হননি আদর্শ থেকে।
পিতা কাজী ফকির আহমেদ ছিলেন স্থানীয় মসজিদের ইমাম। মা জাহেদা খাতুন। লেটো দলের বাদক বা রুটির দোকানের শ্রমিক হিসেবেই কেটে গেছে তাঁর শৈশব–কৈশোর। পরে সৈনিক হিসেবে কাজ করেছেন, সাংবাদিকতা করেছেন। এইচএমভি ও কলকাতা বেতারে কাজ করছেন। পথে নেমেছেন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে। শাসকের কোপানলে পড়ে কারারুদ্ধ হয়েছেন।
জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী ও ‘বিদ্রোহী’র শতবর্ষ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কবির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করেবাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাঁর বাণীতে বলেন, সাম্য, মানবতা, প্রেম ও প্রকৃতির কবি কাজী নজরুল ইসলাম। তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মজীবন ও সৃজনশীল কর্ম জাতির অনুপ্রেরণার উৎস। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধে কবির গান ও কবিতা মুক্তিকামী মানুষকে প্রেরণা জুগিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেন, বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে কাজী নজরুল ইসলামের অবদান স্বমহিমায় সমুজ্জ্বল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ছিলেন কবির প্রতি অনুরক্ত। স্বাধীনতা–পরবর্তী পর্যায়ে তাঁরই আগ্রহে কবিকে বাংলাদেশে এনে জাতীয় কবির সম্মানে অধিষ্ঠিত করা হয়। নজরুল যে অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন, শোষণমুক্ত ও শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখতেন, তার প্রতিফলন পাই জাতির পিতার সংগ্রাম ও কর্মে।
আরো পড়ুন: এবার আত্মঘাতী হলেন তরুণ কণ্ঠশিল্পী আতিফ আহমেদ নিলয়
কাজী নজরুল ইসলাম মুলত বিদ্রোহী কিন্তু তাঁর প্রেমিক রুপটিও প্রবাদপ্রতিম। নজরুলের প্রেম, বিয়ে বিচ্ছেদ, গ্রেফতার, সমাবেশ এবং কাব্য ও সংস্কৃতিচর্চার বহু ঘটনার সাক্ষী কুমিল্লা শহর। জেলার দৌলতপুরে সৈয়দা খাতুনকে তিনি ভালোবেসেছিলেন। নাম রেখেছিলেন ‘নার্গিস’। ১৯২১ সালে নির্ধারিত দিনটিতেই তাঁদের বিয়ে ভেঙ্গে যায়। তাকে নিয়ে কবি লেখেন ‘বুলবুলি নিরব নার্গিস বনে’ অথবা ‘আজও মধুরও বাঁশরি বাজে।’
এ শহরেই এখনো কবির অনেক স্মৃতি বহমান। নজরুলের স্ত্রী প্রমীলার বাড়িও এখানে। কুমিল্লার বীরচন্দ্র গণপাঠাগার ও নগর মিলনায়তন প্রাঙ্গণে (টাউন হল) আজ সকাল ১১ টায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি’র সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সিমিন হোসেন (রিমি), বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহার ও কবি পৌত্রী খিলখিল কাজী।
এ ছাড়া ঢাকাসহ জাতীয় কবির স্মৃতি বিজড়িত ময়মনসিংহের ত্রিশাল, কুমিল্লার দৌলতপুর, মানিকগঞ্জের তেওতা, চুয়াডাঙ্গার কার্পাসডাঙ্গা ও চট্টগ্রামে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২৩তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার, বেসরকারি বেতার ও টেলিভিশন চ্যানেলে নানা অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে।